ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সেরার মুকুট পরতে এবারও ফেবারিট রোনাল্ডো

প্রকাশিত: ০৫:২৩, ১২ জানুয়ারি ২০১৫

সেরার মুকুট পরতে এবারও ফেবারিট রোনাল্ডো

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো ও লিওনেল মেসির একচ্ছত্র আধিপত্যের অবসান হবে, না আবারও এ দু’জনের কেউ বাজিমাত করবেন? ২০১৪ সালের ফিফা ব্যালন ডি’অরের জন্য ফিফা সংক্ষিপ্ত তালিকা প্রকাশের পর এমন গুঞ্জনের শুরু ফুটবলবিশ্বে। অবশেষে গুঞ্জনের অবসান হতে যাচ্ছে। কেননা আজ বাংলাদেশ সময় মধ্যরাতে সুইজারল্যান্ডের জুরিখে জমকালো আয়োজনে ঘোষিত হতে যাচ্ছে এবারের ফিফা ব্যালন ডি’অর বিজয়ীর নাম। ফিফা ও ফ্রান্স ফুটবল কর্তৃক ঘোষিত তিনজনের সংক্ষিপ্ত তালিকায় মেসি, রোনাল্ডো ছাড়াও আছেন জার্মানির বিশ্বকাপজয়ী গোলরক্ষক ম্যানুয়েল নিউয়ের। মুকুট ধরে রাখবেন রোনাল্ডো না মেসি পুনরুদ্ধার করবেন শ্রেষ্ঠত্ব? অথবা এই দুই তারকার একচ্ছত্র আধিপত্যের অবসান ঘটিয়ে বাজিমাত করবেন নিউয়ের। শেষ মুহূর্তে এ নিয়ে চলছে জোর আলোচনা-পর্যালোচনা। গত অক্টোবরের শেষ ভাগে ফিফা ব্যালন ডি’অরের জন্য ২৩ জনের তালিকা প্রকাশ করে। এই তালিকা থেকে সংক্ষিপ্ত তিন জনের নাম ঘোষণা করা হয় গত বছরের ১ ডিসেম্বর। আর আজ ২০১৫ সালের ১২ জানুয়ারি জুরিখে বর্ষসেরা খেলোয়াড়ের নাম ঘোষণা করা হবে। অবাক করা বিষয় হচ্ছে, গত ছয়টি (২০০৮ থেকে ২০১৩) ফিফা সেরা ফুটবালারের পুরস্কার ভাগাভাগি করে নিয়েছেন মেসি ও রোনাল্ডো। ২০০৮ সালে রোনাল্ডো ফিফা সেরা হওয়ার পর ২০০৯ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত চারবার এই এ্যাওয়ার্ড জেতেন মেসি। ২০১৩ সালে আবারও শ্রেষ্ঠত্ব পুনরুদ্ধার করেন সি আর সেভেন। বর্তমান ব্যালন ডি’অর জয়ী রোনাল্ডো এবারও এই পুরস্কারের জন্য টপ ফেবারিট। অনেকেই মনে করছেন, আজ রাতে আবারও শ্রেষ্ঠত্বের ট্রফি উঠবে রোনাল্ডোর হাতে। ধারণা করা হচ্ছে, শ্রেষ্ঠত্বের এই মিশনে এবার মেসির সঙ্গে নয় রোনাল্ডোকে লড়তে হবে বিশ্বকাপজয়ী জার্মান ফুটবলার নিউয়েরের সঙ্গে! ২৯ বছর বয়সী রিয়াল মাদ্রিদ ফরোয়ার্ড রোনাল্ডো গেল বছর প্রদর্শন করেন তুখোড় পারফর্মেন্স। ব্রাজিল বিশ্বকাপে তেমন ভাল করতে না পারলেও ক্লাব দল রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে নিয়মিত আলো ছড়িয়েছেন। গ্যালাক্টিকোদের চ্যাম্পিয়ন্স লীগের দশম শিরোপা জিততে রাখেন অগ্রণী ভূমিকা। করেন রেকর্ড ১৭ গোল। চলমান মৌসুমেও আছেন দারুণ ছন্দে। ২০০৯ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত রেকর্ড টানা চারবারের বর্ষসেরা মেসি গত মৌসুমে ক্লাব ফুটবলে কোন শিরোপা জিততে পারেননি। তবে ব্রাজিল বিশ্বকাপে নিজ দেশ আর্জেন্টিনাকে ফাইনালে তুলতে রাখেন অনবদ্য ভূমিকা। ফাইনালে জার্মানির কাছে হারলেও টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড় হন তিনি। পঞ্চমবারের মতো সেরার তকমা জয়ের দৌড়ে তাই ভালমতোই আছেন আর্জেন্টাইন অধিনায়ক। গত ছয় বছর ধরেই ফিফা সেরার পুরস্কার জিতেছেন মেসি নয়ত রোনাল্ডো। এবারও এ দু’জন আছেন ফেবারিটের তালিকায়। তবে সময়ের দুই সেরা তারকার একচ্ছত্র আধিপত্য ভাঙ্গতে তিনজনের তালিকায় আছেন ম্যানুয়েল নিউয়ের। গত মৌসুমে ক্লাব বেয়ার্ন মিউনিখকে জার্মানির শীর্ষ লীগ বুন্দেসলিগার শিরোপা জেতাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন তারকা এই গোলরক্ষক। ব্রাজিল বিশ্বকাপে তার পারফর্মেন্স ছিল আরও অসাধারণ। গোলপোস্টের নিচে দারুণ নৈপুণ্য প্রদর্শন করে জিতে নেন টুর্নামেন্টের সেরা গোলরক্ষকের পুরস্কার। এবার তিনজনের তালিকায় প্রথমবারের মতো জায়গা করে নিয়েছেন নিউয়ের। এর আগে ১৯৬৩ সালে বিশ্বসেরা গোলকিপার হয়েছিলেন সাবেক সোভিয়েত ইউনিউনের গোলকিপার লেভ ইয়াসিন। এবার দ্বিতীয় গোলরক্ষক হিসেবে ফিফা সেরা হওয়ার হাতছানি জার্মান গোলরক্ষকের। অবাক করা বিষয় হচ্ছে, এবার নিয়ে টানা আটবার তিনজনের চূড়ান্ত তালিকায় আছেন মেসি। এর মধ্যে গত সাতবারের মধ্যে চারবারই সেরা হন তিনি। এবার পঞ্চমবার সেরা হওয়ার সুযোগ বার্সা ডায়মন্ডের। আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমের খবর অনুযায়ী এবারও বাজিমাত করতে যাচ্ছেন রোনাল্ডো। যার প্রমাণ মিলছে সি আর সেভেন বান্ধবী ইরিনা শায়াককে নিয়ে জুরিখ যাচ্ছেন। শুধু তাই নয়, স্প্যানিশ এক পত্রিকার খবরে বলা হয়েছে, জুরিখে রোনাল্ডোর সঙ্গে থাকবেন তার পরিবারের সদস্যরাও। এছাড়া পর্তুগীজ এই তারকার সঙ্গে আরও থাকবেন রিয়াল মাদ্রিদের কয়েকজন সদস্য। ব্যালন ডি’অর গালায় না থাকার ঘোষণা দিয়েছেন বার্সিলোনার প্রেসিডেন্ট জোসেপ বার্টোমেউ। ফিফার বর্ষসেরা কোচের লড়াইয়ে আছেন জার্মানির বিশ্বকাপজয়ী কোচ জোয়াকিম লো, রিয়াল মাদ্রিদকে চ্যাম্পিয়ন্স লীগ জেতানো কার্লো আনচেলত্তি ও এ্যাটলেটিকো মাদ্রিদকে দেড় যুগ পর স্প্যানিশ লা লিগার শিরোপা জেতানো দিয়াগো সিমিওনে। বর্ষসেরা গোলের দৌড়ে বিশ্বকাপে গোল্ডেন বুট জয়ী জেমস রড্রিগুয়েজের সঙ্গে লড়াই করবেন হল্যান্ডের রবিন ভ্যান পার্সি ও আয়ারল্যান্ডের নারী ফুটবলার স্টেফানি রোচে। ব্যালন ডি’অরের প্রবর্তন ১৯৫৬ সাল থেকে। ২০০৯ সাল পর্যন্ত এ পুরস্কার দেয়া হয়। আর ফিফা বর্ষসেরা পুরস্কারের প্রবর্তন ১৯৯১ সাল থেকে। ২০১০ সাল থেকে এ দুটি পুরস্কারকে একীভূত করা হয়। যার নাম দেয়া হয়েছে ফিফা ব্যালন ডি’অর। ২০০৯ সালে সর্বশেষ ব্যালন ডি’অর জয় করেন মেসি। ওই বছর ফিফা বর্ষসেরাও হন বার্সিলোনা ডায়মন্ড। ২০১০ সাল থেকে প্রচলিত ফিফা ব্যালন ডি’অরের এবার পঞ্চম পালা।
×