ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

খুলনা ও বরিশালে পল্লী বিদ্যুত সম্প্রসারণ প্রকল্প অনুমোদন

প্রকাশিত: ০৫:০২, ১০ ডিসেম্বর ২০১৪

খুলনা ও বরিশালে পল্লী বিদ্যুত সম্প্রসারণ প্রকল্প অনুমোদন

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ বিদ্যুতের আওতায় আসছে খুলনা ও বরিশাল বিভাগের সাড়ে চার লাখ নতুন গ্রাহক। এজন্য পল্লী বিদ্যুত সম্প্রসারণ সংক্রান্ত দুটি প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনেতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক)। সেই সঙ্গে আরও সাতটিসহ মোট নয়টি উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়েছে। মঙ্গলবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এ অনুমোদন দেয়া হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপার্সন শেখ হাসিনা। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন পরিকল্পনা মন্ত্রী আহম মুস্তফা কামাল। এ সময় উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনা সচিব ভূঁইয়া সফিকুল ইসলাম। নয়টি প্রকল্প বাস্তবায়নে মোট ব্যয় হবে ৭ হাজার ৯০০ কোটি ১০ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারী তহবিল থেকে ৫ হাজার ৪৩৬ কোটি ৫২ লাখ টাকা, সংস্থার নিজস্ব তহবিল থেকে ১৮৫ কোটি ৩৯ লাখ টাকা এবং বৈদেশিক সহায়তা থেকে ২ হাজার ২৭৮ কোটি ১৯ লাখ টাকা। পরিকল্পনা মন্ত্রী বলেন, এই সরকার সারাদেশের মানুষের মাঝে বিদ্যুত সুবিধা পৌঁছে দিতে চায়। সে লক্ষ্যেই পল্লী বিদ্যুত সম্প্রসারণ করা হচ্ছে। আমরা মনে করি বিদ্যুত মানুষের জীবনকে পাল্টে দিতে পারে। জীবনমান উন্নত করে। তিনি জানান, দারিদ্র্যপীড়িত এলাকার শিশুদের অপুষ্টির হাত থেকে রক্ষা করতে সম্প্রসারণ করা হচ্ছে স্কুল ফিডিং কর্মসূচী। এর ফলে কয়েক লাখ শিশু বিদ্যালয় দিবসে পুষ্টিকর বিস্কুট খেতে পারবে। অনুমোদিত প্রকল্পগুলো হচ্ছে, পল্লী বিদ্যুতায়ন সম্প্রসারণ বরিশাল বিভাগীয় কার্যক্রম-২ প্রকল্প, এটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় হবে ৮৩৮ কোটি ৯০ লাখ টাকা। পল্লী বিদ্যুতায়ন সম্প্রসারণ খুলনা বিভাগীয় কার্যক্রম-২ প্রকল্প, এটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ৯৯৫ কোটি ৫০ লাখ টাকা। জামালপুর-মাদারগঞ্জ সড়ক প্রশস্তকরণ ও মজবুতীকরণ প্রকল্প, এর ব্যয় ৫৪ কোটি ৩০ লাখ টাকা। ঢাকা ওয়াটার সাপ্লাই এ্যান্ড স্যানিটেশন প্রকল্প, এটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় হবে ৬৪৪ কোটি ২২ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারী তহবিল থেকে ৩৬ কোটি ২২ লাখ টাকা এবং বৈদেশিক সহায়তা থেকে ৬০৮ কোটি টাকা। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের আপ-গ্রেডেশন প্রকল্প, এটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় হবে ৫৬২ কোটি ৭৭ লাখ টাকা। বাংলাদেশ বিমানবন্দরসমূহের সেফটি এবং সিকিউরিটি ব্যবস্থার উন্নয়ন প্রকল্প, এটি বাস্তবায়নে মোট হবে ২৯৩ কোটি ২৮ লাখ টাকা। গ্রামীণ রাস্তায় ছোট ছোট (১২ মিটার দৈর্ঘ্য পর্যন্ত) সেতু/ কালভার্ট নির্মাণ (৩য় পর্যায়) প্রকল্প, এটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় হবে এক হাজার ৮৫ কোটি ৯ লাখ টাকা। নতুন ডাকাতিয়া ও পুরাতন ডাকাতিয়া ছোট ফেনী নদী নিষ্কাশন প্রকল্প, এটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় হবে ২৮০ কোটি ৫২ লাখ টাকা। দারিদ্র্যপীড়িত এলাকায় স্কুল ফিডিং কর্মসূচী প্রকল্প, এটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় হবে ৩ হাজার ১৪৫ কোটি ৫২ লাখ টাকা। প্রকল্পের বিস্তারিত হচ্ছে, বিদ্যুতের আওতায় আসছে বরিশাল বিভাগের ২ লাখ নতুন গ্রাহক। পল্লী বিদ্যুতায়ন সম্প্রসারণের ফলে এ গ্রাহকদের বিদ্যুত সুবিধা দেয়া সম্ভব হবে। এ জন্য পল্লী বিদ্যুতায়ন সম্প্রসারণ বরিশাল বিভাগীয় কার্যক্রম-২ নামের একটি প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়েছে। ২০১৮ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের কাজ করবে বিদ্যুত বিভাগের আওতায় বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড। প্রকল্পটির মাধ্যমে বরিশাল বিভাগের ছয়টি পল্লী বিদ্যুত সমিতিতে ৫ হাজার ১০০ কিলোমিটার নতুন বৈদ্যুতিক লাইন নির্মাণ, ৪০০ কিলোমিটার বৈদ্যুতিক লাইন পুনর্বাসন বা ক্ষমতাবর্ধন, নয়টি নতুন ৩৩/১১ কেভি উপকেন্দ্র নির্মাণ ও ছয়টি উপকেন্দ্রের ক্ষমতাবর্ধন এবং ৫ সেট রিভার ক্রসিং টাওয়ার নির্মাণ করা হবে। অন্যদিকে বিদ্যুতের আওতায় আসছে খুলনা বিভাগের আড়াই লাখ নতুন গ্রাহক। এ জন্য হাতে নেয়া হচ্ছে পল্লী বিদ্যুতায়ন সম্প্রসারণ খুলনা বিভাগীয় কার্যক্রম-২ প্রকল্প। এটি বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ৯৯৫ কোটি ৫০ লাখ টাকা। ২০১৮ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের কাজ শেষ করবে বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড। প্রকল্পটির মাধ্যমে খুলনা বিভাগের ৯টি পল্লী বিদ্যুত সমিতিতে ৫ হাজার ৬০০ কিলোমিটার নতুন বৈদ্যুতিক লাইন নির্মাণ, ৯০০ কিলোমিটার বৈদ্যুতিক লাইন পুনর্বাসন বা ক্ষমতাবর্ধন, ১৬টি নতুন ৩৩/১১ কেভি উপকেন্দ্র নির্মাণ ও সাতটি উপকেন্দ্রের ক্ষমতাবর্ধন করা হবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে খুলনা বিভাগের পল্লী এলাকার ২ লাখ ৫০ হাজার নতুন গ্রাহককে বিদ্যুত সংযোগ প্রদান করা হবে তাই প্রকল্পটি অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
×