ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

মৃত ব্যক্তিকে জীবিত দেখিয়ে ভিজিডি’র চাল উত্তোলন

প্রকাশিত: ০৪:৩৬, ২৮ ডিসেম্বর ২০১৪

মৃত ব্যক্তিকে জীবিত দেখিয়ে ভিজিডি’র চাল উত্তোলন

স্টাফ রিপোর্টার, কুড়িগ্রাম ॥ কুড়িগ্রাম জেলার রাজিবপুর ইউনিয়নে প্রায় দেড় বছর আগে থেকে মৃত ব্যক্তির নামে ভালনারেবল গ্রুপ ডেভেলপমেন্ট (ভিজিডি) কার্ড বরাদ্দ দেখিয়ে চাল উত্তোলনের ঘটনায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। এতে এলাকার চেয়ারম্যান, মেম্বার এবং সংশ্লিষ্ট এনজিও কর্মীরা জড়িত। বিষয়টি নিয়ে রাজিবপুরের শিবেরডাঙ্গী এলাকার আব্দুস সাত্তার জিহাদী নামের এক ব্যক্তি জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। শহর থেকে রাজীবপুরের দূরত্ব ৩৮ কিঃমিঃ। ২০১৩-২০১৪ অর্থবছরে রাজিবপুর ইনিয়ন পরিষদ কর্তৃপক্ষ ভিজিডি কার্ডের জন্য দুস্থ মহিলাদের জন্য একটি তালিকা তৈরি করে। একাধিক মৃত ব্যক্তির নাম দেয়া হয়। এসব মৃত মহিলাকে জীবিত দেখিয়ে চাল উত্তোলন করে আসছে। বিষয়টি প্রকাশিত হলে তোলপাড় শুরু হয়েছে সর্বত্র। ওয়ার্ড নম্বর-০১, ভি.জি.ডি কার্ড নম্বর-১০, নাজমা, স্বামী-হারুন অর রশিদ, গ্রামÑ বালিয়া মারী বেপারী পাড়া, ওয়ার্ড নম্বর-০৯, কার্ড নম্বর-১২৫৩, মনোয়ারা, স্বামী-আবেদ আলী, গ্রাম-করাতিপাড়া, কার্ডধারী মহিলাদ্বয় মৃত্যু বরণ করলেও তাদের জীবিত দেখিয়ে অদ্যাবধি সরকারী চাল উত্তোলন করে মৃতদের নামে বিতরণ দেখানো হচ্ছে। শুধু মৃত ব্যক্তি নয় অনেক ব্যক্তি রয়েছে তারা জানে না তাদের নামে ভিজিডি কার্ড রয়েছে। তারা কোনদিন ভি.জি.ডি কার্ডের উত্তোলিত চাল বিতরণে মাস্টার রোলে টিপ সহি/ স্বাক্ষর করেননি বলে জানা গেছে। এরা হচ্ছে ওয়ার্ড নম্বর- ০৬, কার্র্ড নম্বর-৮৮৩, ফেরদৌসী, স্বামী-সাত্তার, গ্রামঃ শিবেরডাঙ্গী, ভি.জি.ডি কার্ডধারী সে জানে না, তার নামে ভি.জি.ডি. কার্ড সৃজন হয়েছে। এ ছাড়া ওয়ার্ড নম্বর-০২, ভি.জি.ডি কার্ড নম্বর-৩১৫, সান্ত, স্বামী-আহম্মদ আলী, গ্রাম-জালচিরাপাড়া, ওয়ার্ড নম্বর- ০৭, কার্ড নম্বর -১০৩৮, মর্জিনা, স্বামী -শুকুর, গ্রাম-টাঙ্গালিয়াপাড়া/বদরপুর, কার্ডধারীদের নাম ও ঠিকানা ভুয়া, বেনামী। রাজীবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরে শাহী ফুল জানান, মৃত ব্যক্তির ভিজিডি কার্ড সঙ্গে সঙ্গে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এছাড়া সরকারী দলের লোকেরা যদি জোর করে আমার কাছে কিছু কার্ড নিয়ে নামে-বেনামে দেয় এখানে আমি নিরুপায়। তিনি আরও বলেন, আমার বিরুদ্ধে আব্দুস সাত্তার জিহাদী যে অভিযোগ দায়ের করেছে তা ডাহা মিথ্যা । জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে তদন্ত হলে এর সত্যতা বেরিয়ে আসবে। দীর্ঘদিন ধরে আমার চেয়ারম্যান পদে দায়িত্ব কালীন সময়ে আব্দুস সাত্তার জিহাদী আমাকে নানাভাবে হয়রানি করে আসছে। সম্প্রতি এই ঘটনাটি এরই ধারাবাহিক অংশ। বরিশালে তালিকা তৈরিতে অনিয়ম স্টাফ রিপোর্টার বরিশাল থেকে জানান, উৎকোচ দাবি, পছন্দ মতো ব্যক্তিদের তালিকায় অন্তর্ভুক্তি, প্রকৃত সুবিধাভোগীদের তালিকা থেকে বাদ দেয়াসহ জেলার দ্বীপ উপজেলা মেহেন্দিগঞ্জের ১৩টি ইউনিয়নের দুস্থ ও অসহায় মহিলাদের জন্য সরকারীভাবে বরাদ্দকৃত ভিজিডি কার্ডের নামের তালিকা তৈরিতে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, অতিদরিদ্র পরিবারের প্রধান যার অন্যকোন আয়ের উৎস নেই এবং যাদের জমি ০.১৫ শতকের নিচে তারাই কেবল ভিজিডি কার্ড পাওয়ার তালিকায় অন্তর্ভুক্তি হবেন। এছাড়াও ইউনিয়ন ভিজিডি উপকারভোগীদের বাছাই কমিটি তালিকা তৈরির বিধান রয়েছেন। সরকারের এসব নির্দেশ এ উপজেলায় কোনটিই বাস্তবায়িত হচ্ছে না। ইউপি সদস্য ফাতেমা বেগম বলেন, চেয়ারম্যান আমাদের নাম দিতে বলার পর আমরা নামের তালিকা দিয়েছি। গ্রামবাসীর সামনে ভিজিডি কার্ডের বাছাই করার নিয়ম আছে কিনা সে বিষয়টি আমার জানা নেই। উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার অফিস সূত্রে জানা গেছে, ২০১৪-১৫ অর্থবছরের জন্য উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নে ৩ হাজার ২১৯টি ভিজিডি কার্ড বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। সূত্রে আরও জানা গেছে, গত ১০ নবেম্বরের মধ্যে ভিজিডি কার্ড বিতরণের কথা থাকলেও ইউপি চেয়ারম্যানরা সময়মতো তালিকা দিতে না পারায় তা বিতরণ করা সম্ভব হয়নি।
×