ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ডিএসইতে আজ চালু হচ্ছে স্বয়ংক্রিয় লেনদেন ব্যবস্থা

প্রকাশিত: ০৩:৪৩, ১১ ডিসেম্বর ২০১৪

ডিএসইতে আজ চালু হচ্ছে  স্বয়ংক্রিয় লেনদেন ব্যবস্থা

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ উপযুক্ত পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয় লেনদেন ব্যবস্থার নতুন সফটওয়্যারটি চালু করতে যাচ্ছে। আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে দশটায় আনুষ্ঠানিকভাবে নতুন এই ব্যবস্থাটি চালু হবে। এই ব্যবস্থা চালুর জন্য বিভিন্ন ব্রোকারকে যথাযথ প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। জানিয়েছেন সংস্থাটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) স্বপন কুমার বালা। বুধবার ডিএসইর নতুন স্বয়ংক্রিয় লেনদেন ব্যবস্থার (অটোমেশন ট্রেডিং সিস্টেম) আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের আগেরদিন সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই কথা বলেন। ডিএসই এমডি বলেন, আগামী এপ্রিল থেকে এই ব্যবস্থার আওতায় মোবাইল ফোন ও আইপ্যাডের মাধ্যমে বিনিয়োগকারীরা লেনদেন করতে পারবেন। এপ্রিলের মধ্যে এ সিস্টেমের সঙ্গে মোবাইল ফোন ও আইপ্যাডে লেনদেন উপযোগী সফটওয়্যার সংযোজন করা হবে। আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁ হোটেলে সকাল সাড়ে ৯টায় সিস্টেমটি উদ্ধোধন করবেন অর্থ প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান এমপি। এ সময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এম খায়রুল হোসেন। জানা গেছে, এ পদ্ধতিতে লট সাইজ থাকবে না। ফলে যে কোন পরিমাণ শেয়ার লেনদেন করা যাবে। লট সাইজ ভেঙ্গে দিয়ে হাওলা চার্জের মাধ্যমে ডিএসইকে লাভজনক করতেই এ প্রক্রিয়ায় লেনদেন চালু করা হচ্ছে কিনাÑ সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে স্বপন কুমার বালা বলেন, এখানে লট সাইজ থাকবে না, ঠিক আছে। তবে প্রতিটি লেনদেনের ক্ষেত্রে হাওলা চার্জের বিষয়টি নিয়ে আলোচনার পর সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। আজ, রবিবার ও সোমবারের লেনদেন দেখার পর বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত নেব। প্রয়োজনে হাওলা চার্জ উঠিয়ে দেয়া হবে। এ পদ্ধতি বাস্তবায়নের জন্য ৩৫ কোটি টাকা লেগেছে বলে জানিয়েছেন ডিএসই এমডি। ডিএসই সূত্রে জানা গেছে, নাসডাক ওএমএক্স ও ফ্লেক্সট্রেড ব্যবহারকারীদের (ব্রোকার এবং বিনিয়োগকারী) জন্য সহজ এবং নিরাপদ হবে। তবে নতুন ব্যবস্থায় কোন বিনিয়োগকারী নিজ ব্রোকারেজ হাউসের যে কোন অনুমোদিত প্রতিনিধি বা শাখা থেকে শেয়ার কেনাবেচা করতে পারবেন না। প্রত্যেক বিনিয়োগকারীর জন্য একটি ব্রোকারেজ হাউসের শাখা ও একজন বা একটি গ্রুপভুক্ত অনুমোদিত প্রতিনিধি নির্দিষ্ট থাকবে। কোন বিনিয়োগকারীকে ওই নির্দিষ্ট ব্রোকারেজ হাউস ও নির্দিষ্ট বা গ্রুপভুক্ত অনুমোদিত প্রতিনিধিদের মাধ্যমে শেয়ার কেনা বা বেচার অর্ডার দিতে হবে। এতে একসঙ্গে অনেক কোম্পানির শেয়ারের লেনদেন ওঠানামা প্রত্যক্ষ করতে পারবেন তাঁরা। নতুন স্বয়ংক্রিয় লেনদেন ব্যবস্থা চালুর লক্ষ্যে গত ২৪ নবেম্বর থেকে ডিএসইর ব্রোকারেজ হাউসগুলোর প্রায় ৪০০টি ট্রেডিং ওয়ার্ক স্টেশন থেকে একযোগে পরীক্ষামূলক লেনদেন (মক ট্রেডিং) করা হয়। পরীক্ষামূলক লেনদেনে যেসব ত্রুটি-বিচ্যুতি ধরা পড়ে তা তাৎক্ষণিকভাবে সমাধান করা হয়। এর আগে চলতি বছরের ২১ মার্চ অটোমেটেড ট্রেডিং প্ল্যাটফর্ম চালুর জন্য নাসডাক ওএমএক্স ও ফ্লেক্সট্রেড সিস্টেমসের সঙ্গে চুক্তি সই করে সংস্থাটি। নয় মাসের মধ্যে আধুনিক প্রযুক্তির অটোমেটেড ট্রেডিং প্ল্যাটফর্ম চালু করবে ডিএসই। নতুন স্বয়ংক্রিয় লেনদেন ব্যবস্থার মধ্যে নাসডাক ওএমএক্স সরবরাহ করছে ম্যাচিং ইঞ্জিন ও ফ্লেক্সট্রেড সরবরাহ করছে অর্ডার ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (ওএমএস)। নতুন অটোমেটেড ট্রেডিং প্ল্যাটফর্ম সম্পর্কে ডিএসই স্টেকহোল্ডার প্রতিনিধি, ব্রোকার হাউসের সবগুলো অনুমোদিত প্রতিনিধি, আইটি বিভাগের প্রধান এবং ক্রেডিট এ্যাডমিনিস্ট্রেটরদের ধারণা দিতে গত ৪ সেপ্টেম্বর প্রশিক্ষণ কর্মশালার উদ্যোগ নেয় ডিএসই, যা তিন মাসব্যাপী পর্যায়ক্রমে চলে। সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ডিএসইর পরিচালক শাকিল রিজভী, মোঃ শাহজাহান, খাজা গোলাম রসুল ও শরীফ আনোয়ার হোসেন। এর আগে ১৯৯৮ সালের ১০ আগস্ট ডিএসইতে সর্বপ্রথম প্রযুক্তির্নিভর লেনদেন ব্যবস্থা চালু হয়। নতুন স্বয়ংক্রিয় লেনদেন ব্যবস্থা চালুর পর ডিএসইর আগের ব্যবস্থাটি অকার্র্যকর হয়ে পড়বে। নতুন যুগে প্রবেশ করবে ডিএসইর লেনদেন ব্যবস্থা।
×