ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

অপেক্ষা বাড়ল প্রাইম ব্যাংকের ॥ আবাহনীর শিরোপা স্বপ্ন ধূলিসাত

প্রকাশিত: ০৪:৫৯, ৩ জানুয়ারি ২০১৫

অপেক্ষা বাড়ল প্রাইম ব্যাংকের ॥  আবাহনীর শিরোপা স্বপ্ন ধূলিসাত

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ হলো না। ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেটে সুপার লীগের চতুর্থ রাউন্ডে ঠিকই জিতেছে প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব। বিকেএসপির তিন নম্বর মাঠে তাদের কাছে ২০ রানে হেরে রানার্সআপ হওয়ার দৌড়েও ছিটকে পড়েছে মোহামেডান স্পোর্টি ক্লাব লিমিটেড। ২৪ পয়েন্ট নিয়ে সবার শীর্ষে থাকা প্রাইম ব্যাংক শিরোপার অন্যতম দাবিদার শুক্রবার চ্যাম্পিয়নশিপ নিশ্চিত করতে পারেনি। আর মাশরাফি বিন মর্তুজার দুর্দান্ত অলরাউন্ড নৈপুণ্যও বাঁচাতে পারেনি মোহামেডানকে। মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে রেসে থাকা আবাহনী লিমিটেড তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ম্যাচে ‘দ্য ফিনিশার’ খ্যাতি পাওয়া নাসির হোসেনের শতকের পরও সাব্বির রুম্মানের বিধ্বংসী বোলিংয়ে ১ উইকেটে কলাবাগান ক্রিকেট একাডেমির (সিএ) কাছে হেরে গেছে। ফলে ২০ পয়েন্ট নিয়ে শিরোপা জয়ের আশা শেষ হয়ে গেছে তাদের। কিন্তু ফতুল্লায় লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জকে ৮ উইকেটের বড় ব্যবধানে বিধ্বস্ত করে নেট রানরেট বাড়ানোর পাশাপাশি ২২ পয়েন্ট নিয়ে শিরোপার দাবিতে টিকে আছে প্রাইম দোলেশ্বর স্পোর্টিং ক্লাব। বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান ক্যারিয়ারে প্রথমবার ওপেনারের দায়িত্বে নেমে ভালই করেছিলেন, কিন্তু মেহেদি মারূফের সেঞ্চুরি জিতিয়েছে দোলেশ্বরকে। রবিবার শেষ রাউন্ডে প্রাইম ব্যাংক অথবা দোলেশ্বরের মধ্যে একটি দলের চ্যাম্পিয়নশিপ নিশ্চিত হবে। তবে সেক্ষেত্রে প্রাইম ব্যাংক হারতে হবে। জিতলেই চ্যাম্পিয়ন তারা। ওপেনার সাকিব জেতাতে পারেননি রূপগঞ্জকে ॥ তিন থেকে সাত নম্বর পর্যন্ত প্রায় সব পজিশনেই এতদিন ব্যাট করতে নেমেছেন সাকিব। কিন্তু ফতুল্লায় লীগের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে রূপগঞ্জের অধিনায়ক নতুন রূপে আবির্ভূত হলেন তিনি। ইনিংস উদ্বোধন করে ৫৪ রানের জুটি গড়ে ভাল সূচনা দিয়েছিলেন। ২৮ রানেই ফিরে যান তিনি। পরে আবুল হাসান রাজুর ৫৬ বলে ২ চার ও ৩ ছক্কায় ৫১ এবং নাজমুল মিলন ৪২ রান করলে ৯ উইকেটে ২২১ রান তোলে রূপগঞ্জ। তবে এ সংগ্রহকে মামুলি প্রমাণ করেন দোলেশ্বরের ওপেনার মেহেদী মারূফ ও মুমিনুল হক। মেহেদী ১১৯ বলে ১৪ চার ও ৩ ছক্কায় ১১৮ রান করে অপরাজিত থাকেন। আর মুমিনুল ৭০ বলে ৬ চারে ৫৬ রান করে ফিরে যান। মাত্র ৩৯.১ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে ২২৪ রান তুলে বিশাল জয় তুলে নেয় দোলেশ্বর। স্কোর ॥ রূপগঞ্জ-৫০ ওভারে ২২১/৯ (আবুল হাসান ৫১, নাজমুল ৪২, সাকিব ২৮; ইলিয়াস ২/২৭, আসিফ ২/৪১, দেলোয়ার ২/৪৫)। দোলেশ্বর-৩৯.১ ওভারে ২২৪/২ (মেহেদী ১১৮*, মুমিনুল ৫৬, রনি ২৮; আবুল হাসান ১/৩১)। ফল ॥ প্রাইম দোলেশ্বর ৮ উইকেটে জয়ী। ম্যাচসেরা ॥ মেহেদী মারূফ (প্রাইম দোলেশ্বর)। অপেক্ষা বাড়ল প্রাইম ব্যাংকের ॥ বিকেএসপিতে ব্যাটে-বলে জ্বলে উঠেছিলেন মাশরাফি। তাঁর দল মোহামেডানকে জিততেই হবে ন্যূনতম রানার্সআপ হতে হলে। কিন্তু বল হাতে ৪০ রানে চারটি উইকেট শিকার এবং ব্যাট হাতে ৭৬ বলে ৫ চার ও ৪ ছক্কায় ৬২ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলেও দলকে জেতাতে পারেননি তিনি। প্রাইম ব্যাংকের কাছে হেরেছে ২০ রানে। প্রথমে ব্যাট করে ফরহাদ রেজার মাত্র ৫৬ বলে ৮ চার ও ৪ ছক্কায় গড়া ৭৬ রানের পরও ৪৯.৪ ওভারে ২৩০ রানে শেষ হয় প্রাইম ব্যাংকের ইনিংস। জবাবে মাত্র ৯১ রানেই ৬ উইকেট হারিয়ে নিশ্চিত পরাজয় দেখছিল মোহামেডান। সপ্তম উইকেটে ১১০ রানের জুটি গড়ে স্বপ্ন দেখাচ্ছিলেন মাশরাফি-আরিফুল হক। তবে মাশরাফির বিদায়ের পর ৪৫.৫ ওভারে ২১০ রানে শেষ হয় মোহামেডানের ইনিংস। স্কোর ॥ প্রাইম ব্যাংক-৪৯.৪ ওভারে ২৩০/১০ (ফরহাদ ৭৬, নুরুল ৩২, শুভাগত ৩০, সৌম্য ৩০; মাশরাফি ৪/৪০, অমিত ২/৬০)। মোহামেডান-৪৫.৫ ওভারে ২১০/১০ (মাশরাফি ৬২, আরিফুল ৬০; মাহমুদুল্লাহ ৩/৩৩, শুভাগত ২/১২) ফল ॥ প্রাইম ব্যাংক ২০ রানে জয়ী। ম্যাচসেরা ॥ ফরহাদ রেজা (প্রাইম ব্যাংক)। ‘দ্য ফিনিশার’ নাসিরের শতক বিফলে ॥ মিরপুরে দারুণ এক শতক উপহার দিলেন নাসির। পজিশন পাল্টে একটু ওপরে উঠে চার নম্বরে নেমেছিলেন এদিন। মাত্র ৯৮ বলে ১৩ চারে ১০৪ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস খেলেন তিনি। তবে স্পিনে আবাহনী ইনিংসে ঝড় বইয়ে দিয়েছেন তরুণ সাব্বির রুম্মান। নাসির ছাড়া আর কোন ব্যাটসম্যান তাঁর স্পিন আক্রমণের মুখে দাঁড়াতে পারেননি। শেষ পর্যন্ত ৫০ ওভারে ৯ উইকেটে ২৪৭ রান তোলে আবাহনী। সাব্বির মাত্র ৪৩ রানে নেন ৬ উইকেট। জবাবে খেলতে নেমে ৪৯.৫ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ২৪৮ রান তুলে জয় পায় কলাবাগান সিএ। মাহমুদুল হাসান ১০৭ বলে ৭ চারে ৮২ রানের একটি ইনিংস খেলেন। স্কোর ॥ আবাহনী-৫০ ওভারে ২৪৭/৯ (নাসির ১০৪, ফরহাদ হোসেন ৩৫, মজিদ ৩৪; সাব্বির ৬/৪৩)। কলাবাগান সিএ-৪৯.৫ ওভারে ২৪৮/৯ (মাহমুদুল ৮২, ইরফান ৪৪*; জুবায়ের ২/৩৫, শুভাশিষ ২/৪২) ফল ॥ কলাবাগান সিএ ১ উইকেটে জয়ী। ম্যাচসেরা ॥ সাব্বির রুম্মান (কলাবাগান সিএ)।
×