ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

রাজাপাকসের সঙ্গীরা ছেড়ে গেছেন

প্রকাশিত: ০৪:২৩, ২৮ ডিসেম্বর ২০১৪

রাজাপাকসের সঙ্গীরা ছেড়ে গেছেন

নিজের ঘনিষ্ঠজনদের কাছ থেকে অপ্রত্যাশিতভাবে বিশ্বাসঘাতকতার শিকার হয়েছেন শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট মাহিন্দ রাজাপাকসে। আগামী মাসের ৮ তারিখ যখন দেশটিতে পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হতে যাচ্ছে তার আগে ঘনিষ্ঠজনেরা একে একে রাজাপাকসেকে ত্যাগ করতে শুরু করেছেন। রাজাপাকসের পুনর্নির্বাচন ঠেকাতে যা যা করা দরকার তার এক সময়কার ঘনিষ্ঠজনেরা এখন তাই করছেন। রাজাপাকসের দীর্ঘদিনের আস্থাভাজন স্বাস্থ্যমন্ত্রী কিছুদিন আগে দল ত্যাগ করে এখন তার প্রতিপক্ষ হিসাবে নির্বাচনী প্রচারাভিযান চালাচ্ছেন। কয়েকদিন আগে রাজাপাকসে ওই পদে একজন দক্ষলোককে নিয়োগ দিয়েছেন। নতুন স্বাস্থ্যমন্ত্রী এখন তার স্বপক্ষত্যাগী তার পূর্বসূরির বিরুদ্ধে আক্রমণে শাণ দিতে শুরু করেছেন। নয়া স্বাস্থ্যমন্ত্রী তার পূর্বসূরি সম্পর্কে মন্তব্য করেছেন যে তিনি এমন এক লোক যিনি কোন ব্যক্তির বাড়িতে নিমন্ত্রণ খেয়ে পরদিন তার মেজবানের পিঠে ছুরিকাঘাত করে দিতে পারেন। রাজাপাকসে এখন দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আছেন। সবকিছু ঠিকমতো থাকলে রাজাপাকসের পুনর্নির্বাচিত হতে কোন সমস্যা ছিল না। তিনি নির্বাচনের ব্যাপারে যথেষ্ট আস্থা পোষণ করেন। এ কারণে নির্ধারিত সময়ের দু’বছর আগেই এবারের নির্বাচনটি দিচ্ছেন। সমস্যা হলো নিজ দলের পক্ষত্যাগীদের নিয়ে। বিষয়টি তাকে যথেষ্ট ভাবিয়ে তুলেছে। এ কারণে নির্বাচনী প্রচারাভিযান চালাতে গিয়ে রাজাপাকসে বিভিন্ন বিষয়ে ছাড় দিয়ে অনেক কিছু প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন। যেমন পুনর্নির্বাচিত হলে তিনি সাংবিধানিক সংস্কারসহ তার সরকারের বিরুদ্ধে ওঠা যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ তদন্ত করা হবে ইত্যাদি। শ্রীলঙ্কার উত্তরাঞ্চলে একটি স্বাধীন দেশ প্রতিষ্ঠার জন্য তামিল বিদ্রোহীরা প্রায় তিন দশক ধরে যে সশস্ত্র লড়াই চালিয়েছিল, রাজাপাকসের সরকার সামরিক শক্তি প্রয়োগ করে তার পরিসমাপ্তি ঘটায়। অভিযোগ রয়েছে বিদ্রোহ দমনের শেষ পর্যায়ে সরকারী বাহিনীর হাতে ব্যাপকহারে মানবাধিকার লঙ্ঘন ঘটে। নির্বাচিত হলে রাজাপাকসে তৃতীয় মেয়াদে ফের ছয় বছর দেশ শাসন করার সুযোগ পাবেন। বিরোধী মহল থেকে রাজাপাকসের পক্ষত্যাগীদের ‘নরম প্রকৃতির একনায়ক’ হিসাবে দেখা হচ্ছে। স্বপক্ষত্যাগীর সাধারণ ভোটারদের বোঝানোর চেষ্টা করছেন যে, রাজাপাকসের অধীনে তারা কতটা হেনস্তার শিকার হয়েছিলেন। নিজের পদটি ধরে রাখার জন্য শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্টের একাকী লড়াইয়ের প্রতি বাইরে থেকেও দৃষ্টি রাখা হচ্ছে। আগামীতে দ্বীপদেশটির কে হাল ধরছেন তার প্রতি কৌতূহল রয়েছে ভারত, যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের। কারণ ভারত মহাসাগরের বিস্তৃত পরিসর সামরিক প্রভাব বিস্তারের জন্য দেশটির অবস্থান একটি আঞ্চলিক প্রবেশদ্বারের মতো কাজ করছে। পররাষ্ট্রনীতির ক্ষেত্রে রাজাপাকসে ছিলেন চীনমুখী। বিষয়টি নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই অস্বস্তিতে ছিল ভারত। -ইন্টারন্যাশনাল নিউইয়র্ক টাইমস। নেপালে বিতর্কিত নাগরিক বিল নিয়ে তোলপাড় নেপালের এক সিঙ্গেল মাদার দীপ্তি গুরুং তাঁর কিশোরী দুই মেয়ের নিজ দেশের নাগরিকত্বের জন্য কয়েক বছর ধরে চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছেন। তাঁর দুই সন্তান নেপালে জন্মগ্রহণ করা সত্ত্বেও তাদের বাবার অনুপস্থিতির কারণে নাগরিকত্বের মতো বৈধ অধিকার নিশ্চিত করতে ৪০ বছর বয়সী দীপ্তিকে লড়াই করতে হচ্ছে। ওই দুই মেয়ে যখন অনেক ছোট ছিল তখন তাদের বাবা তাদের ছেড়ে চলে যায়। খবর এএফপির। আইন অন্তত এখন তার পক্ষে। কিন্তু নেপালের পার্লামেন্ট নতুন এক সংবিধানে সকল সিঙ্গেল মা-বাবার নাগরিকত্ব তাদের সন্তানের কাছে ন্যস্ত বাতিলের প্রস্তাব করেছে। যা মানবাধিকার কর্মীদের ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে। গুরুং বলেছে, এটা অনেকটা নিজ দেশে শরণার্থী হয়ে থাকার মতো। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষ বাবার তথ্যের জন্য নারীদের জিজ্ঞাসাবাদ, নির্যাতন ও হয়রানি করে থাকে। কিন্তু যখন কোন সিঙ্গেল বাবা তাঁর সন্তানের নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করেন তখন কোন প্রশ্ন করা হয় না। মানবাধিকার কর্মীরা বলেছেন, এই পদক্ষেপের ফলে ১০ লাখ শিশু রাষ্ট্রবিহীন অবস্থায় পতিত হতে পারে এবং আনুপাতিক হারে নারীদের ওপর এর প্রভাব বেশি পড়বে। নেপালের সিঙ্গেল প্যারেন্টসের মধ্যে নারীর সংখ্যাই বেশি। নতুন খসড়ায় বলা হয়েছে, সন্তানের নাগরিকত্বের জন্য মা-বাবা উভয়কে অবশ্যই নেপালী হতে হবে। দেশটিতে ড্রাইভিং লাইসেন্স পেতে, ব্যাংকে এ্যাকাউন্ট করাসহ সবকিছুর জন্য নেপালের নাগরিকত্ব থাকতে হবে। এই নতুন আইন ২০০৬ সালে করা আইনকে রদ করে দেবে। এই আইনে আছে, মা-বাবার একজন নেপালী হলেই তাঁদের সন্তান নাগরিকত্ব পাবে।
×