ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

চট্টগ্রামে দুটি কলেজ শিবিরমুক্ত করতে প্রয়োজনে কঠোর আঘাত ॥ মহিউদ্দিন

প্রকাশিত: ০৫:১১, ৯ ডিসেম্বর ২০১৪

চট্টগ্রামে দুটি কলেজ শিবিরমুক্ত করতে প্রয়োজনে কঠোর আঘাত ॥ মহিউদ্দিন

স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম অফিস ॥ বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের বিদায়ের পর অতিক্রান্ত হয়েছে প্রায় ৮ বছর। কিন্তু এখনও চট্টগ্রাম সরকারী কলেজ ও হাজী মুহম্মদ মহসিন কলেজ রয়ে গেছে ছাত্রশিবিরের নিয়ন্ত্রণে। শুধু নিয়ন্ত্রণ বললেই ভুল হবে, জামায়াতে ইসলামের এই অঙ্গসংগঠন চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী এ দুটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে এমনই কব্জা করে রেখেছে যে, সেখানে অন্য কোন সংগঠনের তৎপরতা এক প্রকার নিষিদ্ধ। সর্বশেষ গত ২৬ নবেম্বর শিক্ষামন্ত্রীর উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত কলেজ শিক্ষকদের এক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গিয়ে বাধাপ্রাপ্ত হয় ছাত্রলীগ। সেদিন মূল ফটকে অবস্থান নিয়ে ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীরা ছাত্রলীগকে বাধা প্রদান করে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ছাত্রশিবির নিয়ন্ত্রিত এ দুটি কলেজকে মুক্ত করার লক্ষ্যে মাঠে নেমেছে ছাত্রলীগ। সংগঠনটির ব্যানারে সোমবার নগরীর লালদীঘি মাঠে আয়োজিত হয় বিশাল এক ছাত্রসমাবেশ। সমাবেশ থেকে চট্টগ্রাম কলেজ ও হাজী মুহম্মদ মহসিন কলেজকে মুক্ত করার ঘোষণা দেয়া হয়। লালদীঘি মাঠের সমাবেশে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিন, ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকী নাজমুল আলম, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতা জয়দেব নন্দী, ইমরানুল হক, আনু আহমেদ, হাবিবুজ্জামান তারেক, তরিকুল ইসলাম প্রমুখ। সমাবেশ থেকে যে কোন মূল্যে অপশক্তি ছাত্রশিবিরকে প্রতিহত করার ঘোষণা দেয়া হয়। নেতৃবৃন্দ আগামী ১৫ দিনের মধ্যে এ দুই কলেজের ছাত্রাবাস থেকে অবৈধদের বের করে দিয়ে মেধার ভিত্তিতে প্রকৃত শিক্ষার্থীদের সিট বরাদ্দের দাবি জানান। অন্যথায় কলেজ সংলগ্ন প্যারেড ময়দানে ছাত্রলীগের বিভাগীয় সমাবেশ করে কঠোর কর্মসূচী প্রদান করার হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন। চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি সাবেক মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী বলেন, চট্টগ্রাম কলেজ ও হাজী মুহম্মদ মহসীন কলেজে সশস্ত্র বহিরাগত শিবির ক্যাডাররা আস্তানা গেড়েছে। তারা বছরের পর বছর জোরপূর্বক ছাত্রাবাসে অবস্থান করে সাধারণ শিক্ষার্থীদের জিম্মি করে রেখেছে। ঐতিহ্যবাহী এ দুটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে মুক্ত করতে প্রয়োজনে কঠোর আঘাত হানা হবে। ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকী নাজমুল আলম বলেন, এ চট্টগ্রামে স্বাধীনতাবিরোধী জামায়াতের অঙ্গসংগঠন ছাত্রশিবিরের ক্যাডারদের হাতে অনেক রক্ত ঝরেছে। আর রক্ত ঝরতে দেয়া হবে না। শিবিরের ক্যাডাররা অনেক খুন করেছে, অনেকের হাত পায়ের রগ কেটেছে। এ অপশক্তিকে আর বাড়তে দেয়া হবে না। তিনি বলেন, আগামী ১৫ দিনের মধ্যে চট্টগ্রাম কলেজ ও সরকারী হাজী মুহম্মদ মহসীন কলেজের ছাত্রাবাস থেকে বহিরাগত সশস্ত্র শিবির ক্যাডারদের বের করে দিয়ে প্রকৃত ছাত্রদের তুলতে হবে। যদি তা না হয় তাহলে চট্টগ্রাম কলেজ সংলগ্ন প্যারেড ময়দানে ছাত্রলীগের বিভাগীয় মহাসমাবেশ করে কঠোর কর্মসূচী দেয়া হবে। ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দ তাঁদের বক্তব্যে বলেন, চট্টগ্রাম কলেজ ও হাজী মুহম্মদ মহসীন কলেজের ছাত্রবাসগুলোতে যারা অবস্থান করছে তাদের অধিকাংশই প্রকৃত ছাত্র নয়। বেশির ভাগই বহিরাগত ক্যাডার। ছাত্রাবাসগুলোতে আগ্নেয়াস্ত্রসহ বিভিন্ন ধরনের অস্ত্রের মজুদ গড়েছে শিবির। সাধারণ ছাত্ররা তাদের কাছে জিম্মি হয়ে আছে। শিবির ক্যাডারদের কবল থেকে সাধারণ শিক্ষার্থীদের যে কোন মূল্যে মুক্ত করা হবে। সমাবেশ চলাকালে মাঠের অভ্যন্তরে কিছুটা বিশৃঙ্খল পরিবেশের সৃষ্টি হয়। ছাত্রলীগের বিভিন্ন কলেজ শাখা নেতাদের অনুসারীদের মধ্যে মাঠে অবস্থান নিয়ে এই বিশৃঙ্খলা ঘটে। তবে নেতৃবৃন্দের ও পুলিশী হস্তক্ষেপে তা দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আসে।
×