ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

সোহ্রাওয়ার্দী উদ্যান ও ঢাবি ক্যাম্পাস ছিল শান্ত স্বাভাবিক

প্রকাশিত: ০৫:৫৫, ৬ জানুয়ারি ২০১৫

সোহ্রাওয়ার্দী উদ্যান ও ঢাবি ক্যাম্পাস ছিল শান্ত স্বাভাবিক

বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার ॥ ৫ জানুয়ারি ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ হিসেবে পালনের ঘোষণা দিলেও সারাদেশের মতো রাজধানী ঢাকার ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের বিভিন্ন এলাকা ছিল একেবারেই নিরুত্তাপ ও স্বাভাবিক। সোমবার সারাদিনে কোন সংগঠনই সভা, সমাবেশ ও মিছিলের মতো কর্মসূচী পালন করেনি। লোকজনের উপস্থিতিও ছিল অন্যান্য দিনের চেয়ে কম। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানসহ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের বিভিন্ন পয়েন্টে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সতর্ক অবস্থান দেখা যায়। সোমবার সকাল থেকেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনের সামনে অবস্থান নেয় ছাত্রলীগ। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল ছাত্রলীগ কর্মীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে আসতে থাকেন। কেন্দ্রের নির্দেশনা অনুযায়ী কার্জন হল, পলাশী মোড়, নীলক্ষেত মোড়, কাঁটাবন, চাঁনখারপুলসহ বিভিন্ন পয়েন্টে অবস্থান নেন ছাত্রলীগ কর্মীরা। কিছুক্ষণ পরপরই ছাত্রলীগ কর্মীরা মোটরসাইকেল নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে শোডাউন করেন। এছাড়া কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের নির্দেশনা অনুযায়ী ঢাকার বিভিন্ন স্থানে অবস্থানরত কর্মীদের পর্যবেক্ষণে একটি টিম পুরো রাজধানীতে দায়িত্ব পালন করে। এভাবে বিভিন্ন স্থানে অবস্থান সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে। এ বিষয়ে ছাত্রলীগ সভাপতি এইচ এম বদিউজ্জামান সোহাগ জনকণ্ঠকে বলেন, সকাল থেকেই রাজধানীর শতাধিক পয়েন্টে ছাত্রলীগ কর্মীরা অবস্থান নেয়। যতক্ষণ পর্যন্ত আমরা আশঙ্কা করব ততক্ষণ আমরা অবস্থান কর্মসূচী চালিয়ে যাব। এছাড়া আগামীকালও (মঙ্গলবার) প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কর্মসূচীর সঙ্গে অবস্থান কর্মসূচী চলবে। এদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় কোন ধরনের সংঘর্ষের খবর পাওয়া যায়নি। তবে বিকেলের দিকে নীলক্ষেত মোড়ে একটি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় কোন হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। এ এলাকায় বিএনপি-জামায়াত সমর্থকদের কোন কর্মসূচী পালন করতে দেখা যায়নি। বিকেল ৩টার দিকে শাহবাগ এলাকায় একটি ঝটিকা মিছিল বের করে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল। মিছিলের নেতৃত্ব দেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান। তবে এ সম্পর্কে জানতে সংগঠনটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে এদের মুঠোফোন নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়। সংগঠনটির দফতর সম্পাদক আবদুস সাত্তার পাটোয়ারী জনকণ্ঠকে বলেন, বিএনপির কর্মসূচী সফল করতে সোমবার সারাদিনই রাজপথে ছিল ছাত্রদল। খালেদা জিয়ার ঘোষণাকৃত অনির্দিষ্টকালের বিক্ষোভ কর্মসূচী সফল করতেও তারা সচেষ্ট থাকবে। সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের মুঠোফোন বন্ধ কেন এমন প্রশ্নের জবাবে বলেন বিষয়টি তিনি জানেন না। এদিকে সকাল থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস ও পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হলেও শিক্ষার্থী উপস্থিতি ছিল খুবই কম। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আতঙ্কের কারণে অনেকেই ক্যাম্পাসে আসেনি। অনেক বিভাগেই ক্লাস হয়েছে। কিছু বিভাগে হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর অধ্যাপক এম আমজাদ জানান, পুলিশের সহযোগিতায় আমরা ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছি। যে কোন ধরনের সংঘর্ষ বা অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা বা পরিস্থিতি মোকাবেলায় আমাদের প্রস্তুতি রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস-পরীক্ষা সবকিছুই নিয়মতান্ত্রিকভাবে অনুষ্ঠিত হবে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের সব গেটে তালা ॥ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কায় রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের সব গেটে পুলিশ তালা লাগিয়ে দেয়। দুপুরে উদ্যানে গিয়ে দেখা যায় প্রতিটি গেটেই তালা ঝুলছে এবং গেটের সামনে অবস্থান নিয়েছে পুলিশ সদস্যরা। রবিবার রাজধানীর কোথাও সভা সমাবেশ করা যাবে না ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের এমন ঘোষণার প্রেক্ষিতে পুলিশের এমন অবস্থান বলে জানান শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সিরাজুল ইসলাম। তিনি আরও জানান, কেউ যাতে উদ্যানে ঢুকে কোন ধরনের অনাকাক্সিক্ষত পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে না পারে সেজন্যই সব ধরনের সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
×