ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

জন্মদিনে সুরের সংযোগে ৭১টি রেখাচিত্র আঁকলেন কালীদাস

প্রকাশিত: ০৫:৩২, ১১ জানুয়ারি ২০১৫

জন্মদিনে সুরের সংযোগে ৭১টি রেখাচিত্র আঁকলেন কালীদাস

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বাংলা ও বাঙালীর জীবনে চিরস্মরণীয় সংখ্যা একাত্তর। গৌরবগাথায় মিশে আছে পরাধীনতা থেকে মুক্তির সেই স্মারক সালটি। তাই একাত্তর মানেই এগিয়ে চলার প্রেরণা কিংবা জীবন তৃষ্ণার নিত্য-নব উত্তরণ। আর সত্তরতম জন্মবার্ষিকী পাড়ি দিয়ে শনিবার একাত্তরে পা দিলেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন শিল্পী কালীদাস কর্মকার। সেই জন্মদিনটি উদ্্যাপিত হলো বিশেষ মহিমায়। জন্মের শুভ দিনটিতে সুরের সহযোগে বরেণ্য এ চিত্রশিল্পী ৭১ মিনিটে আঁকলেন ৭১টি রেখাচিত্র। শুধু নিজের জন্মদিন উদ্্যাপন নয়, দেশী বাদ্যযন্ত্রানুসঙ্গে একাত্তরটি চিত্রকর্ম সৃজনের মাধ্যমে জাতির বীরত্বময় অর্জনের প্রতি জানানো হয় সম্মান। পাললিক রেখা শীর্ষক এ আয়োজনে সুরের মূর্ছনার সঙ্গে তাল মিলিয়ে রেখার গতিময়তায় আলোড়িত হলেন শিল্পী। আর অবাক চোখে মুগ্ধ মননে ভিন্ন অভিজ্ঞতা নিয়ে তা অবলোকন করলেন দর্শকরা। যন্ত্রসঙ্গীতের সুরে সুরে কখনও তুলিতে, কখনও মোটা ব্রাশে আবার কখনও ডান হাতের পাঁচটি আঙুলকে তুলি বানিয়ে অনন্য শৈলীতে শিল্প সৃষ্টি করেন শিল্পী। আর সঙ্গীতের ছন্দোময়তায় ক্যানভাসে রেখাগুলো বারবার বাঁক নিয়ে রূপ নিয়েছে অবয়বে। তবে অধিকাংশ রেখাই পূর্ণতা পেয়েছে মানুষের মুখাবয়বের নানা আকৃতি নিয়ে। মানব-মানবীর পাশাপাশি কিছু রেখাচিত্রে উপস্থাপিত হয়েছে ছন্দোবদ্ধ বিন্যাস বা পাখির অবয়ব অথবা শিল্পীর প্রিয় আধ্যাত্মিক কোন বিষয়। শনিবার শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালা মিলনায়তনে শিল্পী কালীদাস কর্মকারের জন্মদিন উপলক্ষে ‘পাললিক রেখা’ নামে যুগলবন্দী অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি। শনিবার বিকেলে দেশী বাদ্যযন্ত্রের সুরের সঙ্গে শিল্পী কালীদাস কর্মকার ৭১ মিনিটে ৭১টি রেখাচিত্র অঙ্কন করেন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বরেণ্য শিল্পী সমরজিৎ রায় চৌধুরী, দৈনিক ইত্তেফাকের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক তাসমিমা হোসেন, ফরাসী রাষ্ট্রদূত সোফি ওবের, লেখক হাসনাত আব্দুল হাই, ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের ডিন শিল্পী নিসার হোসেন ও সাবেক রাষ্ট্রদূত ফারুক সোবহান। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন একাডেমির চারুকলা বিভাগের পরিচালক মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন। এ বিশেষ আয়োজন প্রসঙ্গে কালীদাস কর্মকার বলেন, আমার জীবনের সঙ্গে ৭১ শব্দটি অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। আমার কাছে ১৯৭১ হচ্ছে প্রেরণার উৎস। আমি ফ্রান্সে যে গ্যালারিতে কাজ করেছি সেটার নাম ছিল আঁতিলিয়র ১৭, উল্টো করলে দাঁড়ায় ৭১। সে জন্য ঢাকায় এসে আমি গ্যালারি করি আঁতিলিয়র ৭১ নামে। আমার ৭১ বছরে পা দেয়া উপলক্ষে এই ৭১টি ছবি আঁকাও তাই আমার জন্য স্মরণীয় মুহূর্ত। সমরজিৎ রায় চৌধুরী বলেন, কালীদাস ছাত্র অবস্থায় বুঝিয়ে দিয়েছিল সে দেশের জন্য সম্মান বয়ে আনবে, সেটা সত্যি হয়েছে। তাঁর প্রতি সৃষ্টিকর্মের থাকে মেধার সঙ্গে যতেœর ছাপ। আর তাই চলমান এ প্রদর্শনীর কিছু কাজ দেখে অবাক হয়েছি । তাসমিমা হোসেন বলেন, শক্তিশালী এক শিল্পী কালীদাস কর্মকার। অসামান্য গুণী। নানা মাধ্যমে কাজ করেন। ৫৫টি দেশে প্রদর্শনী করে বাংলাদেশকে, আমাদের সংস্কৃতিকে তুলে ধরেছেন বিশে^। বাংলাদেশের সত্যিকারের দূত তিনি। বীরেন সোমের প্রদর্শনীর সময় বাড়ল ॥ ধানম-ির ৩০ নম্বরে গ্যালারি শিল্পাঙ্গনে শিল্পী বীরেন সোমের পানাম নগরীকে নিয়ে ‘স্মৃতির অভিসার’ শীর্ষক প্রদর্শনীর সময় বাড়ানো হয়েছে। ১৬ জানুয়ারি পর্যন্ত চলবে এ প্রদর্শনী। শিল্পাঙ্গনের পরিচালক রুমী নোমান বলেন, দর্শকদের অনুরোধে এ সময় বৃদ্ধি করা হয়েছে। প্রতিদিন ১২টা থেকে ৮টা পর্যন্ত খোলা থাকবে এ প্রদর্শনী।
×