ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

এজতেমার মুসল্লিদেরও বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখাল বিএনপি

প্রকাশিত: ০৫:৪৬, ৯ জানুয়ারি ২০১৫

এজতেমার মুসল্লিদেরও বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখাল বিএনপি

মোয়াজ্জেমুল হক ॥ নতুন বছরের ঊষালগ্নে নব উদ্যোমে দেশ যখন এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয়ে উদ্দীপ্ত তখন গত ৬ জানুয়ারি থেকে ২০ দলের ডাকা টানা অবরোধের কবলে পড়ে অবরুদ্ধ সাধারণ মানুষের মাঝে সৃষ্টি হয়েছে বোবা কান্না। জনপ্রিয়তার ব্যারোমিটার যাচাই করতে গিয়ে সাধারণ মানুষকে বানানো হয়েছে বলীর পাঠা। গণমানুষের এ কান্না ২০ দল বা এর প্রধান নেত্রীর কর্ণকূহরে পৌঁছুচ্ছে কিনা তা নিয়ে নানা সরব আলোচনা চলছে। বেগম জিয়া ইতোমধ্যে বলেছেন, সরকারের সকল কর্মকা- অগণতান্ত্রিক। তাই তাদের এ আন্দোলন। কিন্তু পাল্টা প্রশ্ন উঠেছে, সাধারণ মানুষকে অবরুদ্ধ করে পাশাপাশি বিভিন্ন স্থানে হরতাল কর্মসূচী দিয়ে ২০ দলীয় এ কর্মকা- কোন ধরনের গণতান্ত্রিক? গণতন্ত্রের নামে ইসলামের নামে বিএনপি ও এর সহযোগী দলগুলো এদেশের মানুষকে নিয়মিত বোঝাতে চায়, দেখাতে চায়Ñ তার সঙ্গে তাদের কর্মকা-ের কোন মিল খুঁজে পাওয়া যায় না। কথায় কথায় নিজেদেরকে ইসলামী ভাবধারায় উজ্জীবিত বলে দাবিদার বিএনপি তাদের ডাকা অবরোধে এবার বিশ্ব এজতেমাকেও ছাড় দেয়নি। মুুখে ইসলামের নামে জিকির তাদের। অথচ, এজতেমায় যোগ দিতে ইচ্ছুক মুসল্লিদেরও অবরোধ থেকে ছাড় না দেয়ায় ঘটনাটি তাদের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শনের সামিল হয়েছে। আজ শুক্রবার থেকে টঙ্গীতে শুরু হচ্ছে প্রথম পর্বের এজতেমা। লাখ লাখ ধর্মপ্রাণ মুসলমানের যে সমাবেশ ঘটে এজতেমায়Ñ সে এজতেমাকেও রীতিমত বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়েছে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে মুসল্লিদের মাঝে এজতেমায় যোগ দিতে নেমে এসেছে নিদারুণ দুর্ভোগ। সঙ্গত কারণে, এবারের প্রথম পর্বের এজতেমায় হয়তো বা তবলীগ জামায়াতের অনুসারী মুসল্লিদের সমাগম ইতোপূর্বেকার বছরের তুলনায় হ্রাস পেতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। প্রশ্ন উঠেছে, হরতাল অবরোধে জরুরী গুরুত্বপূর্ণ কিছু খাতকে আওতামুক্ত রাখা হয়। ২০ দলীয় জোট এবার সেক্ষেত্রেও ভ্রƒক্রুটি দেখিয়েছে বিশ্বব্যাপী ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের দ্বিতীয় বৃহত্তম সমাবেশ বিশ্ব এজতেমাকে। অথচ, এ ২০ দলীয় জোটে রয়েছে ইসলামী ভাবধারার অধিকাংশ দল। এস্তেমায় যোগ দিতে ইচ্ছুক মুসল্লিরা শত বাধা উপেক্ষা করে মঙ্গলবার রাত থেকে টঙ্গীর তুরাগ পাড়মুখী হতে তৎপর হয়েছে। কিন্তু ২০ দলের ডাকা অবরোধ তাদের পদে পদে থমকে দিচ্ছে। প্রশ্ন উঠেছে, যে এজতেমায় ইতোপূর্বেকার সময়ে বেগম খালেদা জিয়াকেও যোগ দিয়ে আখেরী মোনাজাতে অংশ নিতে দেখা গেছেÑ সেই এজতেমাকে অবরোধের বাইরে রাখতে ঘোষণা দিতে তাদের আপত্তি কোথায় ছিল। ধর্ম নিয়ে, ইসলাম নিয়ে মুখে যাদের খৈ ফুটে কাজে-কর্মে তার প্রতিফলন না ঘটায় এজতেমায় অংশগ্রহণেচ্ছুকদের মাঝে তা নিয়ে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। বৃহত্তর চট্টগ্রাম অঞ্চল থেকে এবার বিপুলসংখ্যক ধর্মপ্রাণ মুসলমান এজতেমায় যোগ দেয়ার ক্ষেত্রে বড় ধরনের হোঁচট খেয়েছে। ক্ষোভে ফুঁসছে মুসল্লিরা।
×