ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

বিসিবির বিরুদ্ধে অশালীন বক্তব্যের জের

অবশেষে ক্ষমা চাইলেন বাদল

প্রকাশিত: ০৫:৪৩, ১০ ডিসেম্বর ২০১৪

অবশেষে ক্ষমা চাইলেন বাদল

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ‘এমন কথা কেনই বলা হবে, যার জন্য ক্ষমা চাইতে হয়।’-কথাটি বলেছেন সাবেক এক অধিনায়ক। কথাটি বলার কারণ, বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন ও পরিচালকদের বিপক্ষে অশালীন বক্তব্য দেয়ার পর অবশেষে লেজ গুটিয়ে নিলেন ঢাকা লীগের দল লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের মালিক লুৎফর রহমান বাদল। ক্ষমাও চাইতে বাধ্য হলেন বিসিবির নির্বাচনেও লেজ গুটিয়ে পালানো বাদল। এই ক্ষমাতেই কী সব শেষ হয়ে যাচ্ছে? ক্লাব সমিতির এক কর্মকর্তা জানালেন, ‘অবশ্যই না। তিনি যা বলেছেন, তার জন্য শাস্তি তাকে পেতেই হবে। আমরা সোমবার তাকে, তার দলকে আজীবন বহিষ্কারের দাবি জানিয়েছি। সেই দাবি আমাদের থাকবেই। এ নিয়ে সোমবার রাতেই আমরা সভাও করেছি। যদি বাদলের শাস্তি না হয়, তাহলে আমরা লীগের দলগুলো সুপারলীগ খেলব না। উল্টা-পাল্টা বলার পর যদি ক্ষমা চেলেই সব হয়ে যায়, তাহলে তো যে কেউ উল্টা-পাল্টা যার তার নামে বলবে; ক্ষমা চাইবে।’ অর্থাৎ উল্টা-পাল্টা বলার পর ক্ষমা চাইলেও কাজ হচ্ছে না। শাস্তি বাদলকে পেতেই হবে। হঠাৎ করেই কেন এই ক্ষমা চাওয়া? বাদল নিজেই জানালেন, ‘আমরা ক্রিকেটের লোক, ক্রিকেটের স্বার্থ যে কোন সিদ্ধান্ত নিতে পারি।’ এমন বক্তব্যইবা দেয়া হলো কেন? তখন কী ক্রিকেটের স্বার্থের কথা মনে ছিল না? বললেন, ‘আবেগে বলে ফেলেছিলাম।’ হঠাৎ করেই সন্ধ্যায় সাংবাদিকদের মেইলে একটি বিজ্ঞপ্তি আসে। সেই বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়েছেন বাদলের জনসংযোগ কর্মকর্তা শেখ সাজিদ। সেই মেইল পরতে গিয়ে দেখা গেছে বাদলের স্বাক্ষরিত একটি পত্র। সেই পত্রেই বাদল ক্ষমা চেয়েছেন। পত্রে যা লেখা আছে, তা এখানে দেয়া হলো। বাদল লিখেছেন, ‘প্রিয় সাংবাদিক ভাইয়েরা, চলতি প্রিমিয়ার ক্রিকেট লীগে আমার দল লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ মাঠে এবং মাঠের বাইরে নানা ধরনের বৈষম্যের শিকার হওয়ায় গত ৪ ডিসেম্বর বিকেএসপিতে প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট একাডেমির বিপক্ষে গুরত্বপূর্ণ ম্যাচ শেষে আমি তাৎক্ষণিক উত্তেজনায় আবেগপ্রবণ হয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বেশকিছু মন্তব্য করেছি ও প্রতিক্রিয়া জানিয়েছি। আমার সেই মন্তব্য ও প্রতিক্রিয়ায় ক্রিকেটাঙ্গনের কেউ যদি দুঃখ ও কষ্ট পেয়ে থাকেন তবে আমি আমার সেদিনের সেই আবেগপ্রবণ মন্তব্যের জন্য আন্তরিকভাবে দুঃখপ্রকাশ করছি। আশা করছি আমার এই দুঃখপ্রকাশের মধ্য দিয়ে ক্রিকেটাঙ্গনে চলতি সব ধরনের উত্তেজনা ও ব্যক্তিকেন্দ্রিক বিদ্বেষের অবসান ঘটবে। ৪ ডিসেম্বর আমার সেই মন্তব্যে পর দেশের ক্রিকেটাঙ্গনে সম্প্রতি বেশকিছু বিবৃতি-পাল্টা বিবৃতি দেয়ার ঘটনা ঘটেছে। যা উভয় পক্ষের জন্যই সম্মানহানিকর। এসব মোটেও ক্রিকেটের স্পিরিটের সঙ্গে মানানসই নয়। আমি আশা করব আমার সে দিনের মন্তব্যের জন্য দুঃখপ্রকাশ করার পর এখন সব ধরনের অনাকাক্সিক্ষত ঘটনার অবসান হবে। আমি আরও আশা করব ঘরোয়া ক্রিকেটে সব দলের প্রতি একই নিয়ম বহাল থাকবে। পরিশেষে বলতে চাই নাজমুল হাসান পাপন বাংলাদেশের ক্রিকেটের অভিভাবক। আমার ক্রিকেট স্পিরিট তিনি অনুধাবন করতে পারবেন। আশা করি আমার এই লিখিত বিবৃতির মধ্য দিয়ে সম্প্রতি সমস্যার সমাধানে তিনি ইতিবাচক ভূমিকা পালন করবেন। তার হাত ধরে বাংলাদেশের ক্রিকেট সফলতা পাবে বলে আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি।’ বাদলের বোধ হয় হয়েছে। সবাই এখন বাদলের কাছে ভাল। যে পাপনকে ‘কারসাজি’র সঙ্গে জড়িত বলেছেন, যে বিসিবির পরিচালক খালেদ মাহমুদ সুজন ও ইসমাইল হায়দার মল্লিককে যা তা বলেছেন; সবার কাছে এখন ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছেন। সাংবাদিকদের কাছে এমন পত্র দেয়ার আগে বিসিবির কাছেও ক্ষমা চেয়ে একটি পত্র দিয়েছেন বাদল। এখন দেখার বিষয় ক্ষমা চেয়েই বাদল মুক্তি পেয়ে যান কিনা। নাকি অশালীন বক্তব্যগুলো দিয়ে গত কয়েকদিন ক্রিকেটে যে উচ্ছৃঙ্খল অবস্থার সৃষ্টি করেছেন এর জন্য শাস্তি পান।
×