ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

প্রতিদিন প্রায় সাত শ’ একর কৃষিজমি অকৃষি খাতে যাচ্ছে

প্রকাশিত: ০৪:৪২, ২৫ ডিসেম্বর ২০১৪

প্রতিদিন প্রায় সাত শ’ একর কৃষিজমি অকৃষি খাতে যাচ্ছে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ প্রতিদিন প্রায় ৭০০ একর কৃষিজমি যাচ্ছে অকৃষি খাতে। তামাক চাষের কারণে প্রতিদিন ৯ হাজার একর কৃষিজমির উর্বরতা নষ্ট হচ্ছে। গত ১১ বছরে কুষ্টিয়া, মানিকগঞ্জ ও কক্সবাজার জেলার কৃষিজমি সবচেয়ে বেশি বাণিজ্যিকীকরণ হয়েছে। বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফের পরামর্শে সরকার কৃষি জমির বাণিজ্যিক ব্যবহারকে উৎসাহিত করছে। যা মোটেও সঠিক নয়। এতে ভূমিহীনতা, নিস্বতা ও ভিক্ষাবৃত্তি বাড়বে। আগামী ১০ বছরের মধ্যে দেশের খাদ্য নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়বে। আয় ও সম্পদ বৈষম্য বাড়বে সমানতালে। বিরূপ প্রভাব পড়বে পরিবেশের ওপর। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যে কোন মূল্যে কৃষিজমি সুরক্ষা করতে হবে। এজন্য সবার আগে ভূমি ব্যবহার আইন করার বিকল্প নেই। সেই সঙ্গে ভূমি দখলের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক প্রভাব ও দখলদারদের সঙ্গে সরকারের আত্মীকরণ নীতি ভাঙতে হবে। কৃষিজমি ও জলা দখল বন্ধের এখনই সময়। আইন করে চিংড়ি ঘের রোধ করতে হবে। তামাক চাষ বন্ধে সরকারকে কঠোর হওয়ারও পরামর্শ তাদের। বুধবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ‘বাণিজ্যিক ব্যবহারে কৃষিজমি হ্রাস এবং ক্ষুদ্র চাষী ও গ্রামীণ দরিদ্র প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর খাদ্য নিরাপত্তা শীর্ষক সেমিনারে এসব তথ্য উঠে আসে। বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা এএলআরডি এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। এতে রাজনীতিবিদ, সাংসদ, উন্নয়ন ও মানবাধিকার কর্মীসহ বিভিন্ন সেক্টরের প্রতিনিধিরা অংশ নেন। বিভিন্ন এলাকায় জমি দখলের শিকার লোকজন সেমিনারে তাদের অভিজ্ঞতা ও ভূমি দস্যুদের তা-ব চিত্র তুলে ধরেন। সেমিনারে মূল প্রবন্ধে বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. আবুল বারকাত বলেন, জমি সুরক্ষার দিক থেকে বাংলাদেশে সবচেয়ে খারাপ সময় যাচ্ছে। কৃষিজমি বাণিজ্যিকীকরণে এই সরকার ওস্তাদ। যা পুরোপুরি ভুল সিদ্ধান্ত। প্রবন্ধে বলা হয়-কৃষিজমি ব্যবহারে রাষ্ট্রকে ও তাদের বিশেষজ্ঞ থেকে শুরু করে বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা ও চিন্তাশীল ব্যক্তিরা ভুল সিদ্ধান্ত দিচ্ছেন। তারা কৃষিজমি বাণিজ্যিকীকরণের বিষয়টিকে আশির্বাদ হিসেবে সরকারকে দেখানোর চেষ্টা করছে। যা মোটেও বাস্তবসম্মত নয়। তিনি বলেন, জরিপ করা ১১ জেলার মধ্যে রাজশাহী, নাটোর, রাঙ্গামাটি ও হবিগঞ্জ এই চার জেলার জমি মাঝারি মানের বাণিজ্যিককরণ হচ্ছে। বরিশাল, নারায়ণগঞ্জ ও নেত্রকোনায় কম। প্রতিদিন দুই হাজার বিঘা অর্থাৎ ৬৬১ একর কৃষিজমি অকৃষি খাতে যাচ্ছে। ৯৬ বিঘা অর্থাৎ ৩১ একর জলা যাচ্ছে অকৃষি খাতে। এর মধ্যে বাড়ি নির্মাণের জন্য ৮০ ভাগ জমি লস হচ্ছে। অন্যান্য খাতে যাচ্ছে ২০ ভাগ।
×