ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

মুস্তারী হোসেন পান্না

প্রকাশিত: ০৫:২৭, ৬ ডিসেম্বর ২০১৪

মুস্তারী হোসেন পান্না

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশের সঙ্গীতাঙ্গনে অন্যতম নিবেদিতপ্রাণ শিল্পী মুস্তারী হোসেন পান্না। প্রতিশ্রুতিশীল শিল্পী পান্না নিজস্ব গায়কির কারণে ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্টদের কাছে প্রশংসিত হয়েছেন। যুক্ত আছেন নজরুল সঙ্গীত শিল্পী পরিষদ ও নজরুল সঙ্গীত শিল্পী সংস্থার সঙ্গে। বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশনের বিশেষ গ্রেডে তালিকাভুক্ত এই শিল্পী দেশের প্রায় সব ক’টি টিভি চ্যানেলেই নিয়মিতভাবে গান করে থাকেন। চলতি ডিসেম্বর মাসের প্রথম দিকে তিনি বিটিভির একটি অনুষ্ঠানে তিনি ৩টি গান পরিবেশন করেন। বিদেশের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে পারফর্ম করেন। এর মধ্যে সম্প্রতি ইউএসএর টেনিসি রাজ্যের কয়েকটি অনুষ্ঠানে সঙ্গীত পরিবেশন করে সুনাম অর্জন করেছেন। সঙ্গীত জীবনে এ পর্যন্ত পান্নার ৬টি এ্যালবাম প্রকাশ হয়েছে। তাঁর প্রথম একক ‘সুজন বন্ধুরে’, দ্বিতীয় এ্যালবাম ‘আমি আছি বলে’, তৃতীয় এ্যালবাম ‘মধুর ছন্দে নাচে আনন্দে’, চতুর্থ মিক্সড ভিডিও গানের এ্যালবাম ‘এসোনা’, পঞ্চম এ্যালবাম ‘বল কোথা ছিলে তুমি’ ষষ্ঠ এবং সর্বশেষ এ্যালবাম ‘মধুমালতী’ গত বৈশাখে প্রকাশিত হয়। শিল্পী পান্নার জন্ম বগুড়ায়। বাবা সৈয়দ ফরিদ উদ্দিন সাকী সর্বজন শ্রদ্ধেয় আধ্যাত্মিক মানুষ। পাশাপাশি তিনি ধর্মীয় আরাধনার শুদ্ধ সঙ্গীতেরও একজন মানুষ। ভক্তিমূলক গান ‘দয়াল বাবা কেবলা কাবা’সহ ‘এই দুঃখ আমি বলবো কারে’র মতো অসংখ্য গানের শ্রষ্ঠা গুণী পিতার যোগ্য কন্যা মুস্তারী হোসেন পান্না। আগামীতে শিল্পী পান্না তার বাবা সৈয়দ ফরিদ উদ্দিন সাকীর লেখা আধ্যাতিক টাইপের কিছু গান নিয়ে একটি এ্যালবাম করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন তিনি। পান্নার ছোট বেলা কেটেছে প্রথমে সিরাজগঞ্জ এবং পরে চট্টগ্রামে। মূলত চট্টগ্রাম থাকাকালীন সঙ্গীতাঙ্গনে যুক্ত হন তিনি। পান্নার ফুফু প্রখ্যাত গীতিকার, সুরকার ও শিল্পী ফিরোজা হক। যার কাছে মাত্র ৫-৬ বছর বয়সে শিল্পী পান্নার গানে হাতেখড়ি। এর পর তিনি গান শিখেছেন তাঁর দুলাভাই সৈয়দ সামসুল বারী এবং ওস্তাদ আফসার উদ্দিনের কাছে। গান শেখার পাশাপাশি পান্না কিশোরী বেলায় বেশ ভাল নাচ করতেন। নাচে বিভাগীয় পর্যায়ে চ্যাম্পিয়ন ছিলেন। তবে নৃত্যচর্চা না হলেও সঙ্গীতচর্চায় নিবিষ্ট থেকেছেন তিনি। সঙ্গীত সাধনায় তাঁকে অন্যদের পাশাপাশি উৎসাহ যুগিয়েছেন স্বামী লে. কর্নেল মোদাচ্ছের হোসেন বীর প্রতীক। পারিবারিকভাবে পান্নার বাবা এবং ফুফু ছাড়াও তাঁর চাচা নিযামুল হক বাংলাদেশে গণসঙ্গীতের অন্যতম ব্যক্তি। অন্যদিকে পান্নার বড় চাচা ভাষাসৈনিক গাজীউল হক। এতসব গুণী মানুষদের উত্তরসূরী এই শিল্পী নিজেকে নিজেকে নিবিড়ভাবে গানের সঙ্গে যুক্ত করবেন সেটাই স্বাভাবিক। তাই বিয়ের পর ঢাকায় এসে নজরুল ইনস্টিটিউট থেকে নজরুল সঙ্গীতে ওস্তাদ সুধীন দাস ও সোহরাব হোসেনের তত্ত্বাবধানে উচ্চতর ডিপ্লোমা কোর্স সম্পন্ন করেন। বর্তমানে ছায়ানটে ওস্তাদ অসিত দে’র কাছে উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতে তালিম নিচ্ছেন তিনি। ছোটবেলা থেকেই অনেক মেধাবী পান্না সূযোগ পেলেই গল্প, কবিতা কিংবা ছড়া লেখেন। শখের বশে কিছুদিন সেতার বাজানো শিখেছেন। এক সময় ভাল আঁকতেও পারতেন। শুদ্ধ সঙ্গীত চর্চা এবং প্রসারে মুস্তারী হোসেন পান্নার অগ্রযাত্রা আরও সুন্দর ও মসৃণ হবে এই প্রত্যাশা সংশ্লিষ্টদের।
×