স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ বিশ্বকাপ ক্রিকেট শুরু হতে এখনও ৫৭ দিন বাকি। আগামী বছরের ১৪ ফেব্রুয়ারি শুরু হবে বিশ্বকাপ। এ বিশ্বকাপে বাংলাদেশের কোন ১৫ ক্রিকেটার চূড়ান্ত দলে থাকার সুযোগ পাবেন? প্রশ্নটি সবার মুখে মুখেই। সব জল্পনা-কল্পনা চলছে দল নিয়ে। প্রশ্নটি আসতেই কয়েকটি নাম নিশ্চিতভাবে সবার মনেই বিড়বিড় করছে। ইনজুরিগ্রস্ত না হলে মাশরাফি বিন মর্তুজা, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহীম, তামিম ইকবাল, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ থাকছেনই। এর বাইরে এনামুল হক বিজয়, মুমিনুল হক, সাব্বির রহমান রুম্মন, সৌম্য সরকার, রুবেল হোসেন, আল আমিন হোসেন, তাইজুল ইসলামও থাকছেন। মিলে গেল ১২ ক্রিকেটার। তাহলে আর তিনজন কারা? এ প্রশ্নের উত্তরই এখন খোঁজা হচ্ছে।
জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহেই চূড়ান্ত দল ঘোষণা করতে হবে। হাতে আছে ২০ দিন। এ দিনগুলোতেই সেরা ১৫ জনকে বেছে নিতে হবে নির্বাচকদের। সেই ১৫ জনের মধ্যে মোটামুটি জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষে খেলা ১২ জনকে মিলেই যাচ্ছে। কিন্তু তিনজনকে নিয়েই নির্বাচকদের একটু চিন্তা থাকছে। সেই তিনজন কে?
ওপেনিংয়ে তামিম ইকবালের সঙ্গে এনামুল হক বিজয়কে রাখা হচ্ছে। এর বাইরেও একজনকে লাগবে। যদি কেউ ইনজুরিতে পড়ে যান, তাহলে খেলতে হবে। সেই একজন ইমরুল কায়েস না শামসুর রহমান শুভ? এ নিয়ে আছে দ্বিধা। তবে খুলনায় জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষে টেস্ট খেলার পর আর জাতীয় দলে না খেলা শামসুরের কপাল খারাপই থাকার সম্ভাবনা বেশি। লীগেও যে আহামরি কোন নৈপুণ্য নেই। আর ইমরুলেরও একই দশা। তবে চট্টগ্রাম টেস্টে ইমরুলের শতক এ ওপেনারকে একটু এগিয়েই রাখছে। আবার তামিমের সঙ্গে বোঝাপড়াও ভাল। সব মিলিয়ে ১৫ সদস্যের দলে ইমরুলের সুযোগ হয়ে যেতে পারে। ১৩ নম্বর ক্রিকেটারটি ইমরুলই হতে পারেন। মিডলঅর্ডারে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, মুমিনুল ও সাব্বির থাকছেন বলাই চলে। তিনজনই জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষে সিরিজে খেলেছেন। ভালও করেছেন। স্পিন অলরাউন্ডার কোঠায় সাকিব আল হাসান থাকছেনই। এর সঙ্গে পেস অলরাউন্ডার কোঠায় সৌম্য সরকারেরও থাকা নিশ্চিতই।
উইকেটরক্ষক কাম ব্যাটসম্যান হিসেবে মুশফিকুর রহীমের বিকল্প নেই। সেই সঙ্গে বিজয় তো আছেনই। পেসার কোঠায় মাশরাফির সঙ্গে আল আমিন হোসেনও নিশ্চিত। রুবেল হোসেনও এ কোঠায় নিশ্চিত। তবে অভিনেত্রী নাজনীন আক্তার হ্যাপি কা-ে তার অবস্থান নড়বড়ে হয়ে গেলে এ পেসারের স্থান হবে না। তখন রুবেলের স্থানে তাসকিন আহমেদের সুযোগ ধরা দিতে পারে। যেহেতু খেলা হবে অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডের মতো বাউন্সি উইকেটে। পেসারদের আধিক্যও থাকবে বেশি। তাই শফিউল ইসলাম অথবা আবুল হাসান রাজুর মধ্যে যে কোন একজন পেসার সুযোগ পেয়ে যেতে পারেন। আর রুবেল থাকলেও তাসকিনের সুযোগও থাকবে। তাসকিন, শফিউল, রাজুর মধ্যে যে কোন একজন তখন ১৪ নম্বর ক্রিকেটারটি হবেন। ১৫ নম্বর ক্রিকেটারটি তাহলে হবেন কে? স্পিনার কোঠায় তাইজুল ইসলাম তো থাকবেনই। এর সঙ্গে জুবায়ের হোসেনও থাকছেন। শেষপর্যন্ত যদি নাসির হোসেনের নৈপুণ্য ঢাকা লীগের সুপারলীগে দুর্দান্ত কিছু হয়ে যায়, নাসিরকে একটি সুযোগ দেয়া হতে পারে। জুবায়েরের পরিবর্তেই তাহলে বিবেচনায় থাকতে পারেন নাসির। অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডের কন্ডিশনে স্পিনার সংখ্যা বেশি থাকারও যে খুব বেশি দরকার নেই।
বিশ্বকাপের প্রাথমিক স্কোয়াডে ৩০ ক্রিকেটারের সুযোগ হয়েছে। সেখান থেকে ১৫ ক্রিকেটার চূড়ান্ত দলে সুযোগ পাওয়ার আশায় আছেন। কিন্তু আব্দুর রাজ্জাক, নাঈম ইসলাম, জিয়াউর রহমান, ইলিয়াস সানি, আরাফাত সানির মতো ক্রিকেটারদের কপাল হয়ত পুড়বেই। লীগে এখন নাঈম, জিয়ার বিশেষ কিছু করে দেখানোর সুযোগ থাকলেও বিশ্বকাপ দলে থাকাটা তাদের জন্য কঠিনই।
বিশ্বকাপ দল নিয়ে প্রধান নির্বাচক ফারুক আহমেদই যেমন আগেই বলেছেন, ‘দল নির্বাচন সব সময়ই কঠিন। আমরা যখন একটা ক্রিকেটারদের দলে নেই তখন তার চার-পাঁচ মাসের পারফর্মেন্স বিবেচনা করে দলে নেয়া হয়। শুধু ঘরোয়া ক্রিকেটে খেললে হবে না। অন্য লেভেলেও কতঠুকু ভাল করতে পারবে ওইটাও আমাদের বিবেচনায় থাকে। আমার মনে হয় কষ্ট হয়েছে। কিন্তু খুব বেশি সমস্যা হয়নি।’ চূড়ান্ত দল গড়ার কথা বলতে গিয়ে ফারুক জানান, ‘এখনও সময় আছে। দল করার আগে একটা পরিকল্পনা থাকে আমাদের ওই পরিকল্পনা নিশ্চয়ই আমাদের হাতে রয়েছে। পরিকল্পনা মতোই দল করব আমরা। ঢাকা লীগের ম্যাচগুলোও আমাদের বিবেচনায় আসবে। দুই-তিনজন করে ক্রিকেটার আছে যাদের নিয়ে আমরা চিন্তা করছি। ১০-১২ জন কখনও পরিবর্তন করা যায় না। আমরা যখন মূল দল করব তখন আমরা সম্ভাব্য সেরা দলই নির্বাচন করব।’