ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বার্সিলোনার মধুর প্রতিশোধ পিএসজিকে হারিয়ে

প্রকাশিত: ০৫:৩৮, ১২ ডিসেম্বর ২০১৪

বার্সিলোনার মধুর প্রতিশোধ পিএসজিকে হারিয়ে

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ মধুর প্রতিশোধ নিয়ে উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লীগ ফুটবলের গ্রুপ পর্ব শেষ করেছে বার্সিলোনা। বুধবার ‘এফ’ গ্রুপের ম্যাচে কাতালানরা ৩-১ গোলে পরাজিত করে অতিথি ফরাসী ক্লাব প্যারিস সেইন্ট জার্মেইনকে। বার্সার হয়ে গোল করেন তিন সুপারস্টার লিওনেল মেসি, নেইমার ও লুইস সুয়ারেজ। পিএসজির হয়ে একমাত্র গোলদাতা সুইডিশ সুপারস্টার জ¬াতান ইব্রাহিমোভিচ। এই জয়ে প্রথম লেগে হারের প্রতিশোধ নিয়েছে বার্সা। ৩০ সেপ্টেম্বর প্যারিসে পিএসজি ৩-২ গোলে হারিয়েছিল বার্সাকে। নকআউট পর্ব আগেই নিশ্চিত করা বার্সা এই জয়ে গ্রুপের শীর্ষস্থান পেয়েছে। ফলে টানা অষ্টমবারের মতো ইউরোপ সেরা হওয়ার এই আসরে গ্রুপপর্বের শীর্ষস্থান পেল স্প্যানিশ পরাশক্তিরা। আর গ্রুপের রানার্সআপ হয়েছে পিএসজি। আগের ম্যাচে চ্যাম্পিয়ন্স লীগে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ গোলের রেকর্ড গড়া মেসি পরশু এক গোল করে আরও একটি মর্যাদার রেকর্ড গড়েছেন। সব ইউরোপিয়ান প্রতিযোগিতা মিলিয়ে আর্জেন্টাইন অধিনায়ক এখন সবেচেয়ে বেশি গোলের মালিক। তার গোলসংখ্যা ৭৬টি। এই গোলগুলোর মধ্যে ৭৫টি চ্যাম্পিয়ন্স লীগে ও ১টি গোল উয়েফা সুপার কাপে। মাত্র ৯৫ ম্যাচ খেলে গোলগুলো করেছেন বার্সা ডায়মন্ড। এক্ষেত্রে তিনি ছুঁয়েছেন সাবেক রিয়াল মাদ্রিদ তারকা রাউল গঞ্জালেসকে। ৭৫ গোল করে রাউল ও মেসির পেছনে আছেন রিয়াল মাদ্রিদের পর্তুগীজ সুপারস্টার ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো। ম্যাচটিতে দুর্দান্ত গোল করে সবার নজর কাড়েন ব্রাজিলিয়ান তারকা নেইমার। আর ন্যুক্যাম্পে প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচে প্রথম গোল করে উচ্ছ্বাসে ভাসছেন বার্সার উরুগুইয়ান তারকা লুইস সুয়ারেজ। ‘জি’ গ্রুপ থেকে অপরাজিত থেকে নকআউট পর্বে নোঙ্গর ফেলেছে চেলসি। ঘরের মাঠ স্টামফোর্ড ব্রিজে দ্য ব্লুজরা ৩-১ গোলে পরাজিত করে পর্তুগালের ক্লাব স্পোর্র্র্র্টিং সিপিকে। বিজয়ী দলের হয়ে গোলগুলো করেন চেস ফেব্রিগাস, আন্দ্রে শুরলে ও জন ওবি মিকেল। স্পোর্টিংয়ের একমাত্র গোলদাতা ক্রিশ্চিয়ান সিলভা। এই জয়ে গ্রুপের শীর্ষস্থান নিয়ে সেরা ষোলোতে উঠেছে জোশে মরিনহোর দল। এই গ্রুপ থেকে পরবর্তী পর্বে চেলসির সঙ্গী হয়েছে জার্মান ক্লাব শালকে জিরো ফোর। এ্যাওয়ে ম্যাচে শালকে ১-০ গোলে সেøাভেনিয়ার চ্যাম্পিয়ন ম্যারিবোরকে হারিয়ে গ্রুপ রানার্সআপ হয়। প্রথম লেগের মতো ফিরতি লেগেও হারের শঙ্কায় পড়েছিল বার্সা। ন্যুক্যাম্পকে স্তব্ধ করে ম্যাচের ১৫ মিনিটে অতিথি পিএসজিকে এগিয়ে নেন ইব্রাহিমোভিচ। লুকাস মাউরার ক্রসে ব্লেইস মাটুইডি হয়ে বল সুইডেনের ফরোয়ার্ডের কাছে পৌঁছায়। তা থেকে নিজের সাবেক ক্লাবের জালে গোল করতে ভুল করেননি ইব্রা। চার মিনিট পরই মেসির গোলে বার্সলোনা সমর্থকদের মুখে হাসি ফেরে। জ্যাভিয়ের মাশ্চেরানোর লম্বা পাস পায়ে নিয়েই দ্রুত ক্রস দেন লুইস সুয়ারেজ। ডান দিক দিয়ে অনেকটা দৌড়ে এসে পা ছুঁইয়ে লক্ষ্যভেদ করেন সাবেক ফিফা সেরা ফুটবলার। বার্সিলোনাকে সমতায় ফেরানোর পাশাপাশি নিজের চ্যাম্পিয়ন্স লীগের গোলের রেকর্ডটা আরেকটু উঁচুতে নিয়ে যান মেসি। ইউরোপ সেরার আসরে আর্জেন্টাইন অধিনায়কের গোলসংখ্যা ৭৫। ম্যাচের ৪১ মিনিটে একক প্রচেষ্টায় অসাধারণ গোল করে বার্সিলোনাকে এগিয়ে দেন নেইমার। ডান দিক দিয়ে পিএসজির এক ফুটবলারকে কাটিয়ে ডি বক্সের বাইরে থেকে কোনাকুনি শটে অতিথিদের জালে বল জড়ান ব্রাজিল অধিনায়ক। বিরতির পর ৫৪ মিনিটে সমতায় ফেরার সুযোগ পেলেও তা কাজে লাগাতে পারেনি পিএসজি। ডি বক্সে জটলার মধ্যে প্রথমে লুকাসের শট আটকে দেন বার্সা গোলরক্ষক। এরপর ফিরতি বলে কাভানির শট বাইরে যায়। ৭৭ মিনিটে মেসি-নেইমার-সুয়ারেজের সম্মিলতি আক্রমণে ৩-১ গোলে এগিয়ে যায় লুইস এনরিকের দল। শেষ পর্যন্ত এই ফলাফলেই শেষ হয় ম্যাচ। ‘এফ’ গ্রুপের অন্য ম্যাচে আয়াক্স আমস্টারডাম ৪-০ গোলে আপোয়েল নিকোশিয়াকে হারায়। উল্লেখ্য, দুটি দল আগেই ছিটকে গেছে চ্যাম্পিয়ন্স লীগের গ্রুপ পর্ব থেকে। তবে ৫ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় হয়ে ইউরোপা লীগে খেলার সুযোগ মিলেছে হল্যান্ডের আয়াক্সের। ম্যাচ শেষে বার্সা কোচ লুইস এনরিকে এই জয়কে তৃপ্তির বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, এই ম্যাচে জয় ছাড়া আমাদের সামনে বিকল্প কিছু ছিল না। আমার মনে হয় আমরা একটা দারুণ ম্যাচই খেলেছি। নতুন ফরমেশনে দলকে খেলানো প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা সব সময়ই এমন একটা ফরমেশনে (৩-২-৩-২) খেলতে চেয়েছি, যা প্রতিপক্ষকে সমস্যয়া ফেলবে। আমার মনে হয় ম্যাচে আমরা ওটাই করতে পেরেছি। ম্যাচে নেইমারের গোলের প্রশংসা করে পিএসজি কোচ লরেন্ট ব্লাঁ বলেন, সেরা খেলোয়াড়দের ছোট সুযোগকে গোলে পরিণত করতে খুব বেশি কিছু লাগে না। বার্সিলোনার প্রথম দুই গোলে এটাই ঘটেছে। ন্যুক্যাম্পে এখন পর্যন্ত চার খেলায় প্রথম গোল পেলেন সুয়ারেজ। তবে লা লিগায় গোলের খাতা খুলতে না পারা বিতর্কিত এই তারকা বার্সার হয়ে দুটি গোলই করেছেন চ্যাম্পিয়ন্স লীগে। এর আগে তিনি এ্যাপোয়েলের বিরুদ্ধে বার্সার হয়ে অভিষেক গোল করেছিলেন। পরশু ন্যুক্যাম্পে অভিষেক গোলের পর সুয়ারেজ বলেন, এই গোলটি আমার আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দিয়েছে। আর গোলটি দলের গুরুত্বপূর্ণ সময়ে এসেছে।
×