ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

জাতিসংঘের আহ্বানে নাশকতা কর্মসূচী প্রত্যাহার করুন ॥ আওয়ামী লীগ

প্রকাশিত: ০৫:৪০, ১৮ জানুয়ারি ২০১৫

জাতিসংঘের আহ্বানে নাশকতা কর্মসূচী প্রত্যাহার করুন ॥ আওয়ামী লীগ

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ জাতিসংঘের আহ্বানে সকল প্রকার নাশকতা-সহিংস কর্মসূচী প্রত্যাহারের জন্য বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা-মন্ত্রীরা। দলীয় নেতাকর্মীসহ দেশবাসীকে সজাগ ও সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে তাঁরা বলেন, নিজেকে অবরুদ্ধ রেখে খালেদা জিয়া পোলাও-কোরমা খাচ্ছেন, আর সন্ত্রাসী-গু-াদের লেলিয়ে দিয়ে সাধারণ মানুষকে বোমা খাওয়াচ্ছেন, মানুষকে পুড়িয়ে মারছেন। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে এমন ব্যবস্থা নেয়া হবে যাতে বিএনপি-জামায়াত আন্দোলনের নামও মুখে আনবে না। অবরোধের নামে যত মানুষ হত্যা হয়েছে, প্রত্যেকটি হত্যার বিচার হবে। হত্যাকা-ের নির্দেশদাতা হিসেবেও বিএনপি-জামায়াতের শীর্ষস্থানীয় নেতাদেরও বিচার করা হবে। শনিবার রাজধানীতে পৃথক আলোচনা সভা ও বিক্ষোভ সমাবেশে অংশ নিয়ে আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-নেতারা এসব কথা বলেন। তবে সকল বক্তাই আন্দোলনের নামে বিএনপি-জামায়াতের সহিংসতা কঠোর হস্তে দমনের জন্য সরকারের প্রতি জোর দাবি জানান। আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ বলেছেন, দেশের জনগণ নয়, বিএনপি বিদেশী প্রভুদের ওপর নির্ভরশীল। তাই খালেদা জিয়ার উচিত হবে জাতিসংঘের আহ্বানে সাড়া দিয়ে সকল প্রকার সহিংস কর্মসূচী প্রত্যাহার করা। গরিব মানুষকে আউটসোর্সিং করে বোমা মারা বন্ধ করা। না হলে বাংলার মানুষ অতীতে যেভাবে তাঁকে আঁস্তাকুুড়ে নিক্ষেপ করেছে, ২০১৯ সালের আগামী নির্বাচনেও আঁস্তাকুড়ে নিক্ষেপ করবে। শনিবার বিকেলে বঙ্গবন্ধু এ্যাভিনিউস্থ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগ আয়োজিত এক বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। সংগঠনটির কেন্দ্রীয় চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরীর বাসভবন ও কার্যালয়ে বোমা হামলার প্রতিবাদে এ বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করা হয়। বিএনপির উদ্দেশে হানিফ আরও বলেন, জাতিসংঘের মানবাধিকারের বিবৃতি আপনারা আমলে নিয়ে সকল প্রকার ধ্বংসাত্মক কর্মসূচী প্রত্যাহার করে জাতিকে রেহাই দিন। তাহলে বাংলার মানুষ আপনাদের ক্ষমা করলেও করতে পারে। বোমাবাজদের উদ্দেশে হানিফ বলেন, তোমরা কারো না কারোর ভাই, সন্তান। সামান্য কয়টা টাকার জন্য কেন এসব করছ? ছিনতাইকারী জনগণের হাতে ধরা খেয়ে গণধোলাইয়ে প্রাণ দেয় তোমরা তা দেখ না? খালেদা জিয়া তোমাদের বোমা মারতে পাঠিয়ে তোমাদের জীবন বিপন্ন করছে তুলছে, নিজেরা তা বোঝার চেষ্টা করো। বিএনপিকে উদ্দেশ করে হানিফ আরও বলেন, বিদেশীদের কাছে ধর্ণা দিয়ে লাভ নেই। বাংলার জনগণ যতদিন পর্যন্ত শেখ হাসিনার পাশে আছে ততদিন কোন বিদেশী প্রভু শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করতে পারবে না। এ সময় বিএনপির সিনিয়র ভাইস-চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে বহিষ্কার করে দলকে নষ্ট রাজনীতি থেকে বের করে নিয়ে আসার জন্য বিএনপিকে পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, কংগ্রেসম্যানদের স্বাক্ষর জালিয়াতির জন্য দুই উপদেষ্টাকে বহিষ্কার করা হয়েছে। কিন্তু তাতে লাভ নেই। বিএনপিকে নষ্ট রাজনীতির হাত থেকে রক্ষা করতে হলে তারেক রহমানকে দল থেকে বহিষ্কার করতে হবে। প্রধানমন্ত্রীর সাবেক স্বাস্থ্য উপদেষ্টা ডাঃ সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী বলেন, ২০২৪ সাল পর্যন্ত আপনাদের অপেক্ষা করতে হবে। আপনারা বোমাবাজি করে এখন কিছুই করতে পারবেন না। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাটের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশীদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য শহীদ সেরনিয়াবাত, মাহবুবুর রহমান হিরণ, আমিনুল ইসলাম, আবদুস সাত্তার মাসুদ, মজিবুর রহমান চৌধুরী, ফারুক হোসেন, মহিউদ্দিন আহমেদ মহি। খালেদাকে হত্যার পরিকল্পনা করছে জামায়াত ॥ জামায়াত-জঙ্গীগোষ্ঠী এখন বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে হত্যার পরিকল্পনা করছে বলে জানিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা কলেন। বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা চিকিৎসক পরিষদ এ আলোচনা সভার আয়োজন করে। মন্ত্রী মোজাম্মেল হক বলেন, গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদন অনুযায়ী জামায়াত-জঙ্গীদের প্রথম টার্গেট ছিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আর এখন তারা খালেদা জিয়াকেও হত্যার পরিকল্পনা করছে। এ ধরনের হত্যাকা-ের প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষা করা এবং এর দায় সরকারের ওপর চাপানো। তিনি বলেন, বিএনপি আন্দোলনের নামে সারাদেশে যে নাশকতা চালাচ্ছে সরকার তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে শুরু করেছে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে। আয়োজক সংগঠনের সভাপতি অধ্যাপক ডাঃ সিরাজুল হকের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন বিএমএর সভাপতি অধ্যাপক ডাঃ মাহমুদ হাসান, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব) হেলাল মোর্শেদ খান, বিএমএর প্রতিষ্ঠাতা মহাসচিব ডাঃ মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন প্রমুখ। এক সপ্তাহ পরে বিএনপি আন্দোলনের নাম নেবে না- খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ॥ খাদ্যমন্ত্রী এ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম বলেছেন, এক সপ্তাহ কী দশ দিন পরে বিএনপি আন্দোলনের নামও নিতে পারবে না। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এর জন্য যা যা করার তাই করবে। আপনারা (বিএনপি) মনে করেছেন বিদেশী বন্ধুরা এগিয়ে আসবে। কিন্তু কেউ এগিয়ে আসবে না। রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক আলোচনা সভায় শনিবার দুপুরে তিনি এ কথা বলেন। ‘দেশ ও জনগণের বিরুদ্ধে খালেদা জিয়ার প্রতিহিংসার রাজনীতি, সরকারের করণীয়’ শীর্ষক ওই সভার আয়োজন করে বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট। নাট্যভিনেতা ড. ইনামুল হকের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন পেশাজীবী সমন্বয় পরিষদের নেতা ডাঃ কামরুল হাসান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামান প্রমুখ।
×