ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

আদালতের অনিয়ম তদন্তে প্রধান বিচারপতিকে চিঠি দেবেন ড. কামাল

প্রকাশিত: ০৫:০৯, ৩ জানুয়ারি ২০১৫

আদালতের অনিয়ম তদন্তে প্রধান বিচারপতিকে চিঠি দেবেন ড. কামাল

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আদালতের সব রকম অনিয়ম বন্ধে তদন্তের জন্য প্রধান বিচারপতিকে চিঠি দিতে যাচ্ছেন গণফোরামের সভাপতি, সংবিধান প্রণেতা ড. কামাল হোসেন। শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক আলোচনাসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। বাংলাদেশ মানবাধিকার পর্যবেক্ষণ পরিষদ নামের একটি সংগঠন ৪৩তম বিজয় দিবস ও বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি’ শীর্ষক এ আলোচনাসভার আয়োজন করে। ড. কামাল হোসেন বলেন, সর্বোচ্চ আদালতের দেড় শ’ বছরের ঐতিহ্য রয়েছে। অনেক সুনাম অর্জন করেছিল আদালত। সেটা নিয়ে আমাদের গর্বও অনেক। সে আদালতকে যদি রক্ষা করতে না পারি, স্বাধীনতা অর্থহীন হবে। সরকারের বিরুদ্ধে আদেশ চেয়ে না পেলে স্বাধীনতা অর্থহীন হবে। কোর্ট খুলবে আগামী ৫ তারিখ। আমি সেদিন যাব। ভবিষতেও যত আদালত অবমাননার শুনানি হবে সবটিতে যাব। কেননা, অবমাননার জন্য যারা প্রশ্রয় দিচ্ছে সেটা সবচেয়ে বড় অবমাননা। তিনি বলেন, সেদিন লিখিত আকারে চিঠি দেব প্রধান বিচারপতিকে। যে অন্তত ১০ জন প্রধান বিচারপতি বেঁচে আছেন। তাদের নিয়ে কমিটি করে তদন্ত করতে হবে। প্রধান বিচারপতির প্রতি অনুরোধ রাখছি কথায় কথায় ভুল বুঝবেন না। চিঠিটা দিচ্ছি আশা করি দুই লাইনে উত্তর পাব। ৫৫ বছর আইনের শাসনের জন্য সেবা করছি। অনুরোধ রাখার অন্তত সুযোগটা দেবেন। দুই লাইনের যে চিঠিটা দেব আশা করি উত্তর পাওয়া যাবে। যে তদন্ত করতে পারবেন না অথবা বিবেচনা করবেন। মানবাধিকার বিষয়ে তিনি বলেন, জনগণ ক্ষমতার অধিকারী। এটা তো বাদ দেয়া যায় না। তাই অসহায় বোধ করার কোন কারণ নেই। সরকারের লোকরা ক্ষমতার মালিক এমন মনে করতে পারেন। কিন্তু দুর্বল করে রাখার অপচেষ্টা থেকে বাঁচতে হবে। তাই ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তুলতে হবে। বলতে হবে আমি এই দেশের মালিক। এই ক্ষমতা আমাদেরই রক্ষা করতে হবে। ড. কামাল বলেন, প্রতিটি সরকারেই কালা-বোবা লোক থাকে। তবে সবাই কালা-বোবা হয় না। এই সরকারের সবাই কালা-বোবা না। শিশু জিহাদ নিহত হওয়ার ঘটনাকে সরকারের ব্যর্থতা আখ্যা দিয়ে প্রবীণ এ আইনজ্ঞ আরও বলেন, আল্লাহ মানুষের মুখ দিয়েছেন কথা বলার জন্য। আপনারা কালা-বোবা না থেকে কথা বলেন। ব্যর্থতার কথা বলেন। আর আমাদের মতো যাদের দূরে সরিয়ে দিয়েছেন তাঁদের কথাগুলো শুনুন যুক্তিযুক্ত কিনা। যুক্তি থাকলে তা মানুন। আর যেসব সংসদ সদস্য মনে করেন আপনাদের সঙ্গে সরকারের মিলছে না, তারা সরে দাঁড়ান। আপনাদের ১৬ কোটি মানুষের কথা শুনতে হবে। তিনি বলেন, রাষ্ট্র মানবতাবোধ হারিয়ে ফেলেছে। সরকার জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে বলেই রাষ্ট্র এমন আচরণ করছে। নাগরিক ঐক্যর আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, আদালতে গেলে বলা হয় কোন কোর্ট? জাতীয়তাবাদী না আওয়ামী কোর্টে এসেছেন। কিন্তু জাতীয়তাবাদী নেই। সব আওয়ামী কোর্ট হয়ে গেছে। এসব বললে আবার আদালত অবমাননা হয়ে যাবে। তিনি বলেন, দেশের সর্বত্র আজ মানবতার ফরিয়াদ। যারা শুনলে প্রতিকার হয়, তারা শোনে না। কিন্তু তাদের শোনার জন্য ব্যবস্থা করতে হবে। মানবাধিকার পর্যবেক্ষণ পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ নুরুল হুদা মিলু চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনাসভায় বক্তব্য রাখেন, সাবেক সদস্য সদস্য গোলাম মওলা রনি, ব্যারিস্টার মেজর (অব) সারোয়ার হোসেন, সাংবাদিক কাজী সিরাজ প্রমুখ।
×