ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

শুরুর জোড়া গোলেই হার শেখ জামালের

প্রকাশিত: ০৫:৫০, ২৮ ডিসেম্বর ২০১৪

শুরুর জোড়া গোলেই হার শেখ জামালের

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ শনিবার ফিফা আন্তর্জাতিক প্রীতি ক্লাব ম্যাচে জয় কুড়িয়ে নিয়েছে সফরকারী দক্ষিণ কোরিয়ান ক্লাব বুসান আই পার্ক। বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত এই ম্যাচে তারা হারায় বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় ক্লাব শেখ জামাল ধানম-ি ক্লাব লিমিটেডকে। জয়ী দলের পক্ষে একটি করে গোল করেন মিডফিল্ডার কিম জিংইউ এবং ফরোয়ার্ড উন ডংমিন। শনিবার বিকেল ৫টা বেজে ৪৪ সেকেন্ড। বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম। প্রেসবক্সে বসলেই সাংবাদিকদের দেয়া হয় প্লেয়ার লিস্ট এবং এক কাপ চা। প্লেয়ার লিস্টে চোখ বোলানোর কাজ খেলা শুরুর আগেই শেষ। ইতোমধ্যেই রেফারি মিজানুর রহমানের বাঁশির ফুঁতে শুরু হয়ে গেছে বাংলাদেশের শেখ জামাল ধানম-ি ক্লাব লিমিটেড বনাম দক্ষিণ কোরিয়ার বুসান আই পার্কের ফিফা আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচটি। চায়ের কাপে প্রথম চুমুক দেয়ার আগেই গো-ও-ল! না, উল্লসিত হওয়ার কিছু নেই। শেখ জামাল গোল করেনি। গোল হজম করেছে। অথচ ম্যাচের তখন এক মিনিটও হয়নি, মাত্র ৪৪ সেকেন্ড! শেখ জামালের মিডফিল্ডার জামাল ভুঁইয়ার ভুল পাসে বল চলে যায় প্রতিপক্ষ খেলোয়াড়দের কাছে। জামালের রক্ষণের দুর্বলতাকে কাজে লাগিয়ে ফাঁকা পোস্টে খুব সহজেই বল পাঠিয়ে দেন বুসানের মিডফিল্ডার কিম (১-০)। আচমকা গোল খেয়ে যেন হতবিহ্বল হয়ে পড়ে জামালের খেলোয়াড়রা। তাদের এই অবস্থাকে আরও কড়ায়-গ-ায় কাজে লাগায় বুসান। ৫ মিনিটে মধ্যমাঠ থেকে বল পেয়ে জামালে বক্সে ঢুকে লক্ষ্যভেদ করেন ফরোয়ার্ড ডংমিন (২-০)। দুই গোল খেয়ে যেন হুঁশ ফেরে জামালের। গুছিয়ে নেয় নিজেদের। শাণাতে থাকে একের পর এক আক্রমণ। কিন্তু দুর্ভাগ্যই বলতে হবে, তাদের প্রতিটি আক্রমণই পর্যবসিত হয় ব্যর্থতায়। ম্যাচটি দেখতে মোটামুটি ভালই দর্শক পরিলক্ষিত হয়েছে। সংখ্যাটা হাজার ১৫। কদিন আগে একই ভেন্যুতে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ জাতীয় দল বনাম জাপান অনুর্ধ-২১ দলের মধ্য ম্যাচটি উপভোগ করতে সেদিন স্টেডিয়ামে এসেছিলেন প্রায় ২০ হাজার দর্শক। কনকনে ঠা-ার মধ্যে হারলেও বেশ উষ্ণ ম্যাচই উপহার দিয়েছে জামাল। বুসান আই পার্কের কোচ ম্যা চপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন প্রীতি ম্যাচটি যাতে সবাই মনে রাখে তেমনটাই খেলবে তার দল। কিক অফের ৪৪ সেকেন্ডেই জামালের জালে বল পাঠিয়ে সেটাই যেন প্রমাণ করলেন তিনি। বুসান দলে অনেক নতুন ও তরুণ ফুটবলার আছে। জামালের বিরুদ্ধে এ ম্যাচ তাদের অভিজ্ঞতা বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে বলে তাদের কোচ ম্যাচের আগে বলেছিলেন। এশিয়া কাপে অংশ নিতে ক্লাবটির দুই প্লেয়ার জাতীয় দলের ক্যাম্পে থাকায় ঢাকায় আসতে পারেনি। এছাড়া ক্রিসমাসের ছুটিতে থাকায় ক্লাবের দুই ব্রাজিলিয়ান ফুটবলারও এখানে আসতে পারেনি। তারপরও জামালের বিরুদ্ধে জয় কুড়িয়ে নিতে কোন সমস্যা হয়নি তাদের। সম্প্রতি দক্ষিণ কোরিয়া ফুটবল এ্যাসোসিয়েশন (কেএফএ) বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনকে (বাফুফে) একটি আমন্ত্রণপত্র পাঠায়। ‘কে-লীগ’-এর একটি ক্লাব বাংলাদেশ দলের বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচ খেলতে চায় বলে তারা জানায়। তারা প্রস্তাব দেয়Ñ বাংলাদেশের কোন ক্লাব চাইলে ম্যাচটি ঢাকায় খেলতে পারে। কিংবা জাতীয় দলকে কোরিয়া পাঠাতে পারে। উল্লেখ্য, ম্যাচের পুরো খরচ কোরিয়ান ক্লাবটিই বহন করে। আইএফএ শিল্ড এবং কিংস কাপে এশিয়ার বিভিন্ন ক্লাবের বিপক্ষে খেলার অভিজ্ঞতা থাকলেও এবারই প্রথম বিশ্বকাপ খেলুড়ে দেশের কোন ক্লাবের বিপক্ষে খেলল শেখ জামাল। ম্যাচের ১৫ মিনিটে জামালের গাম্বিয়ান ফরোয়ার্ড ল্যান্ডিং ডার্বোয়ের তার জোরালো শট অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। ২২ মিনিটে মামুনুল ইসলামের দুর্দান্ত শট পোস্টের পাশ ঘেঁষে চলে যায়। ২৭ মিনিটে হাইতিয়ান ফরোয়ার্ড ওয়েডসনের দূরপাল্লার শট লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। ৬৫ মিনিটে ওয়েডসনের শট মিস হয়। ৮১ মিনিটে বুসানের বক্সের সামান্য বাইরে থেকে ওয়েডসনের ফ্রিকিক বারপোস্টে লেগে ফেরত আসে। ৮৮ মিনিটে বাঁপ্রান্ত থেকে জামাল ভুঁইয়ার লং পাসে পা ছুঁইয়েও মিডফিল্ডার সোহেল রানা গোল করেত পারেননি।
×