ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

পেশোয়ার হত্যাকাণ্ডে বেঁচে যাওয়া শিক্ষার্থীর দৃঢ় প্রত্যয়

প্রতিশোধ নিতে আর্মি অফিসার হতে চাই

প্রকাশিত: ০৫:১৫, ২০ ডিসেম্বর ২০১৪

প্রতিশোধ নিতে  আর্মি অফিসার  হতে চাই

পাকিস্তানের পেশোয়ারে তালেবানের সন্ত্রাসী হামলায় নিহত সহপাঠীদের স্মরণ করল স্কুলটির শোকাহত শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার আয়োজিত শোকসভায় নিহত বন্ধু ও সহপাঠীদের স্মরণ করে তারা। এ সময় যত দ্রুত সম্ভব ক্লাসে ফিরে আসার প্রত্যয়ও ব্যক্ত করে এসব শোকাহত শিক্ষার্থী। খবর এএফপির। মঙ্গলবার পেশোয়ারে আর্মি পাবলিক স্কুলে একদল তালেবান বন্দুকধারীর গুলিতে ১৪৮ জন নিহত হয়। যাঁদের মধ্যে ১৩২ জন শিশু। দেশটিতে সন্ত্রাসী হামলায় এত বেশি রক্তক্ষয়ী কখনও ঘটেনি। বৃহস্পতিবার ইসলামাবাদে স্কুলগুলোর নিরাপত্তা জোরদার ও স্কুলবাসকে লক্ষ্য করে সম্ভাব্য বোমা হামলার আশঙ্কায় অতিরিক্ত নিরাপত্তা নেয়া হয়। পাকিস্তানে এ ঘটনায় আহূত তিন দিনের রাষ্ট্রীয় শোক শেষ হয়েছে। পেশোয়ারের স্কুল গেটে হুমকি উপেক্ষা করে শোক অনুষ্ঠানে ছাত্রছাত্রীরা উপস্থিত হয় এবং সেখানে তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তানের (টিটিপি) বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করে। জঙ্গী গোষ্ঠীটি গত সাত বছরে হাজার হাজার লোককে হত্যা করেছে। আট ঘণ্টার হত্যাযজ্ঞে স্কুলটির অধিকাংশই ধ্বংস হয়ে গেছে। দেয়ালে বুলেট ও আত্মঘাতী বিস্ফোরণের দাগ এবং দেয়াল ও মেঝেতে রক্তের দাগে ভরে গেছে। তবে কর্মকর্তারা হামলার তিন সপ্তাহেরও কম সময়ের মধ্যে স্কুলটি পরিষ্কার ও পুনর্নির্মাণের ব্যবস্থা করে ৪ জানুয়ারি স্কুলটি আবার খুলে দেয়ার অঙ্গীকার করেন। স্কুলের বাইরে শত শত ছাত্রছাত্রী ও তাদের মা-বাবারা জড়ো হয়ে মোমবাতি জ্বালিয়ে এবং ফুল দিয়ে নিহতদের স্মরণ করে। স্কুলের এক ছাত্র মোহাম্মদ বিলাল (১৪) এএফপিকে জানান, তিনি তার মা-বাবাকে ভয় না পেতে বলেছেন। তাদের বাড়িতে থাকতে পরামর্শ দিয়েছেন এবং তিনি দ্রুতই স্কুল থেকে বাড়ি ফিরে যাবেন বলে তাদের জানিয়েছেন। বিলাল বলেন, আমি স্কুল খুলে দেয়ার অপেক্ষায় আছি। কারণ আমি সন্ত্রাসীদের ভয় পাই না। আমি জানি কিভাবে তাদের বার্তা দিতে হয়। অপর শিক্ষার্থী মোয়াকাল জান (১৩) যিনি তার নয় বন্ধুকে হারিয়েছেন। তিনি বলেন, আমি স্কুলে ফিরে আসতে ভয় পাই না। আমি এই স্কুলে পড়াশুনা করি এবং আমি এখানে তা চালিয়ে যাব। আমি এখানে ফিরে আসব যখন তা আবার খুলবে। জীবন এবং মৃত্যু সবই আল্লাহর হাতে। জান বলেন, তিনি মঙ্গলবারের হত্যাযজ্ঞের জন্য তালেবানদের শাস্তি দিতে চান। আমি চাই একজন আর্মি অফিসার হতে। কারণ আমি আমার বন্ধুদের ও স্কুলের অন্যদের হত্যার প্রতিশোধ নিতে চাই। স্কুলের অপর এক শিক্ষার্থী আবু বকর (১৮) বলেন, আমি আমার ছেলেবেলা থেকেই সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে চাই। তবে এখন আমি পুরোপুরি সেনাবাহিনীতে যোগদিতে সংকল্পবদ্ধ। আমি আমার বন্ধুদের হত্যার প্রতিশোধ নিতে চাই। আমি সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে চাই। ফেডারেল ডিরেক্টরেট অব এডুকেশনের মুখপাত্র মোহাম্মদ তাহির ভাট্টি জানান, রাজধানী ইসলামাবাদে চার শ’র বেশি স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের বহনকারী বাসে সম্ভাব্য বোমা হামলার ব্যাপারে সতর্ক করা হয়েছে।
×