ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

নৃত্যনাট্য বাঁদি-বান্দার রূপকথার অনবদ্য পরিবেশনায় মুগ্ধ দর্শক

প্রকাশিত: ০৫:৫৮, ৬ ডিসেম্বর ২০১৪

নৃত্যনাট্য বাঁদি-বান্দার রূপকথার অনবদ্য পরিবেশনায় মুগ্ধ দর্শক

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আরব্য রজনীর বহুল আলোচিত রূপকথা আলী বাবা ও চল্লিশ চোর। অনবদ্য কাহিনীর কারণে রূপকথাটি রূপান্তরিত হয়েছে সিনেমা ও কার্টুনে। এবার তা রূপ নিল অনবদ্য নৃতনাট্যে। বাঁদি-বান্দার রূপকথা শীর্ষক নৃত্যনাট্যটি মঞ্চস্থ হলো শুক্রবার। হেমন্তের সন্ধ্যায় শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার মূল মিলনায়তনে পরিবেশিত হলো নাচের মুদ্রায় উপস্থাপিত রূপকথাটি। অনন্য পরিবেশনায় মুগ্ধ হলো নৃত্যানুরাগী দর্শক। মুহুর্মুহু করতালিতে মুখরিত হলো মিলনায়তন। সব মিলিয়ে নৃত্যানুরাগীদের জন্য যেন নতুন অভিজ্ঞতা হয়ে ধরা দিল নৃত্যনাট্যটি। ৭০ শিল্পীর নাচের মুদ্রার ও অভিব্যক্তির সঙ্গে থ্রি ডাইমেনশন প্রজেকশন এবং সেট ও প্রপসের ব্যবহারে নবমাত্রা পরিবেশনাটি। চমৎকার আলোকসজ্জার মাঝে নাচের ভেতর দিয়ে কখনও রাজদরবার আবার কখনও ঘন জঙ্গলে কাঠুরিয়ার তৎপরতা কিংবা অশ্বারোহী দস্যুবাহিনীর ছুটের চলার দৃশ্যগুলো ভিন্ন অভিজ্ঞতা ছড়িয়ে দর্শকের নয়নে। গত এক বছর ধরে শ্রমসাধ্য অনুশীলনের মাধ্যমে এই নৃত্যনাট্যটি মঞ্চে এনেছে সৃষ্টি কালচারাল সেন্টার। ঘটনাক্রমে চল্লিশ চোরের আগমন ঘটে রাজপ্রাসাদে। রূপকথার নায়িকা ক্রীতদাসী বুদ্ধিমতী মর্জিনার কৌশলে ঘায়েল হয় চল্লিশ চোর। দস্যুদের কবল থেকে রক্ষা পায় রাজপ্রাসাদ। ঘটনার নানা পর্যায়ে উঠে আসে কাঠুরিয়া আলীবাবা, কাফ্রি বান্দা ক্রীতদাস আবদুল্লা, স্বার্থপর কাসেম, কেরামতি দেখানো মুস্তাফাসহ নানা চরিত্র। মানুষের ভেতরে থাকা অমানবিকতা, লোভ, স্বার্থপরতা, হিংসা সবকিছু জয় করে মানুষকে মানবিক ও প্রেমিক করে তোলার কাহিনী উপস্থাপিত হয় নৃত্যনাট্যের গল্পে। এমন সব বিষয়কে নাচের মুদ্রা ও অভিব্যক্তির সঙ্গে সংলাপ এবং গানের মেলবন্ধনে সাজানো হয়েছে নৃত্যনাট্যটি। সুরের সঙ্গে আলোকছটার সৌন্দর্যে উপস্থাপিত হয়েছে বাঁদি ও বান্দার অনবদ্য কল্পকাহিনী। সুকল্যাণ ভট্টাচার্যের নৃত্যভাবনা ও পরিচালনায় আরব রজনীর রূপকথা আলী বাবা চল্লিশ চোর অবলম্বনের নির্মিত হয়েছে নৃত্যনাট্য বাঁদি-বান্দার রূপকথা। মর্জিনার চরিত্রে রূপ দিয়েছেন নন্দিত নৃত্যশিল্পী শামীম আরা নীপা। এছাড়া অন্যান্য চরিত্রে রূপ দিয়েছেন শিবলী মোহাম্মদ, আনিসুল ইসলাম হিরু, সুকল্যান ভট্টাচার্য, ডলি ইকবাল, সাবরিনা নিসা, আবুল হাসান তপন, রানা ওয়াদুদসহ ঢাকার কয়েকটি নৃত্যদলের ৭০ নৃত্যশিল্পী। বিভিন্ন চরিত্রে কণ্ঠ ও সুুর দিয়েছেন অন্বেষা, ইন্দ্রানী হালদার, শ্রীকান্ত আচার্য, নচিকেতা, লোপা মুদ্রা মিত্র, অরিজিত চক্রবর্তী, জয়তী চক্রবর্তী, মনোময় চক্রবর্তী, সুভজিৎ বকসি, রাঘব চ্যাটাজ্জী ও শংকর তালুকদার। পরিবেশনার শুরুতে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন নওয়াজেশ আলী খান। প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন সংস্কৃতি সচিব রণজিৎ কুমার বিশ্বাস। আর নৃত্যনাট্যটি উপভোগ করেছেন সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হক, লেখিকা আনোয়ারা সৈয়দ হক, শিক্ষাবিদ আবদুল্লা আবু সায়ীদ, চলচ্চিত্র শিল্পী আলমগীর, চিত্রনায়ক ফেরদৌসসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বরা। আজ শনিবার সন্ধ্যায় একই স্থানে অনুষ্ঠিত হবে নৃত্যনাট্যটির দ্বিতীয় প্রদর্শনী। চাকমা ভাষায় নির্মিত প্রথম চলচ্চিত্রের প্রিমিয়ার ॥ ১৩তম স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র উৎসবের ™ি^তীয় দিন শুক্রবার সুফিয়া কামাল জাতীয় গণগ্রন্থাগারের শওকত ওসমান মিলনায়তনে হয়ে গেল অং রাখাইনের চাকমা ভাষায় নির্মিত চলচ্চিত্র ‘মর থেংগারি’র প্রিমিয়ার শো। ইংরেজীতে চলচ্চিত্রটির শিরোনাম বাই সাইকেল। এই প্রদর্শনীতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চাকমা রাজা দেবাশীষ রায়। এ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন চলচ্চিত্র নির্মাতা নুরুল আলম আতিকসহ আরও অনেকে। অং রাখাইন একজন তরুণ চলচ্চিত্র নির্মাতা। তিনি দীর্ঘদিন ধরে স্বাধীন চলচ্চিত্র নির্মাতা, চলচ্চিত্র এবং নাট্য আন্দোলনের কর্মী হিসেবে কাজ করে যাচ্ছেন। ‘মর থেংগারি’ তার প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র। শ্রুতিঘরের আবৃত্তিসন্ধ্যা প্রিয় পঙ্্ক্তিমালা ॥ আবৃত্তি সংগঠন শ্রুতিঘরের আয়োজনে শিল্পকলা একাডেমিতে অনুষ্ঠিত হলো প্রিয় পঙ্্ক্তিমালা শীর্ষক আবৃত্তিসন্ধ্যা। শুক্রবার সন্ধ্যায় একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার স্টুডিও থিয়েটার হলে অনুষ্ঠিত এই আবৃত্তিসন্ধ্যায় দেশবরেণ্য আবৃত্তিকাররা আবৃত্তি করেন প্রথিতযশা কবিদের কবিতা। কবিতার শিল্পিত উচ্চারণের প্রাঞ্জলতা ও কণ্ঠের অসাধারণ কারুকাজে এই আবৃত্তিসন্ধ্যাকে প্রাণবন্ত করে তোলেন আবৃত্তিশিল্পীরা। অনুষ্ঠানে কবি অনির্বাণ দত্ত, আবিদ আজাদ, আবুল হাসান, সৈয়দ শামসুল হক, রুদ্র মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ, শুভদাস গুপ্ত, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়, জয় গোস্বামী, শক্তি চট্টোপাধ্যায়, কামাল চৌধুরী, সালেম সুলেরী, মহাদেব সাহা, নির্মলেন্দু গুণ, হুমায়ুন আজাদ ও রাজলক্ষী দেবীর কবিতা আবৃত্তি করেন আবৃত্তিকাররা। উল্লেখিত কবিদের কবিতা থেকে আবৃত্তি করেন আনোয়ারুল হক লাভলু, সৈয়দ ফয়সাল আহমদ, রেজওয়ানুল কবির সুমন, মাহমুদুল হাসান এহতেশাম, তসলিম উদ্দিন সৌরভ, তামান্না সুলতানা, মুরশিদা পাঠান, তনুশা রহমান, রাজিয়া সুলতানা সিনথিয়া ও লিটন চৌধুরী। আলিয়ঁসে ফ্রঁসেজে ‘মিট দ্য ফেসেজ’ ॥ শুক্রবার সন্ধ্যায় ধানম-ির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজে শুরু হলো শিল্পী নাসরিন সুলতানা মিতুর একক প্রদর্শনী। গ্যালারিটির ক্যাফে লা বারান্দায় ‘মিট দ্য ফেসেজ’ শীর্ষক এই প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন উন্মাদ সম্পাদক আহসান হাবীব। আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের পরিচালক ব্রুনো প্লাসির সভাপতিত্বে এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন ভাস্কর ফেরদৌসী প্রিয়ভাষিনী। আগামী ১৮ ডিসেম্বর শেষ হবে এই প্রদর্শনী। সোমবার থেকে বৃহস্পতিবার বেলা তিনটা থেকে রাত নয়টা এবং শুক্র ও শনিবার সকাল নয়টা থেকে বারোটা এবং সন্ধ্যা পাঁচটা থেকে রাত নয়টা পর্যন্ত প্রদর্শনীটি সবশ্রেণীর দর্শকদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। এছাড়া রবিবার সাপ্তাহিক বন্ধ থাকবে। আলোকচিত্র প্রদর্শনী ‘পাখির দেশ বাংলাদেশ’ ॥ বার্ড ক্লাবের আয়োজনে শুক্রবার থেকে ধানম-ির দৃক গ্যালারিতে শুরু হলো ‘পাখির দেশ বাংলাদেশ’ শীর্ষক আলোকচিত্র প্রদর্শনী। ২১ আলোকচিত্রীর ৫১টি ছবি দিয়ে সাজানো হয়েছে তিন দিনব্যাপী এই এই প্রদর্শনী। বিকেলে ছিল প্রদশর্নীর উদ্বোধনী আনুষ্ঠানিকতা। প্রধান অতিথি হিসেবে প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন নাট্যব্যক্তিত্ব আলী যাকের। আয়োজক সংস্থার সভাপতি ড. নিয়াজ আব্দুর রহিমের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন শিল্পী কনক চাঁপা চাকমা। এছাড়া অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ফ্লোরা লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোস্তফা শামসুল ইসলাম, দৃক গ্যালারির নির্বাহী পরিচালক শহীদুল আলম। আলোকচিত্রে স্থান পাওয়া পাখিগুলো হলো কাটুয়া চিল, রুইয়ার নীল কান, বুলবুলি, লাল টুপী, প্যারা পাখি, শালিক, ছোট্ট ডুবুরি, বুটপা ঈগল, হলদে গাল টিটি, কানিবগ, চামচটুটো, কুচকুচি, কালাকপাল বনমালি, শ্যামা পাপিয়া, নীমপ্যাঁচা প্রভৃতি। আজ শনিবার প্রদর্শনীর অংশ হিসেবে পাখির আলোকচিত্র গ্রহণসংক্রান্ত কর্মশালা অনুষ্ঠিত হবে। কাল রবিবার শেষ হবে তিন দিনব্যাপী এই প্রদর্শনী। দর্শনার্থীদের জন্য বেলা ৩টা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা থাকবে প্রদর্শনী।
×