ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

বিশ্বকাপে জার্মানির কাছে ব্রাজিলের লজ্জা দুর্ঘটনা নয় ॥ জিকো

প্রকাশিত: ০৫:৪২, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৪

বিশ্বকাপে জার্মানির কাছে ব্রাজিলের লজ্জা দুর্ঘটনা নয় ॥ জিকো

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ এবার ষষ্ঠ বিশ্বকাপ জয়ের মিশনে ঘরের মাঠে নেমেছিল ব্রাজিল। কিন্তু সেমিফাইনালে নিজেদের ফুটবল ইতিহাসে সবচেয়ে লজ্জাজনক পরাজয় বরণ করে সেই স্বপ্নটা ধূলিসাৎ হয়ে যায় সেলেসাওদের। এমন হারকে বিশ্বকাপ জয়ে ফেবারিট দলের জন্য দুর্ঘটনা হিসেবেই বিবেচনা করেছেন বিশ্বের ফুটবলবোদ্ধারা। কিন্তু ব্রাজিলিয়ান কিংবদন্তি তারকা জিকো তা মানতে নারাজ। তিনি মনে করেন, জার্মানির কাছে এমন পরাজয় নিছক কোন দুর্ঘটনা হতেই পারে না। তাঁর দাবি ক্রমান্বয়ে দেশের ফুটবলের প্রকৃতি নিম্নমুখী হওয়ার ফল ছিল সেটা। আর এ কারণেই শক্তিশালী জার্মানির কাছে ৭-১ গোলের বড় হার বরণ করতে হয়েছে। আর এটাকে যুক্তিগ্রাহ্যভাবেই সহজভাবে মেনে নেয়া যায় বলে মনে করেন জিকো। পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ব্রাজিল এবার মরিয়া ছিল ঘরের মাঠে আরেকটি বিশ্বকাপ জয়ের জন্য। কারণ ১৯৫০ সালে প্রথমবার যখন দেশের মাটিতে বিশ্বকাপ আয়োজন করেছিল সেলেসাওরা তখন শিরোপা নিয়ে গিয়েছিল উরুগুয়ে। তবে এবার সুপারস্টার নেইমারের ওপর নির্ভর করে বিশ্বকাপ ঘরেই রাখতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ছিল ব্রাজিল। কিন্তু নেইমার ইনজুরির কারণে জার্মানদের বিরুদ্ধে নামতে পারেননি। সে কারণেই নিজেদের ফুটবল ইতিহাসে সবচেয়ে বড় পরাজয়টা মানতে হয়েছে। জিকো মনে করেন এই শিক্ষাটা দীর্ঘদিন ধরে ভুলের একটি মাসুল হিসেবে এসেছে। তিনি বলেন, ‘লোকজন ৭-১ ব্যবধানে পরাজয় নিয়ে আলোচনায় দাবি করে এটা কোনভাবে হয়ে গেছে। কিন্তু বিষয়টা এমন নয়। সত্যটা এখন গত তিন বিশ্বকাপের ব্যর্থতার সঙ্গে জড়িয়ে গেছে যে ব্রাজিলিয়ানরা আগের মতো শীর্ষ অবস্থানে নেই।’ ২০০২ সালে ব্রাজিল সর্বশেষ বিশ্বকাপ জয় করেছিল। সেবারও কোচ ছিলেন লুইস ফিলিপ সোলারি। এবার তিনি প্রত্যাশায় ছিলেন ব্রাজিলিয়ানদের আরেকটি শিরোপা পাইয়ে দেয়ার। কিন্তু সেই স্বপ্নটা দুঃস্বপ্নই হয়ে গেছে। এ বিষয়ে জিকো বলেন, ‘যতক্ষণ পর্যন্ত মানুষ ভাবতে থাকবে যে এ পরাজয়টা শুধু দুর্ঘটনা ছিল, ততক্ষণ পর্যন্ত কোনকিছুই পরিবর্তন হবে না। এটাও সম্ভব নয় যে সব খেলোয়াড় সারাবছর দেশের বাইরে গিয়ে ফুটবল খেলে তাঁদের দলে এনে সবকিছু সমাধান করা যাবে।’ জিকোর পরামর্শ ঘরোয়া ফুটবলের দিকে আরও বেশি মনোযোগ দেয়া উচিত। জিকো নিজের বিশ্বকাপ জয়ের দিনগুলোর কথা বলেছেন। ১৯৭৮, ১৯৮২ ও ১৯৮৬ বিশ্বকাপে জিকো আকর্ষণীয় দশ নাম্বার জার্সিটি পরিধান করেছিলেন। সুন্দর সুষ্ঠু একটি খেলা উপহার দেয়ার জন্য তাঁর প্রজন্মের ফুটবলাররা ছিলেন সবার কাছে প্রশংসনীয়। আর এটার সঙ্গে ব্রাজিলিয়ানরা ঐতিহ্যগতভাবে সংযুক্ত। শিরোপা জয়টাই মূলকথা ছিল না। এ বিষয়ে জিকো ১৯৮৬ সালে বলেছিলেন, ‘আমার প্রজন্ম কখনই শিরোপা জয়ের জন্য জন্মেনি। ভাল খেলা এবং সৌন্দর্য উপহার দিতেই জন্মেছে।’ কোয়ার্টার ফাইনালে পেনাল্টিতে ফ্রান্সের কাছে পরাজয়ের পর এ মন্তব্য করেছিলেন জিকো। ব্রাজিলিয়ান ফুটবলে সেই ধারাটাই ফিরে আসুক- এটাই কামনা তাঁর।
×