ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সৈকতে পর্যটকের ভিড়

প্রকাশিত: ০৫:৪৫, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৪

সৈকতে পর্যটকের ভিড়

এইচএম এরশাদ, কক্সবাজার ॥ ইংরেজী বর্ষ ২০১৪ সালের শেষ দিন আজ। বর্ষ পঞ্জিকার শেষ দিনের পাতাটি উল্টে দিয়ে নতুন বর্ষপঞ্জিকা শোভা পাবে সবখানে। দিন শেষে ঠিক রাত বারোটা ১ মিনিটে ভিন্ন মাত্রায় বরণ করে নেয়া হবে ইংরেজী নববর্ষ ২০১৫ সালকে। মহানন্দের দিনটিকে ‘থার্টি ফার্স্ট নাইট’ বলা হয়ে থাকে। নতুন বছরে আগত দেশী-বিদেশী পর্যটকের পদচারণায় মুখরিত পর্যটন নগরী কক্সবাজার। বর্ষবরণে বিশ্বের দীর্ঘতম সী-বীচের জলরাশি ও ঢেউয়ের নৃত্য, প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগ করতে রেকর্ড পরিমাণ পর্যটক এসেছে। সাধারণ দর্শনার্থীর চেয়ে রাজধানীসহ দূর-দূরান্ত থেকে আসা ভিআইপি ট্যুরিস্টদের পদভারে মুখরিত হয়ে উঠেছে সৈকতরাণী। ছুটে যাচ্ছে সেন্টমার্টিনের স্বচ্ছ নীলাব পানি, অসংখ্য কোরালের ছড়াছড়ি, সূর্যাস্তের অপরূপ দৃশ্য ও সমুদ্র ঘেঁষা পাহাড় ও নদী সৌন্দর্য উপভোগ করতে। বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজারে বিনোদন কেন্দ্রগুলোকে বুধবার থার্টি ফার্স্ট নাইটকে ঘিরে নববধূর সাজে সজ্জিত করা হয়েছে। এ লক্ষ্যে নেয়া হয়েছে বাড়তি বিনোদন ব্যবস্থার। মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ হরেক রকমের বর্ণাঢ্য আয়োজনের ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে। বুধবার বর্ষ বিদায় এবং নতুন বছরকে বরণের কাক্সিক্ষত থার্টি ফার্স্ট নাইটের উৎসবটি সর্বজনীনভাবে পালনের উদ্দেশে পর্যটন শহরসহ জেলার বিভিন্ন স্পটগুলোতেও বাড়তি বিনোদনের আয়োজন করা হয়েছে। পুরনো বছরকে বিদায় ও নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে আগে থেকেই কক্সবাজারে ভিড় করেছেন পর্যটকরা। তাদের কেউ কেউ আবার প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন গিয়েও কাক্সিক্ষত থার্টি ফার্স্ট নাইট উদ্যাপনের অপেক্ষায় রয়েছেন। ২০১৩ সালেও বিদায়ী বছরের শেষ দিন ছিল বুধবার। এবছরও বিদায়ী ২০১৪ সালের শেষ দিনই হচ্ছে আজ বুধবার। আজকের দিনটি অন্য আট-দশটি দিনের মতোই বিদায় নেবে। কিন্তু গ্রেগরীয় দিনপঞ্জিকা অনুযায়ী, দিনটি একটু বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত। যদিও পুরনোকে বিদায় আর নতুনের আগমন একটি সহজাত নিয়ম। তবুও প্রত্যাশা, ২০১৪ সালের সব জরাজীর্ণ ও ব্যর্থতাকে দূরে ঠেলে নতুন বছর সবার জন্যই হয়ে উঠবে সুখকর, বয়ে নিয়ে আসবে শান্তির বারতা। সাফল্যে ভরে উঠবে আঙিনা, আর কানায় কানায় ভরে উঠবে পূর্ণতায়। সমুদ্রে বিলীন হওয়ার পূর্বে সেই সূর্যটি জানান দিয়ে যাবে কল্যাণ ও সমৃদ্ধির। তাই এই পুরনো বছরকে বিদায় ও নববর্ষকে স্বাগত জানাতে বাঁধ ভাঙ্গা উচ্ছ্বাস থাকবে সমুদ্র সৈকত কক্সবাজারে। বরাবরের মতো এবারও পর্যটকদের মাতিয়ে রাখতে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের বেশ কয়েকটি তারকা হোটেলে ওপেন কনসার্ট ও ড্যান্স গ্রুপ, ফ্যাশন শো, ডিজে শো, গানসহ নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। বর্ষ বরণের সেই মাহেন্দ্রক্ষণকে উদ্যাপন করতে কক্সবাজার, সেন্টমার্টিন, টেকনাফ, শাহপরীদ্বীপ, ইনানী, হিমছড়ি, রামু, ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু সাফারী পার্ক, মহেশখালী, সোনাদিয়াসহ পুরো কক্সবাজারেই ভিড় জমেছে পর্যটকের। আগত পর্যটকদের ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পুরনো বছরকে বিদায় ও নতুন বছরকে বরণে কক্সবাজার এখন পুরোপুরি প্রস্তুত। ছোট-বড় ৫ শতাধিক হোটেল-মোটেল ও গেস্ট হাউস সেজেছে নতুন সাজে। থার্টি ফার্স্ট নাইট উপলক্ষে এসব হোটেলে পর্যটকদের ঠাসাঠাসি অবস্থা। হোটেলের কোন কক্ষই খালি নেই। তারকামানের হোটেলসহ ছোট-বড় সব হোটেল-মোটেলের অভ্যন্তরে আয়োজন করা হয়েছে ড্যান্স গ্রুপ, ফ্যাশন শো, ডিজে শোসহ নানা অনুষ্ঠানের। কক্সবাজারের কলাতলী, হিমছড়ি, রেজু ব্রিজ, ইনানী, টেকনাফ ও সেন্টমার্টিনের ইকো রিসোর্টগুলোতেও আয়োজন করা হয়েছে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের। নিজস্ব সংবাদদাতা কলাপাড়া থেকে জানান, পুরনো বছরকে বিদায় এবং নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে কুয়াকাটা এখন পর্যটক-দর্শনার্থীর পদভারে মুখরিত। অধিকাংশ আবাসিক হোটেল-মোটেল বুক আগতদের বিনোদন দিতে থার্টিফার্স্ট নাইট উদযাপন কেন্দ্রিক ব্যাপক অনুষ্ঠানমালা হাতে নেয়া হয়েছে। বুধবার সন্ধ্যা থেকে এসব অনুষ্ঠান শুরুর ব্যাপক প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্যে গান-কমেডিসহ অভিনয় ও নৃত্য পরিবেশিত হচ্ছে। উড়ানো হবে রাখাইনদের সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য ফানুস উড়ানোর উৎসব। রাখাইন বৌদ্ধবিহার এলাকার মাঠটির সজ্জার কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। কুয়াকাটা সৈকতের দীর্ঘ এলাকাজুড়ে থার্টি ফার্স্ট নাইটকে কেন্দ্র করে ব্যাপক পুলিশী নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানালেন কলাপাড়া থানার ওসি মোহাঃ আজিজুর রহমান।
×