ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

এ্যাডিলেড টেস্টে ওয়ার্নারের সেঞ্চুরিতে হিউজেস স্মরণ

প্রকাশিত: ০৫:৪৩, ১০ ডিসেম্বর ২০১৪

এ্যাডিলেড টেস্টে ওয়ার্নারের সেঞ্চুরিতে হিউজেস স্মরণ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ফিলিপ হিউজেস পৃথিবী ছেড়েছেন দশ দিনের ওপরে। তবু এ্যাডিলেড টেস্টের দলে ছিলেন ত্রয়োদশ খেলোয়াড় হিসেবে। ৬৩ সেকেন্ডের নীরবতা, মাইকেল ক্লার্কদের জার্সিতে হিউজেসের টেস্ট ক্যাপ নম্বর ‘৪০৮’Ñ অকালপ্রয়াত ক্রিকেটারের স্মরণে আয়োজনের কমতি রাখেনি ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া (সিএ)। মাঠেও তার প্রতিফলন। হিউজেস-স্মৃতি সঙ্গী করে প্রথম টেস্টের প্রথম দিনেই রাজত্ব অসিদের। নিজ অঙ্গনে ছড়ি ঘোড়ানোর স্টাইলটা রাজার মতোই হতো, যদি না অন্তিম সময়ে দুই উইকেট হারাত স্বাগতিকরা! ৩৫৪/৩Ñ ঠিক সেখানেই আরও তিন উইকেট তুলে নিয়ে দিনটা পুরোপুরি অসিদের হতে দেয়নি অতিথি ভারত। ৮৯.২ ওভারে অস্ট্রেলিয়ার সংগ্রহ ৩৫৪/৬। ৭২ রানে ব্যাট করছেন স্টিভেন স্মিথ। দিনের শেষ বলে রানের খাতা খোলার আগে ব্র্যাড হ্যাডিনডেক সাজঘরে ফিরিয়েছেন মোহাম্মদ শামি। সন্ধ্যার আগে আগে নাইটওয়াচম্যান নাথান লেয়ন (৩) আর হ্যাডিনকে (০) ফিরিয়ে অস্ট্রেলিয়াকে ধাক্কা দিয়েছেন শামি, তবে ওয়ার্নার তা-বে সামগ্রিকভাবে ভারতকে চাপে ফেলার কাজটা কিন্তু ঠিকই করে ফেলেছ অস্ট্রেলিয়া। ওয়ানডে স্টাইলে ব্যাট চালিয়ে মাত্র ১৪৫ বলে ১৬৩ রান করেছেন ক্রেজি ওপেনার। তার সঙ্গে যুক্ত হয় ক্লার্কের ‘রিটায়ার্ড হার্ট’ ৬০। পিঠের ব্যথাটা ফিরে আসায় সম্ভাবনাময় ইনিংস অসমাপ্ত রেখে মাঠ ছাড়তে বাধ্য হন অধিনায়ক। ওয়ার্নার-ক্লার্ক ফেরার পরও স্মিথ ও মার্শের দুটি মাঝারি ইনিংস অস্ট্রেলিয়ার সংগ্রহকে বড় অঙ্কের পথ দেখাতে সাহায্য করে। লেজের দিকের ব্যাটসম্যানদের নিয়ে অপরাজিত স্মিথ আজ লাঞ্চ পর্যন্ত ঘণ্টা দুয়েক খেলে দিতে পারলে ভারতের জন্য তা বাড়তি চাপ হয়ে দাঁড়াবে নিশ্চিত। ইশান্ত শর্মার দুর্ভাগ্যই বলতে হবে, দারুণ বোলিং করেও দিন শেষে একটি মাত্র উইকেট তার ঝুলিতে। সঙ্গী পেসার মোহাম্মদ শামি ও বরুণ এ্যারন প্রত্যেকের শিকার দুটি করে। ইশান্তের সহায়তায় অভিষিক্ত করণ শর্মা দিনের সেরা পারফর্মার ওয়ার্নারকে ফিরিয়ে দিয়ে পেয়েছেন জীবনের প্রথম উইকেট। একমাত্র বিশেষজ্ঞ লেগস্পিনার হিসেবে এই ম্যাচে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করছেন উত্তরপ্রদেশ প্রতিভা। তার আগে টস জিতে ব্যাটিং নেয়া অস্ট্রেলিয়ার ওপেনিং জুটির স্থয়িত্ব ৫০ রানের। ইশান্তের বলে ব্যক্তিগত ৯ রানে সিøপে শিখর ধাওয়ানের হাতে ধরা পড়েন ক্রিস রজার্স। শেন ওয়াটসনও প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন একইভাবে। এ্যারনের শিকারে পরিণত হওয়ার আগে ১৪ রান করেন এই তারকা ওপেনার। তৃতীয় উইকেট জুটিতে ওয়ার্নার-ওয়াটসন যোগ করেন মূল্যবান ১১৮ রান। এরপর স্মিথ-মার্শ ৮৭। ফলে ২৫৮ রানে তৃতীয় উইকেট হারানোর পরও ৪ উইকেটে সাড়ে তিন শ’র কোটা পার করে স্বাগতিকরা। কিন্তু ৮৮ ও ৯০তম দিনের একেবারে শেষ লগ্নে লেয়ন-হ্যাডিনকে তুলে নিয়ে ভারতকে রেসে ফেরান ওই শামিই। তবে প্রথম দিনে ওয়ার্নারের কথা আলাদ করে বলতেই হবে। আবেগের ম্যাচে সেঞ্চুরি পূরণ করেই প্রিয় বন্ধু হিউজেসকে মনে পড়ে তার। হয়ে ওঠেন আবেগপ্রবণ, জার্সির হাতায় চোখ মোছেন ওয়ার্নার। আকাশের দিকে তাকিয়ে যেন খুঁজে নিতে চাইলেন অকালপ্রয়াত সতীর্থকে। ব্যাট হাতে ধারাবাহিকতার প্রতিমূর্ত হয়ে উঠেছেন ২৮ বছর বয়সী নিউসাউথ ওয়েলস হিরো। হিউজেসও নিউসাউথ ওয়েলসেরই ক্রিকেটার ছিলেন। এ্যাডিলেড ওভালে ওয়ার্নারের জন্য পয়মন্ত। এখানে তিন টেস্টে তার গড় ষাটের ওপর। রান তিন শতাধিক। সর্বশেষ পাঁচ টেস্টের দশ ইনিংসে পাঁচটি সেঞ্চুরি হাঁকালেন বাঁহাতি ওপেনার। ইনিংসগুলো দেখুনÑ ১১৫, ৭০, ৬৬, ১৩৫, ১৪৫, ১৩৩, ২৯, ১৯, ৫৮ ও ১৪৫! খেলা শেষে স্মৃতিকাতর ওয়ার্নার বলেন, ‘সেঞ্চুরি পূরণের পর মনে হচ্ছিল অপর প্রান্ত থেকে হিউজেস এসে আমাকে জড়িয়ে ধরবে। এই সেঞ্চুরি ওর জন্য, ওর জন্যই আমরা এখানে জয় দিয়ে শুরু করতে চাই।’ স্কোর ॥ অস্ট্রেলিয়া প্রথম ইনিংস ৩৫৪/৬ (৮৯.২ ওভার; ওয়ার্নার ১৪৫, স্মিথ ৭২*, ক্লার্ক ৬০ রিটায়ার্ড হার্ট, মিচেল মার্শ ৪১, ওয়াটসন ১৪; শামি ২/৮৩, এ্যারন ২/৯৫, ইশান্ত ১/৫৬, করন শর্মা ১/৮৯) ** প্রথম দিন শেষে।
×