ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

জাতীয় ভারোত্তোলনে বিদ্যুৎ চমকের অবসান

প্রকাশিত: ০৫:৪৮, ১২ ডিসেম্বর ২০১৪

জাতীয় ভারোত্তোলনে বিদ্যুৎ চমকের অবসান

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ শেষ হয়েছে জাতীয় ভারোত্তোলন প্রতিযোগিতা। শেষদিনে নতুন জাতীয় রেকর্ড গড়েছেন সীমান্ত, সাথী ও ময়না। কিন্তু তাদের নিয়ে যতটা না মাতামাতি, তারচেয়ে বেশি মাতামাতি ও আবেগ পরিলক্ষিত হয়েছে অন্য একজনের বেলায়। তিনি বিদ্যুৎ কুমার রায়। বৃহস্পতিবার তিনি অবসর নিয়েছেন ১০৫ কেজির ওজন শ্রেণীতে খেলতে গিয়ে। স্ন্যাচে ১১৫ ও জার্কে ১২৫ কেজিসহ ২৪০ কেজি তুললেন। কিন্তু সেনাবাহিনীর ফরহাদ আলী যে তাঁর চেয়ে বেশি ওজন তুলে ফেলেছেন! জীবনের শেষ প্রতিযোগিমূলক ইভেন্টে রুপা জিতেই সন্তুষ্ট থাকতে হলো এই কিংবদন্তি ভারোত্তোলককে (২৭১ কেজি তুলে ফরহাদ পান স্বর্ণপদক)। ইভেন্ট শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে ফুলের মালা দিয়ে বিদায় জানান ফেডারেশনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরা। দাঁড়িয়ে বিদায় জানালেন অন্য ভারোত্তোলকরা। এ সময় এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। আনন্দাশ্রু বয়ে যায় বিদ্যুতের দু’চোখ দিয়ে। অবসর নিয়ে মোটেও ভারাক্রান্ত ছিলেন না বিদ্যুৎ। তার কথায়, ‘যখন ভারোত্তোলনে এসেছিলাম, ঠিক তখন যে পরিবেশ পেয়েছিলাম এবং যে অনুভূতিটা হয়েছিল, এখনও তাই মনে হচ্ছে। খুব ভাল লাগছে অবসর নিতে পেরে। বুঝতেই পারিনি ক্যারিয়ারের ২৬ বছর কিভাবে শেষ হয়ে গেল। এখন বাংলাদেশ আনসার ও সরকার যদি আমাকে প্রশিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেয়, তাহলে আমি নিজেকে ধন্য মনে করব। আমার ধারণাÑ আমাদের দেশের ভারোত্তোলনে এখনকার ছেলেদের চেয়ে মেয়েরাই ভাল করবে। তারা দীর্ঘমেয়াদী প্রশিক্ষণ পেলে সাফ, এশিয়ান কিংবা কমনওয়েলথ গেমসে পদকজয় করতে পারবে।’ ১৯৮৭ সালে ভারোত্তোলনে আসেন ময়মনসিংহের সন্তান বিদ্যুৎ কুমার রায়। আগে ডাক্তারবাড়ির বিদ্যুৎ বলে জানত সবাই। ভারোত্তোলন খেলছেন ২৬ বছর ধরে। যার মধ্যে ২৫ বারই চ্যাম্পিয়ন হন! তখনকার সেই ১৬ বছরের কিশোর এখন ৪৩ বছরের মধ্যবয়সী পুরুষ। একসময় যাদের সঙ্গে খেলেছেন, এখন তাদের ছেলেদের সঙ্গেও খেলছেন বিদ্যুৎ! এক বছর আগেই গিনেজ বুকে রেকর্ডের জন্য কাগজপত্র জমা দেন। কিন্তু বাংলাদেশ অলিম্পিক এ্যাসোসিয়েশন গড়িমসি করায় এক বছর নষ্ট হয়। তারপরও গিনেজ বুক রেকর্ড কর্তৃপক্ষ কাজ করছে। বৃহস্পতিবার প্রতিযোগিতার তৃতীয় দিনে মহিলা ৬৯ কেজিতে স্ন্যাচ ও ক্লিন এ্যান্ড জার্কে উভয় বিভাগে নতুন জাতীয় রেকর্ড গড়েন মাবিয়া আক্তার সীমান্ত। স্ন্যাচে ৬৯ কেজি উত্তোলন করে রেকর্ড গড়েন আনসারের এই খেলোয়াড়। মেয়েদের ৬৩ কেজিতে সেনাবাহিনীর রোকেয়া সুলতানা সাথী স্ন্যাচে ৭২ কেজি তুলে নতুন জাতীয় রেকর্ড গড়েন। ৫৮ কেজিতে ফাহিমা আক্তার ময়না ক্লিন এ্যান্ড জার্কে ৯২ কেজি উত্তোলন করে নিজের গড়া ২০১৩ বাংলাদেশ গেমসের (৯০ কেজি) রেকর্ড ভাঙ্গেন। জাতীয় ভারোত্তোলন প্রতিযোগিতার শেষ দিনে নতুন জাতীয় রেকর্ড গড়া ভারোত্তোলকদের ওয়ালটনের পক্ষ থেকে পুরস্কৃত করেন আর বি গ্রুপের এডিশনাল ডিরেক্টর এফএম ইকবাল বিন আনোয়ার (ডন)। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ফেডারেশনের সভাপতি মঞ্জুর কাদের কোরাইশী ও সাধারণ সম্পাদক উইং কমান্ডার (অব) মহিউদ্দিন আহমেদসহ অন্যরা। ফিটনেস টেস্টে উত্তীর্ণ জিমিরা স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ প্রথম দফায় না পারলেও দ্বিতীয় দফায় ঠিকই ফিটনেস টেস্টে উত্তীর্ণ হয়েছেন সদ্য নিষেধাজ্ঞা থেকে মুক্ত হওয়া চার হকি খেলোয়াড় রাসেল মাহমুদ জিমি, জাহিদ হোসেন, কামরুজ্জামান রানা ও ইমরান হাসান পিন্টু। তাদের ফিটনেস টেস্টে পাস করার কথা জানান বাংলাদেশ জাতীয় হকি দলের সহকারী কোচ মামুনুর রশিদ। সেই সঙ্গে এ-ও জানান, ৩৯ জনের প্রাথমিক দল ছোট করে ২৯ জনে নামিয়ে আনা হয়েছে। জানুয়ারিতে সিঙ্গাপুরে অনুষ্ঠিতব্য ওয়ার্ল্ড হকি লীগের দ্বিতীয় পর্বে অংশ নেবে বাংলাদেশ জাতীয় হকি দল। চূড়ান্ত দলে ঠাঁই পাওয়ার জন্য জিমিদের প্রচেষ্টা অবশেষে সফল হয়।
×