ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

পদ্মার চর বনায়নের গাছ কেটে সাবাড়

প্রকাশিত: ০৫:০৩, ২৭ ডিসেম্বর ২০১৪

পদ্মার চর বনায়নের গাছ কেটে সাবাড়

স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী ॥ গোদাগাড়ী উপজেলার ফরাদপুর এলাকার পদ্মার বিস্তীর্ণ চর বনায়নের গাছ দিনে দিনে উজাড় হয়ে যাচ্ছে। বন বিভাগের গাফিলতি ও গাছ রক্ষায় নিযুক্ত পাহারাদের যোগসাজসে সরকারী বন থেকে দুর্বৃত্তরা গাছ কেটে সাবাড় করছে। তবে বনবিভাগ বলছে, বিষয়টি তাঁরা খতিয়ে দেখবে। প্রয়োজনে বন রক্ষায় আরও জনবল দিয়ে গাছের সংরক্ষণ নিশ্চিত করা হবে। জানা যায়, এলাকার ৯০ হেক্টর জমিতে বন বিভাগের ব্যবস্থাপনায় ৩০০ উপকারভোগী নিয়ে ১ লাখ ৩২ হাজার বৃক্ষ রোপণ করা হয় ১০১০-১১ অর্থবছরে। বর্তমানে গাছগুলো পরিপূর্ণ হয়ে বিশাল বন সৃষ্টি হয়েছে। এখন এই বনে দৃষ্টি পড়েছে দুর্বৃত্তদের। সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও দারিদ্র্য বিমোচন প্রকল্পের আওতায় রাজশাহী বিভাগীয় সামাজিক বন বিভাগ ২০১০-১১ অর্থবছরে এক কোটি ৫ লাখ ৮৪ হাজার টাকা ব্যয়ে গোদাগাড়ীর প্রেমতলী-ফরাদপুর এলাকায় পদ্মার চরে আকাশমনি, শিশু, শিমুল, জারুল, জামরুল, জাম, অর্জুন, চিকবাশি, বাবলা, খয়ের ও বরইসহ বিভিন্ন প্রজাতির এক লাখ ৩২ হাজার গাছ রোপণ করে। সম্প্রতি ওই বনে সরেজমিনে ঘুরে অসংখ্য গাছ কাটার চিহ্ন পাওয়া যায়। এসব গাছ আকারে খুব বেশি বড় না হলেও পুরো গাছ ও গাছের ডালপালা কেটে নিয়ে যাচ্ছেন স্থানীয় দুর্বৃত্তরা। অভিযোগ রয়েছে, বন বিভাগের পাহারাদারদের ম্যানেজ করেই এসব গাছ কাটা হচ্ছে। শুধু তাই নয়, মাথাপিছু দুই লিটার করে দুধের বিনিময়ে সংরক্ষিত এই বনে রাখালদের গরু-মহিষ চরাতে অনুমতি দেয়ার অভিযোগ রয়েছে পাহারাদারদের বিরুদ্ধে। ৯০ হেক্টর আয়তনের এই বনটির বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, কিছু কিছু গাছের গোড়া থেকে কেটে নেয়া হয়েছে। কোনটির আবার কান্ড থেকে কাটা হয়েছে। আবার কিছু কিছু গাছের গোড়ায় বসানো দা-কুড়ালের কোপ। এলাকার বাসিন্দারা জানান, এ বনের গাছ প্রতিদিন সমানে কাটা হচ্ছে। যে যার মতো গাছ কেটে সাবাড় করছে। এসব গাছ কেটে বিক্রি করা হচ্ছে বিভিন্ন স মিলে। এছাড়া এলাকার ইটভাঁটিতেও বিক্রি করা হচ্ছে এসব গাছ। উপজেলা বন কর্মকর্তা মইনুদ্দিন বলেন, মাত্র চারজন পাহারাদার দিয়ে বিশাল আয়তনের এই বনটি দেখাশোনা করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। তবু তাঁরা বনের গাছগুলো সংরক্ষণের চেষ্টা করছেন। তিনি আরও বলেন, বনটি দেখাশোনার দায়িত্ব স্থানীয় উপকারভোগীদের। কিন্তু তাঁদের অসহযোগিতার কারণে বন বিভাগকে বন সংরক্ষণে বেগ পেতে হচ্ছে। রাজশাহী বিভাগীয় বন কর্মকর্তা অজিত কুমার রুদ্র বলেন, বনের গাছ কাটার বিষয়টি তিনি জানেন না। তবে বনের একটি গাছও কাটা পড়লে সেখানে আরও বেশি পাহারাদার নিয়োগ দিয়ে বনটি সংরক্ষণ করা হবে বলেও জানান তিনি।
×