ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

৮০তম জন্মজয়ন্তীতে ভালবাসায় সিক্ত মমতাজউদদীন

প্রকাশিত: ০৬:৪৫, ১৯ জানুয়ারি ২০১৫

৮০তম জন্মজয়ন্তীতে ভালবাসায় সিক্ত মমতাজউদদীন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ একসঙ্গে অনেক পরিচয়কে ধারণ করেন অধ্যাপক মমতাজউদদীন আহমদ। মেধাবী এই মানুষটি শিক্ষকের পরিচয়কে ছাপিয়ে গুণী নাট্যকার ও খ্যাতিমান অভিনয়শিল্পী হিসেবে সর্বমহলে সমাদৃত। এক সময় মঞ্চ, টেলিভিশন বা বেতারে তাঁর নির্মিত বা অভিনীত নাটক ছিল নিয়মিত। সেসব নাটক যেন আজও রেখাপাত করে দর্শকের মনের অলিন্দে। জাগিয়ে তোলে ভাল লাগার অনুভূতি। রবিবার ছিল বরেণ্য এই ব্যক্তিত্বের ৮০তম জন্মজয়ন্তী। এ উপলক্ষে শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার মিলনায়তনে শিল্পীকে জানানো হয় জন্মদিনের শুভেচ্ছা ও ভালবাসা। এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে মমতাজউদদীন আহমদ জন্মজয়ন্তী উদ্্যাপন কমিটি। শীতের সন্ধ্যায় জন্মদিন উদ্্যাপনের এ অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। নৃত্য-গীত, আলোচনা, প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনী এবং ফুলেল শুভেচ্ছার মাধ্যমে ৮০তম জন্মদিনে মমতাজউদদীন আহমদকে অভিনন্দিত করে নাট্যজন, নাট্যকর্মী ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনের বিশিষ্টজনরা। অনুষ্ঠানের শুরুতেই শিশুশিল্পীরা ফুলের পাপড়ি ছিটিয়ে জন্মদিনে বরণ করে নেন বরেণ্য এই নাট্যকারকে। বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি আনিসুল হকের সঞ্চালনায় শুরু হয় অনুষ্ঠানের মূল পর্ব। এ পর্বে একে একে মমতাজউদদীন আহমদকে ফুলেল শুভেচ্ছায় সিক্ত করেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর, সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হক, কথাশিল্পী আনোয়ারা সৈয়দ হক, নাট্যজন আতাউর রহমান, সংস্কৃতি সচিব ড. রণজিৎ কুমার বিশ্বাস, অভিনয়শিল্পী ফেরদৌসী মজুমদার, অভিনয়শিল্পী কেরামত মওলা, সাংবাদিক আবেদ খান, শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী, ঝুনা চৌধুরী, নাদের চৌধুরী, শিরীন বকুল, সানজীদা আখতার, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ ও সাধারণ সম্পাদক হাসান আরিফ প্রমুখ। সাংগঠনিকভাবে বরেণ্য এই নাট্যকারকে শুভেচ্ছা নিবেদন করে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশন, থিয়েটার আর্ট ইউনিট, নাগরিক নাট্যসম্প্রদায়, আরণ্যক নাট্যদল, বাংলাদেশ পথনাটক পরিষদ, কেন্দ্রীয় কচি-কাঁচার মেলা, শূন্যন, সচেতন যাত্রা শিল্পী সমাজ, ঢাকা পদাতিক, চারুনীড়ম থিয়েটার, শিশু একাডেমি, কণ্ঠশীলন, লোকনাট্য দল (বনানী), ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বাংলা বিভাগ, নাট্যকেন্দ্র, নাট্যচক্র, প্রাঙ্গণে মোর, লোক নাট্যদল (সিদ্ধেশ্বরী), দেশনাটক, সত্যেন সেন শিল্পী গোষ্ঠী, উদীচী শিল্পী গোষ্ঠী, ঋষিজ শিল্পী গোষ্ঠী, মৈত্রী থিয়েটারসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন। জন্মজয়ন্তী উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক রামেন্দু মজুমদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মমতাজউদদীন আহমদের বর্ণাঢ্য কমর্ময় জীবনের নানা বিষয় তুলে ধরেন সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হক, ফেরদৌসী মজুমদার, আতাউর রহমান, কেরামত মওলা প্রমুখ। শুভেচ্ছা পর্ব শেষে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সঙ্গীত পরিবেশন করেন প্রখ্যাত কণ্ঠশিল্পী ফেরদৌস আরা। চলচ্চিত্রকার চাষী নজরুল ইসলাম স্মরণ ॥ বর্ণাঢ্য কর্মময় জীবনের ওপর স্মৃতিচারণের মধ্য দিয়ে একুশে পদকপ্রাপ্ত সদ্য প্রয়াত বরেণ্য চলচ্চিত্রকার চাষী নজরুল ইসলামকে স্মরণ করল বাংলাদেশ ডিজিটাল ফিল্ম সোসাইটি। রবিবার বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে অনুষ্ঠিত হয় স্মরণের এ আয়োজন। সোসাইটির সভাপতি চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চনের সভাপতিত্বে স্মরণসভায় চাষী নজরুল ইসলামের স্মৃতিচারণ করে বক্তব্য রাখেন চিত্রনায়ক শেখ আবুল কাশেম মিঠুন, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতির (বাচসাস) সহ-সভাপতি লিটন এরশাদ, প্রয়াত মিশুক মুনীরের সহধর্মিণী মঞ্জুলী কাজী, চাষী নজরুল ইসলামের মেয়ে আন্নি ইসলাম। চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, চাষী ভাই একটি রাজনৈতিক দলের আদর্শ অনুসরণ করলেও তিনি ছিলেন মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী। দল একটা মঞ্চ হতে পারে, কিন্তু চেতনা তো কোন মঞ্চের নয়। তিনি সবচেয়ে বেশি চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছেন শরৎচন্দ্রের রচনা নিয়ে। তার চেহারাও শরৎচন্দ্রের মতো। এমন একটা মানুষকে রাজনৈতিক ফ্রেমে বাঁধা যায় না। চাষী নজরুল অসাম্প্রদায়িক চেতনার ছিলেন উল্লেখ করে ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, ব্রিটিশ সময়ের ক্যামেরাম্যান সাধন রায়কে তিনি পিতার মতো দেখতেন। সাধন রায়ের কোন সন্তানাদি ছিল না। মৃত্যুর পর চাষী নজরুল তার মুখাগ্নি করেছিলেন। তার মতো অসাম্প্রদায়িক চেতনার মানুষ খুব কমই দেখা যায়। মঞ্জুলী কাজী বলেন, চাষী ভাই ছিল আমার ছায়া। আমার দুর্যোগকালেও তিনি সব সময় পাশে থেকেছেন। যিনি মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে এত সিনেমা করলেন তার জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে সরকারের কেউ পাশে ছিল না। সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটেরও কেউ আসেনি। আমি প্রশ্ন রাখতে চাই, চাষী ভাই আসলে কার? কোন দলের? বাংলা একাডেমির প্রকাশনা প্রশিক্ষণ কোর্সের সমাপনী ॥ রবিবার বিকেলে বাংলা একাডেমির কবি শামসুর রাহমান সেমিনার কক্ষে বাংলা একাডেমির উদ্যোগে ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি শিক্ষা অধিদফতর কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন স্কিলস ডেভেলপমেন্ট প্রকল্পের অর্থায়নে এবং বাংলাদেশ জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতির সহযোগিতায় পরিচালিত ‘প্রকাশনা প্রশিক্ষণ কোর্স’-এর সমাপনী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী নূরুল ইসলাম নাহিদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন সংস্কৃতি সচিব ড. রণজিৎ কুমার বিশ্বাস এবং শিক্ষা সচিব মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম খান। বাংলাদেশ জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতির পক্ষে বক্তব্য রাখেন সমিতির সভাপতি ওসমান গণি।
×