ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

বর্ণিল আয়োজনে শিল্পকলায় উদ্বোধন হলো নন্দন মঞ্চ

প্রকাশিত: ০৫:৫১, ১৩ জানুয়ারি ২০১৫

বর্ণিল আয়োজনে শিল্পকলায় উদ্বোধন হলো নন্দন মঞ্চ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সন্ধ্যার আকাশে লাল-নীল আতশবাজি আর নিচে জলবেষ্টিত মঞ্চে বর্ণিল ঝরনাধারা। সেই সঙ্গে অন্তরীক্ষে উড়ে বেড়াল হলদে হয়ে জ্বলে ওঠা ফানুস। সোমবার এমন মনোমুগ্ধকর দৃশ্যের দেখা শিল্পকলা একাডেমী আঙিনায়। আর এমন নান্দনিক দৃশ্যপটের উপলক্ষ ছিল নন্দন মঞ্চের উদ্বোধন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুপরামর্শে একাডেমীর সঙ্গীত ও নৃত্যকলা মিলনায়তনের পার্শ্ববর্তী ডোবাটি এখন পরিণত হলো অনিন্দ্য সুন্দর এক মঞ্চে। দেশে এই প্রথম নির্মিত হলো জলরাশির ওপর নান্দনিক মঞ্চ। সোমবার শীতের সন্ধ্যায় মঞ্চটির উদ্বোধন করা হয়। আর এ উদ্বোধন উপলক্ষে নেয়া হয়েছে তিন দিনের বর্ণিল অনুষ্ঠানমালা। খ্যাতিমান শিল্পীদের একক কণ্ঠের গান, সমবেত সঙ্গীত, সমবেত নৃত্য, নৃত্যালেখ্য, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর নৃত্য পরিবেশনা, সংযাত্রা, কাওয়ালী, ফিউশন যন্ত্র সঙ্গীত ও তালবাদ্যের সমবেত পরিবেশনা দিয়ে সাজানো হয়েছে তিন দিনের রকমারি অনুষ্ঠানসূচী। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের শুরুতেই সুরের আশ্রয়ে শতকণ্ঠে উচ্চারিত হয়Ñ আমার সোনার বাংলায় আমি তোমায় ভালোবাসি...। জাতীয় সঙ্গীতের পরিবেশনা শেষে অতিথিরা মঞ্চের ফলক উন্মোচন করেন। প্রধান অতিথি হিসেবে মঞ্চের উদ্বোধন ঘোষণা করেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জমান নূর। শিল্পকলা একাডেমীর মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকীর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সংস্কৃতি সচিব ড. রণজিৎ কুমার বিশ্বাস। মঞ্চের উদ্বোধন ঘোষণার পরপরই আকাশে ছড়িয়ে পড়ে রঙ্গিলা আতশবাজি আর মঞ্চের চারপাশ থেকে ঝরে পড়ে রঙিন ঝরনাধারা। উদ্বোধনী বক্তব্যে আসাদুজ্জামান নূর বলেন, দেশের মাটিতে অসাধারণ এক মঞ্চের সূচনা হলো। তবে শিল্প ও সংস্কৃতির প্রতি বর্তমান সরকারের আগ্রহ নতুন নয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দেখানো পথ ধরেই তা সহজাতভাবে ধারণ করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, আমাদের আছেন হাজার বছরের ঐতিহ্যময় সংস্কৃতি। আর সংস্কৃতির এই শক্তি দিয়ে রুখতে হবে ধর্মান্ধ ও মৌলবাদী গোষ্ঠীকে। লিয়াকত আলী লাকী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১২ সালে ‘মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক জাতীয় নাট্যোৎসব’ উদ্বোধন করতে এসে একাডেমী মাঠের দক্ষিণ পাশের পরিত্যক্ত পুকুর দেখে এখানে নান্দনিক কিছু করার পরামর্শ দিয়েছিলেন। তাঁর নির্দেশনাতেই নির্মিত হলো এই নন্দন মঞ্চ। ১৯৭৪ সালে বঙ্গবন্ধু প্রতিষ্ঠিত শিল্পকলা একাডেমীকে একটি আন্তর্জাতিক কমপ্লেক্সের পর্যায়ে নিয়ে যেতে চাই। এটি হবে বিশ্বের অন্যতম সাংস্কৃতিক কমপ্লেক্স। উদ্বোধনী আনুষ্ঠানিকতা শেষে দ্বিতীয় পর্বে ছিল বর্ণাঢ্য সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। একাডেমীর প্রশিক্ষণ বিভাগের শিল্পীদের সমবেত ভাইয়াওয়া গানের পরিবেশনা দিয়ে এ সূচনা হয়। এরপর ছিল মৃদঙ্গ, পাখোয়াজ, তবলা ও হারমনিয়ামের সমন্বিত সুরেলা ধ্বনির তালবাদ্য যন্ত্রের উপস্থাপনা। আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টায় শুরু হবে দ্বিতীয় দিনের অনুষ্ঠানমালা। এদিনের আয়োজনে থাকবে একক সঙ্গীত, নৃত্যালেখা, সমবেত সঙ্গীত, একক আবৃত্তি, সঙযাত্রা ও ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী নৃত্য। মাসব্যাপী কারুশিল্প মেলা ও লোকজ উৎসব ॥ বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের আয়োজনে ১৪ জানুয়ারি থেকে শুরু হবে মাসব্যাপী ‘লোক কারুশিল্প মেলা ও লোকজ উৎসব ২০১৫’। বুধবার সকাল ১১টায় সোনারগাঁওয়ের কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের লোকজ মঞ্চে প্রধান অতিথি হিসেবে এ আয়োজনের উদ্বোধন করবেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। আয়োজক প্রতিষ্ঠানের পরিচালক কবি রবীন্দ্র গোপের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি থাকবেন সংসদ সদস্য মোঃ লিয়াকত হোসেন খোকা ও সংস্কৃতি সচিব ড. রণজিৎ কুমার বিশ্বাস। শিল্পকলা একাডেমীর জাতীয় চিত্রশালা মিলনায়তনে সোমবার আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়।
×