ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

এ্যাটলেটিকোর কাছে ফের হার রিয়াল মাদ্রিদের

প্রকাশিত: ০৬:১৯, ৯ জানুয়ারি ২০১৫

এ্যাটলেটিকোর কাছে ফের হার রিয়াল মাদ্রিদের

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ হারের চক্রেই আছে রিয়াল মাদ্রিদ। টানা ২২ ম্যাচ জিতে রেকর্ড গড়া দলটি টানা তৃতীয় হারের স্বাদ পেয়েছে। শুরু হয়েছিল গেল বছরের শেষ সপ্তাহের শেষ ম্যাচে এসি মিলানের কাছে ৪-২ গোলে হার দিয়ে। এরপর নতুন বছর ২০১৫ সালও শুরু হয় পরাজয় দিয়ে। স্প্যানিশ লা লিগায় ভ্যালেন্সিয়ার মাঠে ২-১ গোলে হার মানে ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নরা। এবার স্প্যানিশ কোপা ডেল রে ফুটবলেও নগর প্রতিদ্বন্দ্বী এ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের কাছে ২-০ গোলে হেরেছে রিয়াল মাদ্রিদ। বুধবার রাতে ভিসেন্টে ক্যালডেরনে অনুষ্ঠিত আসরের শেষ ষোলোর প্রথম লেগের ম্যাচ জিতে কোয়ার্টার ফাইনালের পথে একধাপ এগিয়ে থাকল এ্যাটলেটিকো। আরেকবার রিয়ালকে হারানোর ম্যাচে স্বাগতিকদের হয়ে গোল দুটি করেন রাউল গার্সিয়া ও জোশে গিমিনেজ। আগামী ১৫ জানুয়ারি সান্টিয়াগো বার্নাব্যুতে দু’দলের দ্বিতীয় লেগের ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে। ওই ম্যাচের ফলাফলের পর ভাগ্যনির্ধারণ হবে কারা শেষ আটের টিকেট পাবে। প্রতিশোধ নেয়ার লক্ষ্যেই মাঠে নেমেছিল রিয়াল। উল্টো হারে আরেকবার বিধ্বস্ত হতে হয়েছে কার্লো আনচেলত্তির দলকে। গত সেপ্টেম্বরে লা লিগায় দিয়াগো সিমিওনের দলের কাছে ২-১ গোলে হেরেছিল রিয়াল। ইতালিয়ান ক্লাব এসি মিলান থেকে ধারে খেলতে আসা স্প্যানিশ তারকা ফার্নান্ডো টোরেসকে নিয়েই প্রথম একাদশ সাজান এ্যাটলেটিকো কোচ। অন্যদিকে, সুপারস্টার ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোকে ছাড়া খেলতে নামে রিয়াল। এর ফলে লিওনেল মেসির মতো সি আর সেভেনেরও জায়গা হলো সাইডবেঞ্চে। দলের সেরা তারকা না থাকলেও শুরুতে প্রতিপক্ষের রক্ষণে চাপ বাড়াতে কোন সমস্যা হয়নি রিয়ালের। তৃতীয় মিনিটে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগও পেয়ে যায় বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। কিন্তু সার্জিও রামোসের হেড কোনমতে এক হাত দিয়ে ফিরিয়ে দেন স্বাগতিক গোলরক্ষক। ১৩ মিনিটে ওয়েলস তারকা গ্যারেথ বেল হেড করে বল জালে জড়ালেও অফসাইডের কারণে বাতির করা হয়। এরপর ধীরে ধীরে ম্যাচের চিত্র পাল্টাতে থাকে। বল দখলে রিয়াল এগিয়ে থাকলেও সুযোগ সন্ধানী এ্যাটলেটিকো প্রভাব বিস্তার করতে শুরু করে। বিরতির পর ৫৮ মিনিটে এগিয়ে যায় স্বাগতিকরা। ডি বক্সের মধ্যে রামোস প্রতিপক্ষের রাউল গার্সিয়াকে টেনে ফেলে দিলে পেনাল্টি দেন রেফারি। স্পট কিক থেকে গার্সিয়া নিজেই বল জালে জড়ান। এর সাত মিনিট পর রিয়াল কোচ কার্লো আনচেলত্তি জেমস রড্রিগুয়েজের বদলে রোনাল্ডোকে মাঠে নামান। দুইবারের বর্ষসেরার উপস্থিতিতে অতিথিদের আক্রমণের ধার কিছুটা বাড়লেও গোলের দেখা মেলেনি। উল্টো ম্যাচের ৭৭ মিনিটে অসাধারণ এক হেডে ব্যবধান দ্বিগুণ করে জয় নিশ্চিত করে ফেলেন জোশে গিমিনেজ। উরুগুয়ের এই ডিফেন্ডারের হেড রুখতে ডান দিকে ঝাঁপিয়ে পড়েও দলকে বাঁচাতে পারেননি গোলরক্ষক কেইলর নাভাস। টানা হারের পর কিছুটা যেন হতবিহ্বল রিয়াল কোচ আনচেলত্তি। ম্যাচ শেষে তাঁর কথাবার্তাও কেমন যেন এলোমেলো। ইতালিয়ান এই কোচ বলেন, আমরা সুযোগ পেয়েছিলাম কিন্তু কাজে লাগাতে পারিনি। ভুলে গেলে চলবে না এ্যাটলেটিকো তাদের ঘরের মাঠে খেলেছে। এখানে অনেক ব্যাপারই আমাদের পক্ষে যায়নি। কিছুটা সুবিধা নিয়ে তো তারা খেলেছেই। রিয়াল কোচ আরও বলেন, পরের পর্বে ফল নিজেদের পক্ষে নেয়ার আপ্রাণ চেষ্টা করব। প্রিয় শিষ্য রোনাল্ডোকে সাইডলাইনে রাখা প্রসঙ্গে আনচেলত্তি বলেন, ক্রিশ্চিয়ানো কিছুটা ক্লান্ত ছিল। আর ম্যাচের আগে সে খারাপ অনুভব করছিল। তাই তাকে শুরুর একাদশে রাখা হয়নি। তিনি আরও বলেন, আমাদের খেলায় বেশ ত্রুটি ছিল। তবে দলের গত দুই ম্যাচের খেলায় আমি খুশি না। আমাদের আবার জয়ের ধারায় ফিরতে হবে। এ্যাটলেটিকো কোচ দিয়াগো সিমিওনে ম্যাচ শেষে বলেন, আমরা এমন একটি দলকে হারিয়েছি যারা দুর্দান্ত, যাদের দায়িত্বে আছেন একজন অসাধারণ কোচ। মৌসুমে রিয়ালের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় জয় তুলে নিলেও ইউরোপ সেরাদের যথেষ্ট সম্মানই করছেন আর্জেন্টাইন কোচ। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, রিয়াল মাদ্রিদ বিশ্বের অন্যতম সেরা দল। এই দলটিকে আমি অসম্ভব শ্রদ্ধা করি। যেকোনো কিছুই রিয়াল পরের পর্বে ঘটিয়ে দিতে পারে। লড়াই এখনও অনেক বাকি। ফার্নান্ডো টোরেস ১৭ বছর বয়সে ভিসেন্টে ক্যালডেরনে নিজের ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন। আর চলতি জানুয়ারিতে এসি মিলান থেকে ধারের মাধ্যমে আবারও লা রোজিবাঙ্কসে যোগ দিয়েছেন। ফিরেই প্রথম ম্যাচে জয়ের স্বাদ পেয়েছেন তিনি। ম্যাচ শেষে উচ্ছ্বসিত টোরেস বলেন, আমরা খুব খুশি। কারণ দলের খেলা, ফলাফল ও সঙ্গবদ্ধতা ছিল অসাধারণ। আর এই দিনটি আমরা উদযাপন করতে চাই। এ জয় আমাকে দারুণ স্বাদ দিয়েছে। আর বিশ্বের সেরা কোন দলের বিরুদ্ধে জয় পাওয়াটা অন্য রকম ব্যাপার।
×