ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

‘হক এর ঘর’ প্রামাণ্যচিত্রের ডিভিডির মোড়ক উন্মোচন

প্রকাশিত: ০৬:০৩, ৮ জানুয়ারি ২০১৫

‘হক এর ঘর’ প্রামাণ্যচিত্রের ডিভিডির মোড়ক উন্মোচন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ মঞ্চের পাশঘেঁষে সারিবদ্ধ প্রজ্বলিত হারিকেন। সামনের সারিতে বসে আছে লালনভক্তবৃন্দ। স্পিকার থেকে ভেসে আসছে লালন সাঁইয়ের অমর গানগুলো। সব মিলিয়ে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের উন্মুক্ত মঞ্চ ঘিরে বুধবার সন্ধ্যায় বিরাজ করছিল কুষ্টিয়ার লালনের আখড়ার আবহ। শীতের তীব্রতা উপেক্ষা করে ভক্তদের উপচেপড়া ভিড়ে বিশেষ এক তাৎপর্য বিরাজ করছিল। লালনগীতির অসাধারণ পরিবেশনার মধ্য দিয়ে মোড়ক উন্মোচিত হয় লালন সাঁইজীর অনুসারীদের জীবনসংগ্রাম ও তাঁদের যাপিতজীবনের নানা টানাপোড়েন নিয়ে নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র ‘হক এর ঘর’। লেজার ভিশনের ব্যানারে প্রকাশিত এ প্রামাণ্যচিত্রটি পরিচালনা করেছেন ফাখরুল আরেফীন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু। মোড়ক উন্মোচনের সময় তিনি বলেন, যেভাবেই হোক কুষ্টিয়ায় লালন সাঁই শায়িত এই হকের ঘরের চাবি লালনভক্ত অনুরাগীদের হাতছাড়া হয়ে যায়। এই চাবি তাদের হাতেই ফিরিয়ে দিতে হবে, যারা এই মহা-মানবের অনুসারী। আজ এই সন্ধ্যায় ‘হক এর চাবি’ প্রামাণ্যচিত্রটি প্রকাশের মাধ্যমে এটাই প্রমাণিত হলো গণতন্ত্রের ধারা এখনও অব্যাহত এবং আগামীতেও এই ধারা অব্যাহত থাকবে। লালন মাজার শরীফের খাদেম ফকির মোহাম্মদ আলী সাঁইয়ের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন লেজার ভিশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাজহারুল ইসলাম। প্রামাণ্যচিত্রের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন সংস্কৃতি সচিব ড. রণজিৎ কুমার বিশ্বাস এনডিসি, বীর বিক্রম সাজ্জাদ জহির, চলচ্চিত্রকার মোরশেদুল ইসলাম, আলোকচিত্রী মুনীরা মোরশেদ মুন্নী, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব হাসান আরিফ। প্রামাণ্যচিত্র নির্মাণের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেন পরিচালক ফাখরুল আরেফীন। শুরুতেই প্রামাণ্যচিত্রটির মোড়ক উন্মোচন পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। এরপর প্রজেকশনের মাধ্যমে ‘হক এর ঘর’ প্রামাণ্যচিত্রটি দেখানো হয়। অন্য বক্তারা বলেন, কুষ্টিয়ার কুমারখালীর ছেঁউড়িয়ার লালনের আখড়াবাড়ির চিরশায়নকক্ষ বা মাজার শরিফকে ভক্তবৃন্দ হকের ঘর বলে। কারণ এই ঘরে যিনি শুয়ে আছেন তার সঙ্গীতে, সাধনায় জীবনে ও মননে যে ঐক্য দেখা যায়, মানবজীবনের হকের প্রতিবিম্ব। লালন মাজার শরিফ বা হকের ঘরে-ই দীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। একে কেন্দ্র করে বছরে দুবার বাৎসরিক অনুষ্ঠান হয়। হাজার হাজার লালনভক্ত আসেন। সবচেয়ে বড় কথা হলোÑ বাঙালীর জাতীয় চেতনার মূলধারাটির সঙ্গে লালন সাধনার প্রগাঢ় মেলবন্ধন থাকায়, এখানকার অনুষ্ঠানগুলো জাতীয় উৎসব অনুষ্ঠানে পরিণত হতে চলেছে। সাঁইজির ভাবস্বাতন্ত্র্য, সাধনপন্থা, সঙ্গীতধারা ও ভক্তি ঐতিহ্য টিকিয়ে রাখতে হলে লালন তীর্থ হকের ঘরের ওপর লালনভক্তদের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হওয়া একান্ত অপরিহার্য। লালনের সেই হকের ঘরের চাবি বেদখল হয়ে যায়। এতে প্রভাব হারিয়েছেন সত্যিকারের লালনভক্ত ও অনুরাগীরা। এ জন্য লালন অনুসরাীরা মনে করেন, অন্য কারও দ্বারা এ ধারাকে সজীব ও বহমান রাখা সম্ভব নয়। উচ্চ আদালতও সেই নির্দেশনা দিয়েছেন। এ জন্য সবার দাবি, লালনের হকের ঘরের চাবি ফিরিয়ে দিতে হবে লালন মাজার শরিফের খাদেমের হাতেই। ডেপার্ট ও চারুকলার যৌথ উদ্যোগে সেমিনার অনুষ্ঠিত ॥ শিল্পবিষয়ক ত্রৈমাসিক পত্রিকা ডেপার্ট ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউটের যৌথ উদ্যোগে এক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয় জাতীয় জাদুঘরের সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে বুধবার সকালে। এতে ‘এশিয়ান বেনালে’ বিষয়ক বক্তব্য রাখেন ইন্টারন্যাশনাল এ্যাসোসিয়েশন অব আর্ট ক্রিটিক্সের (আইকা) সভাপতি প্রখ্যাত শিল্প সমালোচক ড. মারেক বার্টেলিক। ডেপার্টের আমন্ত্রণে গত ২৬ ডিসেম্বর দুই সপ্তাহের জন্য ঢাকায় আসেন পোলিশ বংশোদ্ভূত মার্কিন এই শিল্প সমালোচক ও কবি। তৃতীয় দিনের এ সেমিনারে তিনি এশিয়ান দ্বিবার্ষিক চারুকলা বিষয় নিয়ে তাঁর বক্তব্য উপস্থাপন করেন। অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন চারুকলা ইনস্টিটিউটের ডিন অধ্যাপক নিসার হোসেন। এরপর ডেপার্টের সম্পাদক শিল্পী মোস্তফা জামানের শুভেচ্ছা বক্তব্যের পর শিল্পী মারেক বার্টেলিক তাঁর বক্তব্য শুরু করেন। তিনি বলেন, বেনালেগুলোকে ইউরোপ বা অন্য কোন বিখ্যাত শিল্পীর হুবহু নকল থেকে বিরত থাকতে হবে। বিখ্যাত শিল্পীদের চিত্রকে ধারণ করে স্থানিক শিল্পীদের সমহিমায় চিত্র আঁকা উচিত। নতুন শিল্পীরা যেন নকল ছবির দিকে ঝুঁকে না পড়ে। এশিয়া দ্বিবার্ষিক চারুকলায় অনেক সময় দেখা যায় শিল্পীরা ধার করা চিত্রকে উপস্থাপন করার চেষ্টা করেন, এটা ঠিক নয়, শিল্পীদের স্থানিক হওয়া জরুরী। নৃত্যনন্দনের রজতজয়ন্তী উপলক্ষে মণিপুরী নৃত্যানুষ্ঠান আগামীকাল ॥ দেশের অন্যতম নৃত্য সংগঠন ‘নৃত্যনন্দন’ বাংলাদেশের নৃত্যচর্চার ধারায় ঐতিহ্য, শাস্ত্রীয়, সৌন্দর্য ও সৃজন কর্মের এক অপূর্ব সমন্বয় ঘটিয়ে নিরন্তর নতুন নতুন প্রযোজনার মাধ্যমে অসংখ্য দৃষ্টান্ত রাখতে সমর্থ হয়েছে পঁচিশ বছরে যোগ্যতার নিরিখেই। এ বছর সংগঠনটির রজতজয়ন্তীর এই সন্ধিক্ষণে ২ জানুয়ারি থেকে শুরু হয়েছে উপমহাদেশের প্রখ্যাত নৃত্যগুরু শ্রীমতি কলাবতী দেবীর পরিচালনায় এবং বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সহযোগিতায় মণিপুরী নৃত্য কর্মশালা। এতে প্রায় পঞ্চাশোর্ধ মণিপুরী প্রশিক্ষণার্থী অংশগ্রহণ করেছে। কর্মশিবির শেষে আগামীকাল শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালা মিলনায়তনে প্রশিক্ষণার্থীদের পরিবেশনায় প্রায় দেড় ঘণ্টাব্যাপী মণিপুরী নৃত্যানুষ্ঠানের আয়োজন করেছে সংগঠনটি। অনুষ্ঠানে নৃত্য পরিচালনা করবেন শ্রীমতি কলাবতী দেবী। অংশগ্রহণ করবেন কর্মশালার প্রশিক্ষণার্থীরা এবং বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠিত মণিপুরী নৃত্যশিল্পীগণ। এই আয়োজনে সহযোগিতায় রয়েছে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি।
×