ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

স্বাধীনতার ৪৩ বছর পরও নওগাঁর বধ্যভূমিগুলো অবহেলিত

প্রকাশিত: ০৬:৩০, ১৩ ডিসেম্বর ২০১৪

স্বাধীনতার ৪৩ বছর পরও নওগাঁর বধ্যভূমিগুলো অবহেলিত

বিশ্বজিৎ মনি, নওগাঁ ॥ মহান স্বাধীনতার ৪৩ বছর পরও নওগাঁর ধামইরহাটে হানাদার বাহিনীর হাতে নির্মমভাবে নিহত স্বাধীনতাকামী মানুষের গণকবর ও বধ্যভূমিগুলো আজও অবহেলিত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। গণকবরগুলো সঠিকভাবে সংরক্ষণের ব্যবস্থা না নিলে কালের বিবর্তনে এক দিন দেশের মানচিত্র থেকেই এসবের স্মৃতিচিহ্ন হারিয়ে যাবে। এলাকাবাসী এসব গণকবর ও বধ্যভূমিগুলো যথাযথভাবে সংরক্ষণের দাবি জানিয়েছেন। নওগাঁ জেলা সদর থেকে ৫৬ কিলোমিটার উত্তরে ভারতের কোল ঘেঁষে ধামইরহাট উপজেলার অবস্থান। স্বাধীনতা যুদ্ধে জেলার বিভিন্ন অঞ্চলে পাকবাহিনী তাদের সহযোগিতা করার জন্য রাজাকার, আলবদর ও আলশামস বাহিনী গঠন করে এলাকার মুক্তিকামী জনসাধারণের ওপর অকথ্য নির্যাতন চালায়। এসব বাহিনী কর্তৃক গণনির্যাতনের ফলে এলাকার নিরীহ মানুষকে হত্যাযজ্ঞ চালাতে থাকলে গ্রামবাসী দলে দলে প্রাণভয়ে উপজেলার বিভিন্ন সীমান্ত পথ পাড়ি দিয়ে ভারতে আশ্রয় নেয়। এছাড়া এ পথ দিয়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের লোকজন ভারতে প্রশিক্ষণ নেয়ার জন্য আশ্রয় নিয়েছিল। তাই পাক-হানাদাররা মুক্তি বাহিনীকে দেশে ঢুকতে না দিতে এবং দেশ থেকে ভারতে আশ্রয় ঠেকাতে এ উপজেলার ফার্সিপাড়া উচ্চ বিদ্যালয় ও জমিদার বাড়ির পরিত্যক্ত অংশে ক্যান্টনমেন্ট গড়ে তোলে। ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চের শেষ দিকেই তারা এখানে ক্যাম্প স্থাপন করে। হানাদার বাহিনীর সঙ্গে এ দেশীয় রাজাকার, আলশামস ও আলবদর বাহিনীতে যোগ দিয়ে ব্যাপক নির্যাতন অগ্নি সংযোগ, নারীর সম্ভ্রম হরণসহ গণহত্যা চালিয়ে যায়। যদিও এ উপজেলা হানাদার বাহিনীর হাত থেকে মুক্ত হয় ১৯৭১ সালের ১৩ ডিসেম্বর। কিন্তু তাদের নির্মম অত্যাচার এবং মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযোদ্ধা সন্দেহে নিরীহ গ্রামবাসীদের ধরে এনে গুলি করে হত্যা করা হয় নির্বিচারে। অনেক লাশের পরিচয় না পাওয়ায় প্রধান সড়কের ধারে এবং ক্যান্টনমেন্টের আশপাশে পড়ে থাকতে দেখা যায়। অনেক লাশ শিয়াল-কুকুরের পেটে যায়। গন্ধে ওই এলাকার আশপাশের বাতাস বিষাক্ত হয়ে ওঠেছিল।
×