ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

প্রধানমন্ত্রীর সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতির প্রশংসা

অবরোধে সহিংসতার তীব্র নিন্দায় বিদেশী কূটনীতিকরা

প্রকাশিত: ০৪:০১, ২০ জানুয়ারি ২০১৫

অবরোধে সহিংসতার তীব্র নিন্দায় বিদেশী কূটনীতিকরা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বিএনপির ডাকা চলমান অবরোধে সহিংসতার ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন বিদেশী কূটনীতিকরা। একই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতির প্রশংসা করেছেন তাঁরা। বিদেশী কূটনীতিকদের সামনে চলমান অবরোধে বিএনপি সহিংসতার চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। সোমবার বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকদের সঙ্গে এক বৈঠকে সরকারের অবস্থান তুলে ধরা হয়। এছাড়া চলমান রাজনৈতিক সহিংসতায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় কূটনীতিকদের সামনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী সরকারের অবস্থান তুলে ধরেন। এ সময় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, পররাষ্ট্র সচিব এম শহীদুল হক উপস্থিত ছিলেন। সেখানে অস্ট্রেলিয়া, চীন, জাপান, কানাডা, ব্রাজিল, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, উত্তর কোরিয়াসহ বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত, হাইকমিশনার এবং দূতাবাস প্রধানরা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক শেষে পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক সাংবাদিকদের জানান, বিদেশী কূটনীতিকদের সঙ্গে সংলাপসহ নানাবিধ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। তাঁরা দেশের চলমান সহিংসতার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। বিদেশী কূটনীতিকরা বলেছেন, সহিংস কর্মকা- চালিয়ে গণতন্ত্র শক্তিশালী করা যায় না। তবে সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে খুব শীঘ্রই এসব সহিংসতা বন্ধ হবে। তিনি আরও জানান, গত এক বছরে সরকারের সাফল্য ও দেশের বর্তমান পরিস্থিতি বিদেশী কূটনীতিকদের সামনে তুলে ধরা হয়। পররাষ্ট্র সচিব জানান, ইউরোপীয় ইউনিয়ন পার্লামেন্টে বাংলাদেশের অগ্রগতির প্রশংসা ও জামায়াতকে ত্যাগ করার জন্য বিএনপির প্রতি আহ্বান জানিয়ে যে দুটি রেজ্যুলেশন নিয়ে এসেছিল সে দুটির পুনর্ব্যক্ত করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। কূটনীতিকরা সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জিরো টলারেন্স নীতি প্রশংসা করেছেন বলেও জানান শহীদুল হক। তারা বাংলাদেশকে একটি অগ্রগামী দেশ হিসেবেও প্রশংসা করেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, বৈঠকে দেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে সরকারের অবস্থান তুলে ধরেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। তিনি জানান, আন্দোলনের নামে বিএনপি সারাদেশে অরাজকতা সৃষ্টি করছে। সাধারণ মানুষের চলাফেরার অধিকারও বিঘিœত করছে তাঁরা। দেশের অর্থনীতিরও ক্ষতি করছে। এ সময় তিনি বিএনপির সাম্প্রতিক সহিংসতার বিভিন্ন চিত্রও কূটনীতিকদের সামনে তুলে ধরেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিদেশী কূটনীতিকদের জানান, সরকার আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সচেষ্ট রয়েছে। দেশের শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলেও জানান তিনি। সম্প্রতি গণমাধ্যমে আসা বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম জিয়ার সঙ্গে বিজেপি সভাপতি অমিত শাহর টেলিফোন আলাপ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসের বিবৃতি নিয়ে কূটনীতিকরা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে জানতে চাইলে আবুল হাসান মাহমুদ আলী বলেন, বিএনপির পক্ষ থেকে প্রচার করা হয়েছে, সম্প্রতি ভারতীয় জনতা পার্টির সভাপতি অমিত শাহর সঙ্গে টেলিফোনে খালেদা জিয়ার আলাপ হয়েছে। এছাড়া মার্কিন কংগ্রেসম্যানরা বিবৃতি দিয়েছেন বলেও প্রচার চালানো হয়েছে। তবে এই দুটি ঘটনাই পুরোপুরি মিথ্যা। এটা তাদের গোয়েবেলসীয় প্রচার বলেও জানান তিনি। এর আগে গত ১৪ জানুয়ারি ঢাকায় অবস্থানরত ইউরোপীয় দেশভুক্ত কূটনীতিক ও রাষ্ট্রদূতদের নিয়ে বৈঠক করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। অস্ট্রেলিয়া হাইকমিশনারের নিন্দা ॥ চলমান রাজনৈতিক সহিংসতায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন ঢাকায় নিযুক্ত অস্ট্রেলিয়ার হাইকমিশনার গ্রেগ উইলকক। তিনি শান্তিপূর্ণ উপায়ে চলমান রাজনৈতিক সঙ্কট সমাধানের আহ্বানও জানিয়েছেন। সোমবার অস্ট্রেলিয়া হাইকমিশনের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে অস্ট্রেলিয়ার হাইকমিশনার বলেন, সোমবার ও গত কয়েকদিন ধরে বাংলাদেশের চলমান রাজনৈতিক সঙ্কট নিয়ে সরকার ও বিরোধী পক্ষের সঙ্গে আমার আলাপের সুযোগ হয়েছে। বাংলাদেশের চলমান রাজনৈতিক সহিংসতায় অস্ট্রেলিয়ার পক্ষ থেকে আমি তীব্র নিন্দা জানাই। শান্তিপূর্ণভাবে এই সমস্যার সমাধান হওয়া উচিত। গঠনমূলক সংলাপের মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধান হতে পারে। বাংলাদেশের সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ার সম্পর্কের আরও অগ্রগতি হবে বলেও তিনি মনে করেন।
×