ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

উত্তরাঞ্চলে শীত জেঁকে বসছে

প্রকাশিত: ০৪:৪৯, ৮ ডিসেম্বর ২০১৪

উত্তরাঞ্চলে শীত জেঁকে বসছে

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ হিমালয় সংলগ্ন দেশের উত্তরাঞ্চলে শীত জেঁকে বসতে শুরু করেছে। বেলা পড়লেই শীতের প্রকোপ বাড়ছে। সন্ধ্যায় কুয়াশার চাদর মুড়ি দিচ্ছে। উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলো থেকে স্টাফ রিপোর্টার, নিজস্ব সংবাদদাতা ও সংবাদদাতাদের পাঠানো খবর : নীলফামারী ॥ শীতের ইনিংসে এবার মৃদু শৈত্যপ্রবাহ আর ঘন কুয়াশার কবলে পড়েছে উত্তরের নীলফামারীসহ তার পার্শ্ববর্তী এলাকাসমূহ। রবিবার সকাল থেকে সূর্যের মুখ দেখা যায়নি। ফলে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে উঠেছে। রবিবার ভোর থেকে কনকনে শীতের সঙ্গে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ ও ঘন কুয়াশা ঢেকে রাখে এলাকা। শীত বস্ত্রের অভাবে বাড়িতে থাকা খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণ করছেন দরিদ্র মানুষ। দিনের বেলাতেও যানবাহন চলাচল করছে হেডলাইট জ্বালিয়ে। কষ্ট হলেও শীত উপেক্ষা করে খাদ্য সঙ্কটের কারণে নিজ নিজ কাজ-কর্মে যাচ্ছেন দিনমজুর আর শ্রমিকরা। রোদ না থাকায় মিল চাতালে পড়ে রয়েছে সিদ্ধ ধান। সবচেয়ে বিপাকে পড়েছেন তিস্তা পাড়ের দরিদ্র মানুষ। শীতে কাবু লক্ষাধিক মানুষ অতিকষ্টে দিনাতিপাত করছে। সেখানে আগুনের কু-ুলি জ্বালিয়ে শীত নিবারণ করছে মানুষ। রাজশাহী ॥ রাজশাহী অঞ্চলে হঠাৎ করে তাপমাত্রা হ্রাস পেতে শুরু করেছে। গত কয়েকদিন তাপমাত্রার খুব একটা হেরফের না হলেও রবিবার মধ্য রাত থেকেই এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। গত ক’দিন ধরে দুপুরের আগে সূর্যের দেখা মিলছে না। রাজশাহী অঞ্চলের আকাশে দুপুরের পর সামান্য সূর্যের অলো উঁকি দিলেও বেলা গড়াতেই তা আবার ঢেকে যাচ্ছে ঘন কুয়াশায়। উত্তরের হিমেল হাওয়ায় ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে শীত। এরই মধ্যে ছিন্নমূল ও খেটে খাওয়া মানুষ পড়েছে চরম দুর্ভোগে। সকাল ও সন্ধ্যায় শীতের তীব্রতা থেকে রক্ষা পেতে অনেকেই খড় জ্বালিয়ে আগুনের তাপ নিচ্ছে। কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়েছে এ অঞ্চল। এদিকে শীতের তীব্রতা বৃদ্ধি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে গরম কাপড়ের দোকানগুলোতে বেড়েছে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়। রাজশাহী আবহাওয়া অফিস জানায়, গত কয়েকদিন ধরেই এ অঞ্চলে বইছে মৃদু হাওয়া। দিনের অধিকাংশ সময় কুয়াশা বিরাজ করছে। রাজশাহীতে রবিবার সর্বনি¤œ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৫ দশমিক ৩ ডিগ্রী সেলসিয়াস। এর আগে শনিবার সর্বনি¤œ তাপমাত্রা ছিল ১৫ দশমিক ৬ ডিগ্রী সেলসিয়াস। দুপুর পর্যন্ত সূর্যের আলো না থাকায় শীত অনুভূত হচ্ছে। কুয়াশাচ্ছন্ন আকাশ আর মৃদু বাতাসের কারণে শীত অনুভূত হলেও এখনও তীব্রতা তেমন বৃদ্ধি পায়নি। তবে দুই একদিনের মধ্যে শীত আরো বাড়বে বলে জানায় আবহাওয়া অফিস। দিনাজপুর ॥ হিমালয়ের পাদদেশে অবস্থিত জেলা দিনাজপুরে শীত এখন জেঁকে বসতে শুরু করেছে। গত দুদিন ধরে তারই বার্তা দিয়ে যাচ্ছে আবহাওয়া। চলছে রোদের লুকোচুরি খেলা। দিনে-দুপুরের আগে সূর্যের মুখ দেখা যায় না। আবার কিছুক্ষণ থাকার পরই আবার সূর্যও ঢেকে যাচ্ছে কুয়াশার চাদরে। সেই সঙ্গে গত ২ দিন ধরে হালকা হিমেল বাতাসের ঝাপ্টায় দুর্ভোগে পড়েছেন ছিন্নমূল ও খেটে খাওয়া মানুষ। উত্তরাঞ্চলের জেলা দিনাজপুরে কয়েকদিন ধরেই তাপমাত্রা নিচে নামলেও তেমনি শীত অনুভূত হয়নি এই জেলায়। কিন্তু গত ২ দিন থেকে হিমেল বাতাস বইতে শুরু করায় বেড়ে গেছে শীতের মাত্রা। কুয়াশার প্রভাব তেমনটি না থাকলেও হিমেল বাতাসের ঝাপ্টায় দুর্ভোগে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। পাশাপাশি গত ২ দিন ধরে সূর্য খেলছে লুকোচুরি খেলা। দিনের মাত্র ২-৩ ঘণ্টা সূর্যের মুখ দেখা গেলেও গরমের উষ্ণতা মাত্র নেই। শীতের হাত থেকে রক্ষা পেতে ছিন্নমূল মানুষ খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন। পাশাপাশি তারা সরকারীভাবে গরম কাপড় সাহায্য দেয়ার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন। গাইবান্ধা ॥ উত্তরের হিমেল হাওয়ার প্রবাহ শুরু হওয়ায় শনিবার রাত থেকে গাইবান্ধার জেলা সর্বত্র হঠাৎ করেই কনকনে ঠা-া বাতাসের সঙ্গে শীতের তীব্রতা বাড়তে শুরু করেছে। দিনভর সূর্যের আলো দেখা যায়নি। ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা থাকছে প্রকৃতি। গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির মতো ঝরছে কুয়াশা। সকাল থেকেই ঘন কুয়াশার কারণে কিছু কিছু সড়কে যানবাহনকে হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করতে হয়। শীতে সাধারণ মানুষ বিশেষ করে শিশু এবং বয়স্করা এতে কষ্ট পাচ্ছে বেশি। শীতের কবল থেকে বাঁচার জন্য গ্রামাঞ্চলে লোকজন খড়কুটো জ্বালিয়ে গা গরম করছে।
×