ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

মমতাজ লতিফ

এখন সময় নগদ নারায়ণে বিশ্বাসীদের থেকে সতর্ক হবার

প্রকাশিত: ০৫:১০, ১৫ ডিসেম্বর ২০১৪

এখন সময় নগদ নারায়ণে বিশ্বাসীদের থেকে সতর্ক হবার

বৃহস্পতিবার স্বদেশ রায় আওয়ামী লীগের জমিদারদের ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীকে সতর্ক করেছেন। আমরাও দেশ- বিদেশী ষড়যন্ত্রের বিষয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছি। স্মর্তব্য : আওয়ামী লীগের সঙ্গে বিএনপির কতগুলো বিষয়ে তাৎপর্যপূর্ণ পার্থক্য রয়েছে। শুধু আদর্শে নয়, দুদলের নেতা- নেত্রী ও কর্মী সদস্যদের মধ্যে স্পষ্ট দৃশ্যমান পার্থক্য রয়েছে। প্রথমত আওয়ামী লীগে (আওয়ামী লীগ-মুসলীম লীগসহ) যদিও হোসেন শহীদ সোহ্রাওয়ার্দীর মত নেতা নাগরিক উচ্চ শিক্ষিত পরিবার থেকে আসলেও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব, শামসুল হক, সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদ, মনসুর আলী, কামরুজ্জামান, মোহাম্মদউল্লাহ, মিজানুর রহমানসহ বাংলাদেশের প্রত্যেক জেলার নেতাকর্মী এসেছে গ্রামের ভূ-স্বামী, জোতদার বা কৃষি- ভূমিভিত্তিক পরিবার থেকে অর্থাৎ এরা হলেন ভূমিপুত্র। আশ্চর্যজনক এই যে, বাংলাদেশের ভাষা ও স্বাধীনতার যুদ্ধে এই লাখ লাখ ভূমিপুত্র প্রত্যক্ষভাবে নেতৃত্বে ও লড়াইয়ে ও অংশগ্রহণ করেছে। অপরদিকে বিএনপি অনেক পরে গঠিত হয়েছে এবং শুধু যে দলটি বঙ্গবন্ধু হত্যার, আওয়ামী লীগ নিশ্চিহ্ন করার প্রেক্ষাপটে সেনা কর্মকর্তার স্বহস্তে গঠিত হয়েছে, তা নয়, এটি সূচনা থেকেই স্যুট- কোটধারী নাগরিক নেতৃত্ব- সদস্য দ্বারা সজ্জিত হয়েছে। সূচনালগ্নে দলটি প্রকৃতপক্ষে জামাতের প্রক্সি টিম হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে, যাতে বিস্মিত হওয়ার কিছুই নেই। কেননা মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বের বিরুদ্ধে প্রতি বিপ্লবের মাধ্যমে যে গোষ্ঠী দৃশ্যমান হবে, তারা তো অবশ্যই স্বাধীনতাবিরোধী পক্ষই হবে- এ তো সরল হিসাব। তবে, জিয়ার স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ, এরপর মুক্তিযুদ্ধে যোগদান যা তখন তার পক্ষে না করার এবং তার স্ত্রীকে যুদ্ধের খবরাখবর প্রেরণের জন্য ঢাকা সেনানিবাসে না রাখার কোন উপায় ছিল না। আজ তো পাকিস্তানের কর্নেল বেগের ’৭১-এ লিখিত পত্র থেকে নিশ্চিতভাবে প্রমাণিত হয়েছে যে জিয়া যা যা করছিলেন তাতে তার বস্রা খুব সন্তুষ্ট ছিল! তবে, আশ্চর্য এই যে, জিয়া মার্শাল ল’ এডমিনিস্ট্রেটর হিসেবে ক্ষমতা গ্রহণ করেই যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বন্ধ, ট্রাইব্যুনাল বন্ধ এবং তাদেরকে মুক্তি প্রদান, শাহ আজিজকে প্রধানমন্ত্রিত্ব প্রদান এবং বঙ্গবন্ধুর খুনীদের দায়মুক্তি ও বিদেশে বিলাসজীবন যাপনের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে দেখার পরও এই জিয়া কর্তৃক গঠিত বিএনপিতে মুক্তিযোদ্ধা, উচ্চশিক্ষিত ব্যক্তি, মেধাবী ছাত্ররা যোগদান করেছে এবং নিজেরাই আত্মবলি দিয়ে সন্ত্রাসী রাজনীতির প্রবর্তন করেছে। দ্বিতীয়ত : আওয়ামী লীগের ভূমিপুত্র নেতা-কর্মীর দল নগর জীবনের দুর্নীতি প্রবণ ও দুর্নীতিভিত্তিক চাকচিক্যময় আরাম আয়েশের উপকরণাদির মোহে পড়ে এমন কাজকর্ম করছে যাতে থাকে না একইরকম বা তার চেয়ে বেশী-মন্দ কাজ করা বিএনপি নেতা-কর্মীদের কুশলী নাগরিক দক্ষতা, রুচি ও পরিশীলনের সূক্ষ্ম আচ্ছাদন বা আবরণ। তৃতীয়ত আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব এখনও কৃষি-ভূমিনির্ভর যেখানে বিএনপির নেতৃত্ব ক্ষয়িষ্ণু সেনা সংস্কৃতি ও দুর্নীতি ভিত্তিক নগরকেন্দ্রিক ব্যবসা-বাণিজ্য। চতুর্থত দীর্ঘ ‘৭৬ থেকে পাঁচ বছর বাদ দিয়ে ২০০৬ পর্যন্ত সময়ে বিএনপি ও এর সহমতাদর্শী এরশাদ রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকা আর মুক্তিযুদ্ধের পরাজিত শক্তি জামায়াত ও পাকিস্তান ক্ষমতায় থাকা যে প্রকৃত অর্থে একই কথা- এটি উপলব্ধি করতে চরম ব্যর্থ হয় সুশীল সমাজ ও তাদের প্রতিনিধি মিডিয়াগুলো। এমনকি নতুন নাগরিক জীবনের সুযোগ-সুবিধার স্বাদ লাভ করা ভূমিপুত্র, গৃহস্থ-কৃষক পুত্রেরাও নিজেদের প্রিয় পিতার মতো নেতাদের হারিয়ে লক্ষ্যহীন হয়ে পরে। আকস্মিকভাবে অভিভাবকহীন হয়ে পরা সন্তানের মতো জিয়ার ক্যাডারদের হামলা, মামলা, গ্রেফতার, জেলজুলুমের মধ্যে তারা যথার্থ প্রতিরোধ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেনি। মাত্র সাড়ে তিন বছর আগে ’৭১-এর মুক্তিযুদ্ধে এই তরুণরাই আওয়ামী লীগের লক্ষ্য- মাতৃভূমিকে শত্রুমুক্ত করতে, শোষণমুক্ত করতে বদ্ধপরিকর দেশপ্রেমিক নেতাদের নির্দেশে-আদেশে লক্ষ্য বাস্তবায়নে মহান মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। এর আগে বঙ্গবন্ধু ও আওয়ামী লীগ নেতৃত্ব ‘৪৭- সালের পর থেকেই তো আসলে একমাত্র দল যেটি বামপন্থী দলসহ জনগণের মুক্তির পক্ষে দীর্ঘকাল যাবত আন্দোলন-সংগ্রাম করে, হাজার হাজার জীবন উৎসর্গ করে ১৬ ডিসেম্বর জাতির জন্য দুর্লভ, বহুল কাক্সিক্ষত স্বাধীনতা এনেছিল। তাদের যখন কিছু পুরস্কার পাওয়ার সময় এল তখনই ঘটে গেল স্বাধীনতাবিরোধীদের প্রতি-বিপ্লব! স্বাধীনতার ফসল ঘরে তোলার আগে লাঠিয়ালেরা সে ফসল দখল করে নিল। জানি না, স্বদেশ রায় কর্তৃক ওই এই ভূমিপুত্রেরা এইসব ইতিহাসের উল্টোযাত্রার কাহিনী জানেন কি না, বোঝেন কিনা এবং সে ভুল যাত্রাকে ঠিকপথে আনার কাজটি করছেন কিনা। তবে, সতর্ক থাকার পরিবর্তে শত্রুরা তাঁদের বিতর্কিত করার যে লক্ষ্যে নেমেছে, তাঁরা প্রায় সবাই কেন যেন সেসব ফাঁদে পা রাখছেন, তা সাম্প্রতিক নানা মন্ত্রী-উপমন্ত্রীর বক্তব্য ও পদক্ষেপে দেখা যাচ্ছে। মিডিয়া ওদের পক্ষে এসব মিথ্যা অর্ধ-সত্যকে লুফে নিচ্ছে ও বিশালভাবে প্রচার করছে। পঞ্চমত বিএনপির মধ্যে জামায়াতের সঙ্গে মিত্রতা, সন্ত্রাস নিয়ে বিতর্ক, মারামারি, বোমাবাজি হতেই পারে। কিন্তু আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠনের মধ্যে যদি একই রকমভাবে টেন্ডার বা এ ধরনের বিষয়ে মারামারি, সন্ত্রাস, সংঘাত হয়, তাহলে বলতে হয়, এরা ক্ষীর খাওয়ার জন্যই আওয়ামী লীগে নাম লিখিয়েছে, বঙ্গবন্ধুর আদর্শ দূরে থাক, এরা আওয়ামী লীগ যে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শের রচয়িতা ও এর রক্ষার অতন্দ্র প্রহরী-এ কথা তারা জানেও না, মানেও না। ওরা নগদ নারায়ণে বিশ্বাসী এবং ওদের কাজকর্ম যে আওয়ামী চরিত্র হননে, দলটির জনপ্রিয়তায় আঘাত দিতে ভূমিকা রাখছে- সম্ভবত এটি তারা বুঝে শুনে শত্রুর অর্থে আওয়ামী লীগ ধ্বংসের লক্ষ্যেই নেমেছে। তারা যে তারেকের ক্রীতদাস নয়, তা তাদেরই বোঝাতে হবে, প্রমাণ করতে হবে। পাঠক নিশ্চয় খেয়াল করেছেন যে, সারাদেশে মফস্বলে, উপজেলায় প্রায় প্রতিদিন কুপিয়ে হত্যার শিকার হচ্ছে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ-এর মফস্বলের উঠতি নেতাকর্মী। খেয়াল করবেন, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায়, দেশের অন্তত দু’টি সুশীল সংস্থা জোরালো প্রচার চালাচ্ছে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা সংস্থার দ্বারা গুম, খুন হওয়ার বিষয়ে। এ খুন সম্পর্কে তারা নীরব রয়েছে । গুম, খুন প্রকৃত অর্থেই কোন মানুষের কাম্য নয়, এ নির্মম ঘটনা কারও কাছেই কাম্য হতে পারে না বরং এর প্রতিরোধে সমাজের সুশীল সমাজ, রাজনীতিক, নিরাপত্তা বাহিনী, তরুণ ছাত্র সমাজ, মিডিয়া উপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করে সমাজ থেকে এটির সমূলে উৎপাটনে যৌথ উদ্যোগ গ্রহণ করবে- এটিই জনগণের প্রত্যাশা। একই সঙ্গে, স্মরণ রাখতে হবে- সমাজকে চরম দুর্বৃত্তায়িত করতে গিয়ে জিয়া, এরশাদ, খালেদা, তারেক ও ‘৭১-এর জল্লাদ-জামায়াত-শিবিররা যে হাজার হাজার দুর্বৃত্ত, নির্মম খুনী জল্লাদের জন্ম দিয়েছে, তারাও কিন্তু এসব গুম, খুনের পেছনে অব্যাহতভাবে গোপন ভূমিকা রেখে চলেছে যা মানবাধিকার সংস্থাগুলো উপেক্ষা করে চলছে। রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে, তাদের ভাবমূর্তি ধ্বংসে, তাদের ওপর যেমন আঘাত হানা হয়েছে ২০০৯-এ বিডিআর বিদ্রোহে, তেমনি তাদের কোন কোন সদস্যকে কোটি টাকায় কিনে নিয়ে তাদের দ্বারাও গুম, খুন করানো যে হচ্ছে না, তা বলা সত্যের অপলাপ হবে। আমাদের দেশে অপহরণ বা গুম ও খুনের সূচনা করেছে জামায়াত ও ছাত্রসংঘ ‘৭১-এর নবেম্বর মাসে। তারা সারাদেশের উচ্চ শিক্ষিত চিকিৎসক, সেনা, পুলিশ, শিক্ষক, আইনজীবী, আমলা, সাংবাদিকসহ কয়েক হাজার বুদ্ধিজীবীকে গুম করেছে, খুন করেছে তাদের কথায় ‘আল্লাহর ঘর’ পাকিস্তানকে রক্ষা করার উদ্দেশ্যে। তারা ’৭২ থেকেই এই গুম, খুনের কার্যক্রম নতুন করে অব্যাহত রেখেছে এবং ‘ ৭২ থেকে আবার এদের টার্গেট হয় হিন্দু, হিন্দু পরিবারের পুরুষ ও পুত্র সন্তান এবং বিধবা ও তরুণীরা, এর পাশে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী। যে দু’টি সংস্থা প্রায়ই গুম, খুন সম্পর্কে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বাহিনীর ভূমিকা নিয়ে গবেষণার ফল প্রকাশ করে, তাদের বলব- তারা ২০১৩ তে খালেদার আহ্বানে জামায়াত-শিবির- হেফাজত- বিএনপির খুনীদের হাতে খুন হওয়াদের সংখ্যা, আদিলুর রহমানের মিথ্যা তথ্য খ-ন করা, মাহমুদুর রহমানের মিথ্যা সংবাদ ও চিত্র প্রকাশ, রাতের অন্ধকারে বিশাল অঙ্কের অর্থের লেনদেনের ওপর অনুসন্ধান করে প্রতিবেদন প্রকাশ করুন। এছাড়াও ২০০১ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত বিএনপি- জামায়াত ও জেএমবি, হিজবুত তাহরীর, হরকাতুল জেহাদ ইত্যাদি মৌলবাদী দলের সদস্যদের হাতে কোন দলের কারা, কেন, কিভাবে নিহত, গুম, ধর্ষণের শিকার হয়েছে- সে তথ্য কোয়ানটিটেটিভ ও কোয়ালিটেটিভ গবেষণা পদ্ধতি ব্যবহার করে প্রতিবেদন প্রকাশ করুন। একটি প্রশ্ন না করলেই নয়- ২০০১ থেকে ২০০৬, তারও আগে ’৭৬ থেকে ৮১, ৮১-৯০-৯৬- এই সময়ের রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস, গুম, খুন, ধর্ষণ, হিন্দুদের দেশত্যাগের ওপর কি আপনারা প্রতিবেদন তৈরি করেছিলেন? না করলে, এখন করুন, নতুবা গায়ে একটা ট্যাগ লেগে যাচ্ছে, যা মোটেও কাক্সিক্ষত নয়। আবারও আওয়ামী লীগের নেতা, মন্ত্রী, উপমন্ত্রী, সাংসদ, স্থানীয় দলের নেতাদের অনুরোধ করব- আপনাদের প্রত্যেককে ঘিরে শত্রুরা বলয় তৈরি করেছে, এদের পাতা ফাঁদ, সেটা হতে পারে কোন প্রচার খোলসে কৃষিজ সবজি ও ফলে ভেজাল, রাজপথের যানযট আমদানি করা কোটি টাকার গাড়ি, ঢাকার জমি, পার্সেন্টেজ, যাই হোক, মনে রাখবেন আজকে যে অন্যায় জিনিসটি আপনি গ্রহণ করবেন, সেটি সেই মুহূর্তেই মিডিয়ায় চলে গেছে। শত্রুরা টার্গেট করেছে সফল কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরীকে ভেজাল মেশানো খাদ্যের ওপর প্রবল প্রচারণার মাধ্যমে যদিও কিছু সংখ্যক কৃষক ও মধ্যস্বত্বভোগী ভেজাল মেশানোর কাজটি করে। তারা টার্গেট করেছে সফল যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরকে রাস্তায় পরিকল্পিতভাবে অটোসিগন্যাল বন্ধ রেখে মন্ত্রী- ভিআইপিদের ওপর দায় চাপিয়ে হাত দিয়ে এক একদিন এক একটি আস্তাকে যান দিয়ে বন্ধ করে দিয়ে। ওরা টার্গেট করেছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফকে। এর আগে এইচ.টিইমাম ও তৌফিক এলাহী, পদ্মা সেতুকে টার্গেট করা হয়েছে। আপনাদের বলব আপনাদের পেছনেই আছেন- অসামান্য নেতা বঙ্গবন্ধু, অসাধারণ দেশপ্রেমিক সৈয়দ নজরুল, তাজউদ্দীন আহমদ, মনসুর আলী, কামরুজ্জামানসহ লাখ লাখ শহীদের আত্মত্যাগের জ্বলন্ত উদাহরণ। কি ক্ষতি হয় যদি আপনি একটি কোটি টাকার গাড়িতে না চড়েন? কি ক্ষতি হয়, যদি আপনি লাখ টাকার ফ্ল্যাট বা ঢাকার জমি না পান? আর ঐসব কোটি টাকার ঘৃণ্য বিলাসী গাড়িতে চড়তে পারলে আপনি কি স্বর্গসুখ লাভ করবেন? কোটি টাকার বিলাসী জমিতে প্রাসাদ তৈরি করে তাতে বাস করে আপনি কি মৃত্যুহীন, অমর হয়ে যাবেন? কোনটিই হবেন না। একটা কথা সবার উচিত, আমার বাবা পায়ে হেঁটে, কদাচিৎ ঘোড়ার গাড়ি, বৃদ্ধ বয়সে বঙ্গবন্ধুর একান্ত ইচ্ছায় চট্ট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভি.সি. হয়ে অফিসিয়াল গাড়িতে আসা, যাওয়া করেছেন। এখন আমরা ভাই-বোনেরা জাপানি রি-কন্ডিশন্ড গাড়িতে চড়ি। কিন্তু এ গাড়িতে চড়ে আমি মরমে মরে যাই। রাস্তায় রিক্সাযাত্রীদের দেখে ভীষণ লজ্জিতবোধ করি যে, আমি তো আসলে রিক্সাযাত্রী, কেন গাড়ির যাত্রী হলাম, সে মাপের কাজ কি আমি করেছি? লতিফ সিদ্দিকী, কাদের সিদ্দিকীরা কারও নির্দেশে নিজেদের জন্য বড় অসময়ে মৃত্যু ডেকে আনলেন কেন ভেবে ভীষণ কষ্ট পাই। নক্ষত্রদের পতন হতে দেখলে, বার বার তা হতে দেখলে মনে অশুভ আশঙ্কা জেগে ওঠে। একটা কথা বলতে চাই আমাদের দেশের, ঢাকার, আন্তঃজেলার রাজপথ কিন্তু অনেক দেশ থেকে প্রশস্ত। রাজপথের তুলনায় যান বেশি এটি একটি অভিসন্ধিমূলক প্রচারণা কেননা অটো সিগন্যাল চলছে এমন সপ্তাহগুলোতে আমি কোথাও কোন যানজট পাইনি। যোগাযোগ ও পরিবহনমন্ত্রীকে কেউ ব্যর্থ করতে চাচ্ছে এতে কোন সন্দেহ নেই। অন্তত অটো- সিগন্যাল ব্যাবস্থা না করে হাত ব্যাবহার করে কি ডিজিটাল বাংলাদেশ হওয়া সম্ভব? লেখক : শিক্ষাবিদ ও গবেষক [email protected]
×