ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

ক্রিস গেইলের দানবীয় ফেরা

প্রকাশিত: ০৫:৪৯, ১১ জানুয়ারি ২০১৫

ক্রিস গেইলের দানবীয় ফেরা

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ক্রিকেটপ্রেমীদের জন্য দারুণ খবর। হ্যামস্ট্রিং ইনজুরি, পিঠের ব্যথা, পায়ের মাংসপেশির টান, সঙ্গে কিছুটা মানসিক চাপ সব ঝেড়েঝুড়ে স্বরূপে ফিরেছেন ক্রিস গেইল! একেবারে গেইলিয় স্টাইলে, ৩১ বলে ৫ চার ও ৮ ছক্কায় ৭৭ রানের ড্যাশিং ইনিংস খেলে শুক্রবার দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে প্রথম টি২০তে দলকে ৪ উইকেটের চমৎকার জয় এনে দিয়েছেন তিনি। বিশ্বকাপের ঠিক আগ মুহূর্তে জ্যামাইকান টর্নোডের এই ধুন্ধুমার প্রত্যাবর্তন দারুণ খবর নয়ত কী? কেপটাউনে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৪ উইকেটে ১৬৫ রানের চ্যালেঞ্জিং স্কোর গড়ে স্বাগতিকরা। তবে গেইল-ঝড়ে প্রোটিয়াদের সেই চ্যালেঞ্জ আর চ্যালেঞ্জ থাকেনি! ক্যারিয়ারের দ্রুততম হাফ সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে ম্যাচের অবধারিত নায়কও তিনি। জোহানেসবার্গে তিন ম্যাচ সিরিজের দ্বিতীয় টি২০ আজ। গেইল থাকবে আর অবিশ্বাস্য কিছু হবে না, তা কি হয়! ঘরের মাটিতে ১৬৫ রানের চ্যালেঞ্জ গড়ে কিছুটা খোশ মেজাজে ছিলেন স্বাগতিক অধিনায়ক ফ্যাফ ডুপ্লেসিস। ভেবেছিলেন টেস্ট সিরিজে খড়কুটোর মতো উড়ে যাওয়া ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে জয়টা সময়ের ব্যাপার। কিন্তু সব সমীকরণ পাল্টে দেন এক গেইল। আধুনিক ক্রিকেটের সেরা বিনোদনদায়ী খেললেন দুরন্ত ইনিংস। ডোয়াইন স্মিথকে নিয়ে স্রেফ ৬ ওভারে ৭৮ রানের ওপেনিং জুটিতেই ম্যাচের ভাগ্য তৈরি করে দেন ৩৫ বছর বয়সী জ্যামাইকান-ঝড়। ৪, ৪, ৬, ৪ ও ৪Ñ পেসার ওয়াইন পারনেলের করা ইনিংসের ষষ্ঠ ওভারে ৩০ রান তুলে নিয়ে হাফ সেঞ্চুর পূর্ণ করেন গেইল! ক্যারিয়ারের দ্রুততম হাফ সেঞ্চুরি তুলে নিতে ১৭টি ডেলিভারিই যথেষ্ট মনে করেন ষা-ামার্কা চেহারার দুর্বার উইলোবাজ। ৫টি করে চার ও ছক্কা! শেষ পর্যন্ত ৩১ বলে ৫ চার ও ৮ ছক্কায় ৭৭ রান করে স্পিনার ইমরান তাহিরের শিকারে পরিণত হয়ে যখন সাজঘরে ফেরেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ তখন অনেকটাই জয়ের দোড়গোড়ায়। যদিও ২০তম ওভারের দ্বিতীয় বল পর্যন্ত খেলে ৬ উইকেট হারাতে হয় ড্যারেন সামিদের! ইনিংসের দ্বিতীয় ও নিজের প্রথম ওভারেই তরুণ পেসার ক্যাগিসো রাবাদা গ্রেট গেইলের উইকেট পাওয়ার জন্য ছিলেন মরিয়া। ফিল্ডারদের বদ্যনাতায় দুটি সুযোগ হারালেও শেষ দুই বলে ছক্কা খেতে হয় ১৯ বছর বয়সী পেসারকে। বিষয়টি স্মরণ করে গেইল বলেন, ‘ও আসলেই আমাকে আউট করতে চেয়েছিল। যাতে ক্যাচ তুলে দেই সে জন্য বোলিংয়ে ভেরিয়েশন আনছিল, কিন্তু ওভারের শেষ দুটি ডেলিভারিতে লেন্থ ঠিক রাখতে পারেনি, তারই সুযোগ নিয়েছি আমি! এই ক্ষেত্রে কী করণীয় সেটি আমি ভাল করেই জানতাম।’ ম্যাচ শেষে প্রতিপক্ষ অধিনায়ক ফ্যাফ ডুপ্লেসিসও কৃতিত্বটা দিয়েছেন গেইলকে। ‘আসরে আজকের দিনটা ছিল কেবলই ক্রিস গেইলের। বল ব্যাটে আসলে সে কী করতে পারে সেটি আরও একবার দেখিয়েছে। আমি মনে করি আমার বোলারদের জন্য এটি ছিল শিক্ষণীয়, যে শিক্ষাটা তারা পরের ম্যাচে কাজে লাগাতে পারবে! মোট কথা, আপনি যদি গেইলকে ক্রিজে থাকার সুযোগ দেন, তবে সে আপনার হৃদয়কে বিদ্ধ করবেই।’ হ্যামস্ট্রিংয়ে পাশাপাশি পিঠের পুরনো ব্যাথা মাথাচাড়া দিয়ে ওঠায় গত সেপ্টেম্বরে নিজ মাঠে বাংলাদেশের বিপক্ষে সব ম্যাচে খেলতে পারেননি। বহুল আলোচিত ভারত সফরের প্রথম ওয়ানডেতে রান নিতে গিয়ে পায়ের মাংসপেশির চোটে পড়া গেইলের প্রত্যাবর্তনটা হলো রাজকীয়-নিজের মতো।
×