ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

সাতক্ষীরায় ভাঙ্গনের কবলে বেড়িবাঁধ

ইছামতিতে বালি উত্তোলন

প্রকাশিত: ০৬:৫১, ১০ ডিসেম্বর ২০১৪

ইছামতিতে বালি উত্তোলন

স্টাফ রিপোর্টার, সাতক্ষীরা ॥ সাতক্ষীরার সীমান্তনদী ইছামতী থেকে ইজারাবহির্ভূত স্থান হতে অবৈধভাবে বালি তোলা হচ্ছে। ফলে নদীর স্রোত বাংলাদেশ সীমান্ত দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের কালীগঞ্জের কামদেবপুর ও খারহাট এলাকার বেড়িবাঁধে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে বিস্তীর্ণ অঞ্চল প্লাবিত ও নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যে এলাকাবাসী এই ইজারাবহির্ভূত এলাকা থেকে অপরিকল্পিত বালি উত্তোলন বন্ধের দাবি জানিয়ে প্রশাসনের কাছে আবেদন করেছেন। এলাকাবাসী জানায়, ইছামতী নদীর আন্তর্জাতিক জল সীমানা বরাবর কয়েকটি বালির চর জেগে উঠেছে। ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বসিরহাট মহকুমার হিঙ্গলগঞ্জ থানাধীন ঘোষপাড়া ও বাংলাদেশের কালীগঞ্জের চক গোবিন্দপুরের মধ্যবর্তী স্থানে জেগে ওঠা চরের বাংলাদেশের অংশ থেকে অবৈধ ও অপরিকল্পিতভাবে ড্রেজার মেশিন দিয়ে নৌকায় করে এই বালি উত্তোলন করা হচ্ছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, বসন্তপুর গ্রামের জুলফিকার আলী ভুট্টো চলতি বাংলা সনের বৈশাখ মাস থেকে সুইলপুর মৌজার মধ্যে ১০ একর চরের বালি উত্তোলন করার ইজারা পেয়েছেন। সেখানে পর্যাপ্ত বালি উত্তোলনে সমস্যা দেখা দেয়ায় খারহাট ও চক গোবিন্দপুর চরের বালি তোলা হচ্ছে। সীমান্তবর্তী কামদেবপুর গ্রামের ছাদেক আলী জানান, খারহাট ও চক গোবিন্দপুরের নদী চরের বাংলাদেশের অংশে বালি উত্তোলন করার ফলে নদীর স্রোত এদেশের সীমান্তের বেড়িবাঁধে আঘাত হানছে। ফলে প্রতি বছর বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে ও পানি উপচে বিস্তীর্ণ অঞ্চল প্লাবিত হচ্ছে। গত দুই বছরে কামদেবপুর বেড়িবাঁধ সংলগ্ন ছাদেকআলির দুই বিঘা জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। একইভাবে অপরিকল্পিতভাবে বালি উত্তোলনের ফলে ভাড়াসিমলা ইউনিয়নের খারহাট, কামদেবপুর, চক গোবিন্দপুরসহ কয়েকটি গ্রামের শতাধিক বিঘা জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়ার কথা জানান খারহাটের জয়দেব দাস, সনৎ দাস, অসীম হালদার, কামদেবপুরের আব্দুল হামিদ, ফতেমা খাতুন ও আব্দুল গফফার। তারা অভিযোগ করে বলেন, ঠিকাদার জুলফিকার আলী স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করে দীর্ঘদিন ধরে সুইলপুরের পরিবর্তে খারহাট ও চক গোবিন্দপুরের চরে বালি উত্তোলন করে জনস্বার্থবিরোধী কাজ করে চলেছেন। এতে বেড়িবাঁধ সংলগ্ন বাসিন্দারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। পাশাপাশি পাঁচ কোটি টাকা ব্যয়ে সংস্কারাধীন বেড়িবাঁধের কাজ হুমকির মুখে পড়েছে। এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী বরাবর অভিযোগ করা হয়েছে। এরপরও বন্ধ হয়নি অবৈধ বালি উত্তোলন। এ ব্যাপারে কালীগঞ্জ উপজেলার বসন্তপুর গ্রামের ঠিকাদার জুলফিকার আলী ভুট্টো সাংবাদিকদের জানান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা সহকারি ভূমি কর্মকর্তার নির্দেশ মতো তিনি বালি উত্তোলন করছেন। তবে ইউএনও সৈয়দ ফারুক আহমেদ বলেন, আমি সরেজমিনে এলাকা ঘুরে কাউকে অবৈধভাবে বালি উত্তোলন করতে দেখিনি।
×