ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

আলবদর আজহারের ফাঁসি

প্রকাশিত: ০৫:৩০, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৪

আলবদর আজহারের ফাঁসি

একাত্তরের যুদ্ধাপরাধী আরও একজনের ফাঁসির আদেশ হয়েছে। মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ও আলবদর কমান্ডার এটিএম আজহারুল ইসলামকে মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত ফাঁসির রজ্জুতে ঝুলিয়ে দ- কার্যকর করার রায় দিয়েছে আদালত। এই রায়ে একাত্তরের শহীদদের পরিবারগুলো স্বস্তি পেল। মুক্তিযুদ্ধে স্বাধীনতাবিরোধিতায় হত্যা, গণহত্যা, ধর্ষণের মতো যুদ্ধাপরাধ ঘটিয়ে উঠতি বয়সেই আজহার হয়ে ওঠে রংপুর অঞ্চলের ত্রাস। চার দশক আগের সেই অপরাধের দায়ে মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল রায় ঘোষণা করেছে। তার বিরুদ্ধে আনীত ছয়টি অভিযোগের মধ্যে পাঁচটি সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়। গণহত্যা, ধর্ষণ, অপহরণ ও আটক রেখে নির্যাতনের ঘটনা একাত্তরে ঘটিয়েছে আজহার। সে সময় আজহার ছিল ইসলামী ছাত্র সংঘের রংপুর জেলা কমিটির সভাপতি ও জামায়াতের নেতৃত্বে গঠিত আলবদর বাহিনীর রংপুর জেলা কমান্ডার। তার নেতৃত্বে এবং নির্দেশেই বৃহত্তর রংপুর এলাকায় হত্যা, ধর্ষণ, অপহরণ-নির্যাতন, বাড়িঘরে লুটপাট, অগ্নিসংযোগের মতো বর্বরতা চালানো হয়। পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ে দৃশাপটে আসে আজহার। সর্বশেষ জামায়াতের অষ্টম শীর্ষ নেতার দায়িত্বে ছিল। ২০১২ সালের ২২ আগস্ট আটক আজহারের বিরুদ্ধে আদালতে সাক্ষী-সাবুদের ভিত্তিতে অপরাধ প্রমাণিত হয়েছে ঠিক, কিন্তু রায় ঘোষণার পর আজহারের হাসিমুখ দেখে স্পষ্ট হয়, একাত্তরের নরঘাতকরা তাদের অপকর্মের জন্য বিন্দুমাত্র অনুতপ্ত নয়। তার পক্ষের আইনজীবী বলেছেন তাঁরা সুপ্রীমকোর্টে আপীল করবেন। বাঙালীর মুক্তি সংগ্রাম দমনে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীকে সহযোগিতা দিতে এই শীর্ষ জামায়াত নেতা এবং আঞ্চলিক পর্যায়ের কর্মীরা গণহত্যা ও ধর্ষণে মত্ত হয়েছিল। একাত্তরের পরাজিত এই শক্তি পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ে আত্মপ্রকাশ করে আবারও অগণতান্ত্রিক পথ বেছে নিয়েছে। বর্তমান সরকার তার নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের কাজ অনেক দূর এগিয়ে নিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অবশ্য বলেছেন তাঁর সরকার সকল যুদ্ধাপরাধীর বিচার করবে। তাঁর সেই প্রতিশ্রুতির পথ ধরে বিচার ও শাস্তির কাজ দ্রুত সম্পন্ন হবে এমন প্রত্যাশা মুক্তিযুদ্ধের চেতনাধারী সকল বাঙালীর।
×