অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ পুঁজিবাজারে গত সপ্তাহে বেশিরভাগ কার্যদিবসেই মূল্যসূচক বেড়েছে। প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের পাশাপাশি সব ধরনের বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ বাড়ার কারণে প্রধান বাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে পাঁচ কার্যদিবসের তিনটিতেই সূচকের বৃদ্ধি ঘটেছে। আর বাকি দুইটিতে সূচক কমেছে। এছাড়া বড় ও ছোট সব মূলধনী কোম্পানির দর বৃদ্ধিতে মূল্যসূচক ও বাজার মূলধনের পাশাপাশি লেনদেনও বেড়েছে। গত সপ্তাহে ডিএসইর সার্বিক লেনদেন বেড়েছে ২১ দশমিক ৫২ শতাংশ।
সাপ্তাহিক বাজার পর্যালোচনায় বলা হয়েছে, সপ্তাহ শেষে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ৩.৯৭ শতাংশ বা ১৮৯ পয়েন্ট। আগের সপ্তাহ শেষে ডিএসইর সার্বিক সূচক কমেছিল কমেছিল ১.৭০ শতাংশ বা ৮৪ পয়েন্ট। শরিয়াহ সূচক সপ্তাহ শেষে ৪.৯৩ শতাংশ বা ৫৪ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ১১৬১ পয়েন্টে। আর ডিএসই-৩০ ইনডেক্স সপ্তাহ শেষে ৪.৭০ শতাংশ বা ৮২ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ১৮৪০ পয়েন্টে।
গত সপ্তাহে ডিএসইতে টাকার অংকে লেনদেন বেড়েছে ২১.৫২ শতাংশ বা ৩৫০ কোটি ১৯ লাখ ২৫ হাজার ৬৩২ টাকা। আগের সপ্তাহে ডিএসইতে টাকার অংকে লেনদেন কমেছিল ১৭ শতাংশ বা ৬৪২ কোটি ১৩ লাখ ৬৬ হাজার ৫৯৮ টাকা।
সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৯৭৭ কোটি ৫০ লাখ ৪৮ হাজার ৮৮৩ টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট। আগের সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে লেনদেন হয়েছিল ৩ হাজার ১৩৫ কোটি ৬ লাখ ২৬ হাজার ৫৮১ টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট।
গত সপ্তাহের প্রতি কার্যদিবস ডিএসইতে দৈনিক গড় শেয়ার লেনদেন বেড়েছে ২১.৫২ শতাংশ বা ৭০ কোটি ৩ লাখ ৮৫ হাজার ১২৭ টাকা। আগের সপ্তাহে প্রতি কার্যদিবসে ডিএসইতে দৈনিক গড় শেয়ার লেনদেন কমেছিল ১৭ শতাংশ বা ১২৮ কোটি ৪২ লাখ ৭৩ হাজার ৩২০ টাকা।
গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে মোট শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৩৯৫ কোটি ৫০ লাখ ৯ হাজার ৭৭৭টি। আগের সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে মোট শেয়ার লেনদেন হয়েছিল ৩২৫ কোটি ৪৬ লাখ ২৪ হাজার ৬৫০টি। অর্থাৎ শেয়ারের হিসাবে লেনদেন বেড়েছে ২১.৫২ শতাংশ বা ৭০ কোটি ৩ লাখ ৮৫ হাজার ১২৭টি।
সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রবিবার লেনদেন হয়েছে ২৩২ কোটি ৩৭ লাখ ৪৭ হাজার টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট, সোমবার ৩৪১ কোটি ৫৩ লাখ ৪৩ হাজার টাকা, মঙ্গলবার ৩৭৩ কোটি ৫৬ লাখ ৬৬ হাজার টাকা, বুধবার ৫১৬ কোটি ৫৩ লাখ ৪১ হাজার টাকা ও বৃহস্পতিবার লেনদেন হয়েছে ৫১৩ কোটি ৪৯ লাখ ৫০ হাজার টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট।
সপ্তাহজুড়ে লেনদেন হওয়া ৩১৮টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ২৩৬টির, কমেছে ৫৯টির, দর অপরিবর্তিত রয়েছে ২২টির এবং লেনদেন হয়নি ১টি কোম্পানির শেয়ার।
গত সপ্তাহে ডিএসইর বাজার মূলধন বেড়েছে ৪.১১ শতাংশ বা ১২ হাজার ৯৫৮ কোটি ৪৭ লাখ ২ হাজার ৯১ টাকা। আগের সপ্তাহে ডিএসইর বাজার মূলধন কমেছিল ১.৬৫ শতাংশ বা ৫ হাজার ৪৫৮ কোটি ১৬ লাখ ৪৯ হাজার ৫৭০ টাকা। সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে বাজার মূলধন ছিল ৩ লাখ ১৫ হাজার ৪৫৬ কোটি ৮২ লাখ ৯০ হাজার ৩৬৫ টাকা এবং শেষ কার্যদিবসে বাজার মূলধন ছিল ৩ লাখ ২৮ হাজার ৪১৫ কোটি ২৯ লাখ ৯২ হাজার ৪৫৬ টাকা।
গত সপ্তাহে ডিএসইতে ‘এ’ ক্যাটাগরির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৮০.৯৫ শতাংশ, ‘বি’ ক্যাটাগরির ২.০২ শতাংশ, ‘এন’ ক্যাটাগরির ১২.৫২ শতাংশ এবং ‘জেড’ ক্যাটাগরির ৪.৫১ শতাংশ। আগের সপ্তাহে ডিএসইতে ‘এ’ ক্যাটাগরির শেয়ার লেনদেন হয়েছিল ৮০.৯৫ শতাংশ, ‘বি’ ক্যাটাগরির ২.০২ শতাংশ, ‘এন’ ক্যাটাগরির ১২.৫২ শতাংশ এবং ‘জেড’ ক্যাটাগরির ৪.৫১ শতাংশ।
একটানা নিম্নমুখী প্রবণতার পর বাজারে কিছুটা উর্ধমুখী প্রবণতা ফিরে এসেছে। তবে সপ্তাহজুড়ে বড় মূলধনী কোম্পানিগুলোর শেয়ার দর বাড়ার কারণে সার্বিক বাজারে উর্ধমুখী প্রবণতা বিরাজ করছে বলে মনে করছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা। তাদের মতে, বাজারে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ বাড়ার কারণে ইতিবাচক প্রবণতা ফিরেছে।
সাপ্তাহিক লেনদেনের সেরা কোম্পানিগুলো হলো : কেয়া কসমেটিকস, বেক্সিমকো ফার্মা, এবি ব্যাংক, গ্রামীণফোন, সামিট এলায়েন্স পোর্ট লিমিটেড, ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ড, যমুনা অয়েল, হামিদ ফেব্রিক্স, স্কয়ার ফার্মা ও তিতাস গ্যাস।
দর বৃদ্ধির সেরা কোম্পানিগুলো হলো : সাফকো স্পিনিং, গ্রামীণফোন লিমিটেড, অগ্নি সিস্টেম, কাসেম ড্রাইসেল, দেশবন্ধু পলিমার, এ্যাপেক্স স্পিনিং, ফু-ওয়াং ফুড, সামিট এলায়েন্স পোর্ট লিমিটেড, মোজাফফর হোসেন স্পিনিং মিলস লিমিটেড ও বিডি ফাইন্যান্স।
দর হারানোর সেরা কোম্পানিগুলো হলো : অলিম্পিক ইন্ড্রাস্টিজ, নদার্ন জুটস, খান ব্রাদার্স পিপি ওভেন, মুন্নু স্টাফলারস, সোনালী আঁশ, সাভার রিফ্র্যাক্টরিজ, এলআর গ্লোবাল মিউচুয়াল ফান্ড ১, আইসিবি এএমসিএল ২য় মিউচুয়াল ফান্ড, এটলাস বাংলাদেশ ও বঙ্গজ।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: