ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

যুদ্ধাপরাধীমুক্ত সমৃদ্ধ দেশ গড়ার প্রত্যয়

প্রকাশিত: ০৫:৪২, ১৭ ডিসেম্বর ২০১৪

যুদ্ধাপরাধীমুক্ত সমৃদ্ধ দেশ গড়ার প্রত্যয়

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ মুক্তিযুদ্ধে বাঙালীর বিজয় অর্জনের ৪৩তম বার্ষিকী পালন করেছে জাতি। যাঁদের রক্তের বিনিময়ে পাকিস্তানী শাসনের অবসান ঘটে স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটেছে, পুরো জাতি শ্রদ্ধা ও ভালবাসায় তাঁদের স্মরণ করেছে। খবর স্টাফ রিপোর্টার ও নিজস্ব সংবাদদাতাদের পাঠানো- চট্টগ্রাম মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় একটি অসাম্প্রদায়িক সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়বার প্রত্যয়ে মঙ্গলবার চট্টগ্রামে উদযাপিত হয়েছে মহান বিজয় দিবস। দিনভর এ উপলক্ষে ছিল সরকারী, আধা সরকারী, স্বায়ত্তশাসিত এবং রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নানা আয়োজন। দিবসের প্রথম প্রহর থেকে সারাদিন শহীদ মিনারে নামে লাখো মানুষের ঢল। ফুলে ফুলে ছেয়ে যায় শহীদ মিনার। অবনত মস্তকে সাধারণ মানুষ ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের। শপথবাক্য পাঠ করা হয় মুক্তিযুদ্ধের স্বপ্ন সোনার বাংলাদেশ গড়ার। চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিন, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি নুরুল আলম চৌধুরী, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মোসলেম উদ্দিন আহমেদ, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপি সভাপতি আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক ডাঃ শাহাদাত হোসেন শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। রাতেই লোকে লোকারণ্য হয়ে যায় শহীদ মিনার এলাকা। মুক্তিযুদ্ধের বিজয়মেলা পরিষদের উদ্যোগে এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর নেতৃত্বে বের হয় বিজয় র‌্যালি। র‌্যালিটি বিজয় শিখার পাদদেশ থেকে বেরিয়ে নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। অপরদিকে, বিএনপির ব্যানারে বের করা হয় প্রতিবাদী বিজয় র‌্যালি। এতেও অংশগ্রহণ করেন বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনগুলোর হাজার হাজার নেতাকর্মী। বিকেলে কর্পোরেশনের উদ্যোগে নগরীর থিয়েটার ইনস্টিটিউটে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা দেয়া হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন মেয়র এম মনজুর আলম। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে বিজয় দিবস উপলক্ষে বিশেষ কর্মসূচী পালিত হয়। আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন চবি উপাচার্য প্রফেসর আনোয়ারুল আজিম আরিফ, উপউপাচার্য ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী এবং বিভিন্ন অনুষদের প্রধান ও শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দ। চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব ও চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দও রাত ১২টার পর শহীদ মিনারে পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন প্রেসক্লাব সভাপতি আলী আব্বাস, সিনিয়র সহসভাপতি রাশেদ রউফ, সাধারণ সম্পাদক মহসিন চৌধুরী, চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি এজাজ ইউসুফী, সাধারণ সম্পাদক হাসান ফেরদৌসহ নেতৃবৃন্দ। দিনাজপুর বিভিন্ন সংগঠন ও প্রতিষ্ঠান নানা কর্মসূচীর মাধ্যমে মঙ্গলবার বিজয় দিবস পালন করেন। বিজয় দিবসের প্রথম প্রহরে দিনাজপুরের জেলা প্রশাসক কার্যালয় চত্বরের স্মৃতিসৌধে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করেন জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম। এদিকে হাজী দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (হাবিপ্রবি) এর ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর মোঃ রুহুল আমিনের নেতৃত্বে শিক্ষক, কর্মকর্তা, ছাত্রছাত্রী, কর্মচারী ও হাবিপ্রবি স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা এক বিশাল র‌্যালিতে অংশ নিয়ে শহীদ বেদীতে পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন। নীলফামারী দিবসের প্রথম প্রহরে ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে কর্মসূচীর আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। রাত ১২ টা এক মিনিটে স্থানীয় স্বাধীনতা স্মৃতি অম্লান পাদদেশে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ,জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ,জেলা আওয়ামী লীগ,জেলা বিএনপি,জেলা জাতীয় পাটিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল সংগঠন, সরকারী বেসরকারী সংস্থা, ক্লাব প্রতিষ্ঠান পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করেন। সিলেট দিবসের প্রথম প্রহরে সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ঢল নামে জনতার। সকলের কণ্ঠে উচ্চারিত হয় যুদ্ধাপরাধীদের চলমান বিচার সম্পন্ন করার দাবি। পুষ্পার্ঘ্য হাতে সারিবদ্ধভাবে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠনের নেতাকর্মীসহ সাধারণ মানুষ। রংপুর রংপুর বিভাগীয় নগরীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বিজয় দিবসের প্রথম প্রহরে রাত ১২ টা ১ মিনিটে সিটি করপোরেশনের মেয়র শরফুদ্দিন আহমেদ ঝন্টু প্রথম পুষ্পাস্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে দিবসটি সূচনা করেন। নওগাঁ দিবসটি পালন উপলক্ষে জেলা প্রশাসন, অগ্রণী ব্যাংক লিঃ নওগাঁ অঞ্চল, নওগাঁ সরকারী কলেজ, আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন বিস্তারিত কর্মসূচী গ্রহণ করে। এদিন সকাল ৯টায় রানীনগর পাইলট উচ্চবিদ্যালয় মাঠে মহান বিজয় দিবস উদযাপন অনুষ্ঠানের শুভ উদ্বোধন করেন নওগাঁ-৬ (রানীনগর-আত্রাই) আসনের এমপি মোঃ ইরাফিল আলম। সকালে ধামইরহাট এম এম ডিগ্রী কলেজ মাঠে ডিসপ্লে ও কুচকাওয়াজ কর্মসূচী উদ্বোধন করেন জাতীয় সংসদের হুইপ মোঃ শহীদুজ্জামান সরকার বাবলু এমপি। খুলনা গল্লামারী স্বাধীনতা স্মৃতিসৌধে পুষ্পমাল্য অর্পণ, কুচকাওয়াজ, বিজয় র‌্যালি, অলোচনা সভা, মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা, শিশু চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ বিভিন্ন কর্মসূচী আয়োজনের মধ্য দিয়ে খুলনায় মঙ্গলবার মহান বিজয় দিবস উদযাপিত হয়েছে। দিবসের প্রথম প্রহরে রাত ১২টা ১ মিনিটে গল গল্লামারী স্বাধীনতা সৌধে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, খুলনা খুলনা সিটি কর্পোরেশন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট), খুলনা বিভাগীয় প্রশাসন, জেলা প্রশাসন, রেঞ্জ পুলিশ, খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ, জেলা পুলিশ, খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, খুলনা ওয়াসা, আওয়ামী লীগ, বিএনপি, ওযার্কার্স পার্টি, জাসদ, সিপিবি, জাতীয় পার্টি, বিভাগীয় প্রেসক্লাব ফেডারেশন, খুলনা প্রেসক্লাব, খুলনা সাংবাদিক ইউনিয়ন, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট, উদীচী, পূজা উদযাপন পরিষদ, বিএমএ, রূপান্তরসহ বিভিন্ন সংগঠন, সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করা হয়। সকাল সাড়ে আটটায় খুলনা স্টেডিয়ামে বিভাগীয় কমিশনার কর্তৃক আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। নারায়ণগঞ্জ রাত ১২টা ১ মিনিটে শহরের চাষাঢ়া বিজয় স্তম্ভের ২১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে দিবসটির শুরু হয়। তোপধ্বনি শেষে বিজয়স্তম্ভে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন শুরু হয়। সরকারের পক্ষে বিজয়স্তম্ভে প্রথম পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক আনিসুর রহমান মিঞা। এরপর পর্যায়ক্রমে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন পুলিশ সুপার ড. খন্দকার মহিদ উদ্দিন ও নারায়ণগঞ্জ-৫ (শহর-বন্দর) আসনের সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান। ফরিদপুর ৩১বার তোপধ্বনির মাধ্যমে দিবসের সূচনা হয়। ভোরে সরকারী ও বেসরকারী ভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। সদর উপজেলার কানাইপুর উচ্চবিদ্যালয় মাঠে হাজার কণ্ঠে জাতীয় সঙ্গীত গাওয়া হয়। জসীমউদ্দীন হলে সকালে মুক্তিযোদ্ধা এবং তার পরিবারের সংবর্ধনণ্ড বিকেলে আলোচনা সভা ও সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসন, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নানা কর্মসূচীর মধ্য দিয়ে সাতক্ষীরায় দিনভর মহান বিজয় দিবস পালিত হয়েছে। জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে প্রত্যুষে ৩১ বার তোপধ্বনির মধ্য দিয়ে দিবসটির শুভ সূচনা হয়। সকাল ৮টায় সাতক্ষীরা স্টেডিয়ামে পতাকা উত্তোলন ও জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন কুচকাওয়াজ ও শরীরচর্চা পরিদর্শন করা হয়। বরিশাল সূর্যোদয়ের আগে পুলিশ লাইন্সে ৩১বার তোপধ্বনির মধ্যদিয়ে অনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। প্রহরের প্রথম ভাগে রাত বারোটা এক মিনিটে শহীদ স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন বিভিন্ন সংগঠন। কুমিল্লা কুমিল্লা টাউন হলের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পরিকল্পনামন্ত্রী আহম মুস্তাফা কামাল এমপি, রেলপথমন্ত্রী মোঃ মুজিবুল হক এমপি, স্থানীয় এমপি আকম বাহাউদ্দিন, সিটি মেয়র মোঃ মনিরুল হক সাক্কু। গোপালগঞ্জ যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির রায় কার্যকর করার দাবীর মধ্য দিয়ে গোপালগঞ্জে মহান বিজয় দিবসের প্রথম প্রহরে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও জাতির সূর্য-সন্তানদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়েছে। দিবসের সূচনালগ্নে রাত ১২টা ১ মিনিটে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিবেদীতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন জেলা প্রশাসক মোঃ খলিলুর রহমান ও পুলিশ সুপার মোঃ মিজানুর রহমান। মুন্সীগঞ্জ মঙ্গলবার প্রত্যুষে ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে দিবসের শুভ সূচনার পরক্ষণেই শহরের শহীদ মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিফলকে এবং উপজেলা পর্যায়ের স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পমাল্য অর্পণ করে সর্বস্তরের মানুষ। কুচকাওয়াজ, মনোজ্ঞ ডিসপ্লে, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযোদ্ধা এবং শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যদের সংবর্ধনা, মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র প্রদর্শনী, চিত্র প্রদর্শনী, প্রীতি ক্রীড়াসহ চলছে নানা আয়োজন। এসব অনুষ্ঠানে অংশ নেন সাবেক সাংসদ বঙ্গবন্ধুর সহচর আলহাজ মোঃ মহিউদ্দিন, জাতীয় সংসদের সাবেক হুইপ অধ্যাপিকা সাগুফতা ইয়াসমিন এমিলি এমপি, সুকুমার রঞ্জন ঘোষ এমপি, এ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস এমপি, প্রেসক্লাব সভাপতি মীর নাসিরউদ্দিন উজ্জ্বলসহ বিভিন্ন সংগঠন ও ব্যক্তিবর্গ। চুয়াডাঙ্গা দিবসটি উপলক্ষে মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৬টায় শহীদ মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিসৌধে পুস্পপস্তবক অর্পণ করে জেলা প্রশাসনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন। পরে চুয়াডাঙ্গা স্টেডিয়াম মাঠে বিজয় দিবস উপলক্ষে এক কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। জেলা প্রশাসক দেলোয়ার হোসাইন প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে কুচকাওয়াজ পরিদর্শন এবং সালাম গ্রহণ করেন। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন পুলিশ সুপার রশীদুল হাসান । মাদারীপুর ভোরের আলো ফোটার সঙ্গে সঙ্গে ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে দিবসের সূচনা হয়। মাদারীপুর ‘শহীদ মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতি নামফলক’-এ ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ও বিভিন্ন সরকারী-বেসরকারী প্রতিষ্ঠানসহ সর্বস্তরের মানুষ। লক্ষ্মীপুর রাজাকার ও যুদ্ধাপরাধীমুক্ত সুখী সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকার নিয়ে জেলার মঙ্গলবার দিনব্যাপী বর্ণাঢ্য কর্মসূচীর মধ্য দিয়ে মহান বিজয় দিবস উদ্যাপিত হয়েছে। জেলা কালেক্টরেট ভবন প্রাঙ্গণে রাত ১২টা এক মিনিট বাজার সঙ্গে সঙ্গেই ৩১বার তপোধ্বনির মাধ্যমে দিবসের সূচনা করা হয়। মেহেরপুর মঙ্গলবার সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে শহীদ সামসুজ্জোহা পার্কে ৩১ বার তোপধ্বনির মধ্য দিয়ে দিবসের সূচনা করা হয়। পরে সকাল সাড়ে ৬টার সময় শহীদ স্মৃতিসৌধে জেলা প্রশাসন, জেলা আওয়ামী লীগ, অন্যান্য অঙ্গ সংগঠনসহ বিভিন্ন সামাজিক ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে পুষ্পমাল্য অর্পণ করা হয়েছে। নরসিংদী দিবসটি পালনে প্রত্যুষে মোসলেহ উদ্দীন ভুঁইয়া স্টেডিয়াম নরসিংদীতে তোপধ্বনির মাধ্যমে বিজয় দিবসের শুভ সূচনা করা হয়। সুর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে সরকারী, বেসরকারী ভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, শহীদ মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। পিরোজপুর মঙ্গলবার সকালে ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে পিরোজপুরে এ দিবসের সূচনা হয়। এর পরপরই জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, আওয়ামী লীগ, বিএনপি, প্রেসক্লাব, পৌরসভা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো শহীদ স্মৃতিস্তম্ভে ৭১-এর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে পুষ্পমাল্য অর্পণ করে। শেরপুর মঙ্গলবার সকালে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিস্তম্ভে শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য মানুষের ঢল নামে। হুইপ আতিউর রহমান আতিক এমপি, জেলা পরিষদ প্রশাসক, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, উপজেলা চেয়ারম্যান, পৌর মেয়র পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এছাড়াও মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, সাংবাদিক বিপ্লবী রবি নিয়োগী সভাকক্ষ, উদীচী, মহিলা পরিষদ, আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাসদ, জাতীয় পার্টিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সরকারী-বেসরকারী সংস্থা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও পেশাজীবী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ র‌্যালি সহকারে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিস্তম্ভে হাজির হয়ে পূষ্পার্ঘ অর্পণ করে। টাঙ্গাইল মঙ্গলবার সকালে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শহরের শহীদ স্মৃতি পৌর উদ্যানে স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। এরপর বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। বগুড়া একই সময়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ও শহীদ মুত্তিযোদ্ধা স্মৃতিফলকে পু®পার্ঘ অর্পণের পর সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গেই সকল সরকারী বেসরকরী ভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামে সকাল ৮টায় শিশু-কিশোরদের কুচকাওয়াজ ও ডিসপ্লের পর জেলা পরিষদ মিলনায়তনে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক শিশু চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা হয়। দুপুরে মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা দেয়া হয় জিলা স্কুল অডিটোরিয়ামে। রাজবাড়ী শহীদ মিনার এবং শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের কবর জিয়ারত, বঙ্গবন্ধু প্রতিকৃতি ও মোরালে পুষ্পমাল্য অর্পণ, কাজী হেদায়েত হোসেন স্টেডিয়ামে জেলা প্রশাসক কর্তৃক অনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও শিশু-কিশোরদের মার্চপাট ও শারীরিক কসরত প্রদর্শন এবং জাতীর শান্তি ও অগ্রসর কামনা করে বিশেষ মোনাজাত। কুষ্টিয়া দিবসের প্রথম প্রহর রাত ১২টা ১মিনিটে কুষ্টিয়া কালেক্টরেট চত্বরে কেন্দ্রীয় স্মৃতিস্তম্ভে ৩১বার তোপধ্বনিসহ পুষ্পার্ঘ্য অর্পণের মাধ্যমে জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, মুক্তিযোদ্ধা ও বিভিন্ন শ্রেণী পেশাজীবী মানুষ, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন এই কর্মসূচীর শুভসূচনা করেন। মানিকগঞ্জ সকাল ৭টায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে আয়োজিত শহীদ স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে দিবসের শুরু হয়। প্রথমে স্বাস্থ্য পরিবার কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক স্বপন এমপি স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন । রাজশাহী শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ, বিজয় শোভাযাত্রা ও কুচকাওয়াজসহ নানা কর্মসূচীর মধ্য দিয়ে স্বাধীনতা যুদ্ধের শ্রেষ্ঠ সন্তনদের স্মরণ ও বিজয় উৎসব করেছে রাজশাহীর সর্বস্তরের মানুষ। স্বাধীনতা যুদ্ধে বীর শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে মহান বিজয় দিবসের প্রথম প্রহরে এবং সকালে রাজশাহীর শহীদ মিনারগুলোতে নামে মানুষের ঢল। বৃদ্ধ থেকে শুরু করে শিশুরাও শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান মাতৃভূমির জন্য প্রাণ উৎসর্গ করা বীর সন্তানদের। সকল ১০টার দিকে মহানগর আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের সামনে থেকে বিশাল বিজয় শোভাযাত্রা বের করে দলের নেতাকর্মীরা। পাবনা পাবনা টাউন হল প্রাঙ্গণে আওয়ামী লীগ আয়োজিত বিজয় মেলায় আলোচনা সভা, নাটক, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়। আলোচনা সভায় তিন দিনে বিভিন্ন অতিথি বক্তব্য রাখেন। এদের মধ্যে ছিলেন- ভূমিমন্ত্রী শামসুর রহমান শরীফ ডিলু এমপি, দুদক কমিশনার শাহাবুদ্দিন চুপ্পু ও স্কয়ার গ্রুপের পরিচালক অরুন চৌধূরী পিন্টু। ঠাকুরগাঁও ৩১ বার তপোধ্বনির পর মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্তম্ভে ও স্থানীয় শহীদের সমাধিস্থলে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে দিনের কর্মসূচী শুরু হয়। এ সময় সাবেক মন্ত্রী, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি রমেশ চন্দ্র সেন এমপি, জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড, জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, উদীচী ও সামাজিক সংগঠন ফুল দিয়ে শহীদদের স্মরণ করে শ্রদ্ধা জানান। চাঁদপুর চাঁদপুরে রাত ১২টা ১ মিনিটে মহান বিজয় দিবসের প্রথম প্রহরে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্তম্ভ অঙ্গীকার পাদদেশে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শুরু হয় বিজয় দিবসের আনুষ্ঠানিকতা। বাঁধভাঙ্গা উচ্ছ্বাসে লালমনিরহাটসহ উত্তরাঞ্চলে বিজয় দিবস পালন নিজস্ব সংবাদদাত, লালমনিরহাট, ১৬ ডিসেম্বর ॥ লালমনিরহাটসহ উত্তরাঞ্চলের গ্রামে গ্রামে সব ধর্মের মানুষের কাছে বিজয় দিবসের দিনটি উৎসবের আমেজে পালিত হয়েছে। স্বাধীনতার ৪৩ বছর পরে এবারই প্রথম ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস তৃণমূল পর্যায়ে উৎসবের আমেজে সকল ধর্মবর্ণের নতুন প্রজন্ম পালন করছে। বিজয় দিবসের দিনটিতে ঈদ, পুজো ও বড়দিনের উৎসবের মতোই আনন্দে কাটে। লাল-সবুজের রঙে রাঙ্গিয়ে নতুন কাপড় পরে ঘুরতে দেখা গেছে। পর্যটন কেন্দ্র, পার্ক, নদীর পাড় ও শালবনে হাজারো মানুষের উপচেপড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। গ্রামীণ রাস্তা, হাটবাজারে বিজয় দিবস উপলক্ষে ক্লাব, সমিতি, ইউনিয়ন পরিষদ, তথ্যসেবা কেন্দ্র, সামাজিক সংগঠন ও রাজনৈতিক দলগুলো এ দিবসকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করতে অস্থায়ীভাবে সজ্জিত তোরণ ও গেট নির্মাণ করেছে। গ্রামের পথেঘাটে মানুষের ঢল নামে। ’৭১-এর মানবতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধীর বিচার হচ্ছে ও একজনের ফাঁসি কার্যকর হয়েছে। আগামী বিজয় দিবস জাতি পালন করতে চায় রাজাকারমুক্ত বাংলাদেশে। দেশের স্বাধীনতাযুদ্ধের কলঙ্ক মোচনের মধ্য দিয়ে। সিরাজগঞ্জে মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা স্টাফ রিপোর্টার, সিরাজগঞ্জ ॥ মহান বিজয় দিবসে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যদের সংবর্ধনা, সম্মাননা ও পুরস্কার বিতরণ করা হয়েছে। শহরের শহীদ এম, মনসুর আলী অডিটরিয়ামে অনুষ্ঠিত এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি সিরাজগঞ্জ সদর আসনের এমপি অধ্যাপক ডা. হাবিবে মিল্লাত মুন্না জাতির এ শ্রেষ্ঠ সন্তানদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন। জেলা প্রশাসন আয়োজিত এ সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিসি বিল্লাল হোসেন। এসএম এমরান হোসেন, আনোয়ার হোসেন রতু, কেএম হোসেন আলী হাসান, শফিকুল ইসলাম শফি, ডেপুটি কমান্ডার আশরাফুল ইসলাম চৌধুরী জগলু এবং আব্দুল মজিদ প্রমুখ বক্তব্য দেন।
×