ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

জামিন-স্বস্তিতে বিসিবি, রুবেল

প্রকাশিত: ০৫:২৪, ১২ জানুয়ারি ২০১৫

জামিন-স্বস্তিতে বিসিবি, রুবেল

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ অভিনেত্রী নাজনীন আক্তার হ্যাপির করা নারী ও শিশু নির্যাতন মামলায় বৃহস্পতিবার কারাগারে পাঠানো হলো জাতীয় ক্রিকেট দলের পেসার রুবেল হোসেনকে। রবিবারই জামিন দেয়া হলো। এ জামিনে রুবেল যেমন স্বস্তি পেয়েছেন। ঠিক তেমনি বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডও (বিসিবি) স্বস্তি পেয়েছে। বিশ্বকাপ দলে একমাত্র ফিট পেসার রুবেলের থাকা নিয়ে যে শঙ্কা ছিল, অবশেষে তা যে দূর হয়ে গেছে। রুবেলের জামিন হওয়ার পর বিসিবির স্বস্তির বিষয়টি বিসিবির ক্রিকেট অপারেশন্স কমিটির চেয়ারম্যান আকরাম খান নিজেই জানিয়েছেন। রুবেলের জামিন হলো, কতটা স্বস্তিদায়ক? এমন প্রশ্নে সাংবাদিকদের আকরাম খান জানিয়েছেন, ‘অনেকটা। যেহেতু আমরা সবসময়ই ফাস্ট বোলারদের নিয়ে খুবই সমস্যায় থাকি। কারণ, আমাদের ৬০ ভাগ ফাস্ট বোলাররা ইনজুরিতে থাকে। এর মধ্যে যদি ফিট কোন ফাস্ট বোলারকে ধরি তাহলে এক নাম্বার হলো রুবেল। গত ৫-৬ বছর ধরে ওর পারফর্মেন্সও কিন্তু খুবই ভাল। পাওয়ার প্লে’তেও বল করছে। অভিজ্ঞ বোলারও। এটার জন্য বিশেষ করে আমি খুবই খুশি যে ওর একটা সমস্যা হচ্ছিল, টেনশন গঠিত ব্যাপার ছিল, আল্লাহর রহমতে সে আজকে (গতকাল) জামিন পেয়েছে। বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্যও এটা একটা সুখবর। হয়ত বিশ্বকাপ পর্যন্তও ও আর কোন টেনশনে থাকবে না। শতভাগ এ্যাফোর্টটাও দিতে পারবে।’ জামিন দিয়েছে আদালত। অথচ আকরাম কিভাবে এত নিশ্চিতভাবে এখনই ইঙ্গিত দিতে পারছেন রুবেল বিশ্বকাপ খেলবে। তাই প্রশ্নও উঠল। অন্তর্বর্তীকালীন জামিন বলা হচ্ছে। আপনারা কী নিশ্চিত বিশ্বকাপের মধ্যে আর কোন সমস্যা হবে না? জাতীয় দলের সাবেক এ অধিনায়ক বললেন, ‘আমি উকিলের সঙ্গে কথা বলেছি। সে বলেছে আপাতত আগামী তিন মাস পর্যন্ত সে জামিনে থাকবে এবং ক্রিকেট খেলতে পারবে।’ জামিন পাওয়ার পর রুবেলের বিশ্বকাপে থাকা নিয়ে আর কোন সংশয়ই থাকল না। যদি রবিবার জামিন না মিলত তাহলেই রুবেলের বিকল্প ভাবনা এসে পড়ত। বিসিবির সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন শনিবার বলেছিলেনও, ‘যদি রুবেল জামিন পায় তাহলে বোর্ড তার পাশে থাকবে। বিশ্বকাপের দলেও থাকবে।’ আকরামও সেই বিষয়টিই সামনে তুলে ধরলেন, ‘যেহেতু প্রেসিডেন্ট সাহেব বলেছেন রুবেল যদি জামিন পেয়ে যায় বিশ্বকাপে খেলার সম্ভাবনা বেশি। এখন তো আর সেই সমস্যাটা হচ্ছে না। যেহেতু সে জামিন পেয়েছে। ওর খেলার সম্ভাবনাই বেশি।’ রুবেলের এমন কা-ে এখন সবাই সতর্ক। এ পথে পা দেয়ার আগে হাজারবার ভাববে সবাই। কিন্তু বিসিবির কী কিছু করণীয় নেই? আকরাম বললেন, ‘কোড অব কন্ডাক্টের চেয়ে আমি মনে করি মানুষের প্রতিটা ভুল থেকে শিক্ষা নেয়া উচিত। সবাইকেই সবকিছু করে করানো যায় না। নিজের চিন্তা ভাবনা থাকা উচিত। এই ধরনের যে সমস্যাগুলো খেলোয়াড়রা যে মোকাবেলা করছে, নিজেদেরই কিন্তু দায়িত্ব বেঁচে থাকা। আমি নিশ্চিত এ একটা বাজে অভিজ্ঞতা থেকে সবাই শিক্ষা নেবে। এখান থেকে বেঁচেও থাকবে। আমরা বোর্ড মিটিংয়েও আলাপ আলোচনা করব, আমরা প্রত্যেক খেলোয়াড়ের ব্যক্তিগত জীবনেও যেন ক্ষতি না হয়, দেশেরও ক্ষতি না হয়; এ নিয়ে চিন্তা ভাবনা করব।’ কথা উঠল, দলের জন্য যেমন মনস্তত্ত্ববিদ আনা হয়েছে; এমন ঘটনার জন্যও কী মনস্তত্ত্ববিদের শরণাপন্ন হওয়া যায় না? আকরাম সেই আগের কথা বললেন, ‘আমরা চিন্তা ভাবনা করব। তারপরও আমি একটা কথা বলতে চাই যে প্রত্যেক মানুষের জানা উচিত কোনটা খারাপ, কোনটা ভাল। বর্তমানে বাংলাদেশ ক্রিকেটাররা সেলিব্রেটি। এক্সপোজারও বেশি। ভাল-খারাপ দুইদিকেই চিন্তা ভাবনা করা উচিত। প্রতিটি পদক্ষেপই সাবধানে নেয়া উচিত।’ শুধু রুবেলই নয়, জাতীয় দলের আরও কয়েকজন ক্রিকেটারের নামও অভিযোগ তালিকায় উঠে এসেছে। বোর্ড থেকে কী আসল বিষয়টি জানার কোন চেষ্টা করা হবে? আকরাম বোর্ডকে অনুরোধ করার কথাই জানালেন, ‘ব্যক্তিগতভাবে আমি এটা বোর্ডকে অনুরোধ করব যে এসব ব্যাপারে যেন একটু আলাপ-আলোচনা করে। কঠিন সময় যেটা যাচ্ছে এখন সেটা যেন শেষ করা যায়। ভবিষ্যতে যদি খেলোয়াড়দের এ রকম দোষ ধরা যায়, বোর্ড থেকে যেন ভালভাবে এ্যাকশন নেয়া যায়।’ তবে সবশেষে আকরাম যেন এমন ঘটনার মীমাংসা দ্রুতই হয়ে যাওয়া উচিত বলেই মনে করছেন, ‘এটার একটা মীমাংসা হওয়া উচিত। দ্রুতই মীমাংসা করে ফেললে ভাল।’ মীমাংসা হবে কিনা তা সময়ই বলবে, তবে রুবেলের জামিনে এ মুহূর্তে যেমন রুবেল নিজে স্বস্তিতে আছেন। আজ অনুশীলন ক্যাম্পেও যোগ দেয়ার কথা। তেমনি বিসিবিও স্বস্তি পেয়েছে।
×