ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

মুক্তির আশায় বুক বেঁধে ছিটমহলবাসী ॥ আনন্দের জোয়ার

প্রকাশিত: ০৫:২৫, ৬ ডিসেম্বর ২০১৪

মুক্তির আশায় বুক বেঁধে ছিটমহলবাসী ॥ আনন্দের জোয়ার

সুমী খান ॥ ছোট্ট অবোধ শিশু। তার দেশ কোথায়? তাকে কেউ এ প্রশ্ন করলে কোন জবাব ছিল না তার। সভ্যতার এ কলঙ্ক মুছে জাতীয় পতাকা এবং ভূমির অধিকার ফিরে পাচ্ছে এই শিশুসহ ছিটমহলের ৫৬ হাজার মানুষ, যাদের কোন রাষ্ট্র পরিচয় ছিল না। এই ছবিটি দিয়ে ফেসবুকে লেখা হচ্ছে ছিটমহলবাসীদের রক্তের দাম কেন ভারত-বাংলা বুঝতে চায় না? কেন পারে না এর সমাধান দিতে? হাজারো পাতায় পাতায় লেখা ছিট-সংবাদ কেন তাদের হৃদয়কে উদ্বেলিত করে না? ছিটবাসীদের স্বাধীনতার কি কোন দাম নেই? ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেয়ার পর প্রতিবেশী নেপাল, ভুটান, মিয়ানমারে গেলেও এখনও বাংলাদেশে সফর করেননি নরেন্দ্র মোদি। আর মাত্র ৫টি ধাপ বাকি। রাজ্যসভা, লোকসভা, এক্সপার্ট কমিটি এবং সবশেষে রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষর। এরপর ভারত-বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী দুই দেশের ১৬২টি ছিটমহল হস্তান্তর হবে। ৬৮ বছর রাষ্ট্রবিহীন ৫৬ হাজার নাগরিক নামপরিচয়হীনতার শৃঙ্খল থেকে মুক্ত হওয়ার আনন্দে আজ উচ্ছ্বসিত। ফেসবুকে ছিটমহলবাসীর পক্ষ থেকে ছবি এবং পোস্ট দিয়ে বলা হয়েছে, মুক্তির আনন্দে আশাবাদী হয়ে উঠেছে দুই দেশের ১৬২টি ছিটমহলের প্রায় ৫৬ হাজার অধিবাসী। ছিটমহল হস্তান্তর চুক্তির সম্ভাবনা উজ্জ্বল হওয়া মাত্রই ছিটমহলবাসীর মধ্যে বইছে খুশির হাওয়া। এদিকে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ১৮ ডিসেম্বর ভারত সফরে যাচ্ছেন। এ সময়ে তিনি ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জির সঙ্গে সাক্ষাত করবেন। বিজয়ের মাস ডিসেম্বরেই শৃঙ্খলমুক্ত হবে ছিটমহলবাসী ৫৬ হাজার নাগরিক। তবে দুই দেশেই তাদের আত্মীয়স্বজন থাকার কারণে কে কোন্ দেশে যাবেন, তা নিয়ে এখনও অনেক জটিলতা রয়ে গেছে। এ কারণে ছিটমহলবাসীর নতুন করে তালিকাভুক্ত করতে হচ্ছে। তবে তাদের দাবি, ৬৫ বছর রাষ্ট্রবিহীন থাকার কারণে দুই দেশেই তাদের অবাধ যাতায়াত ছিল। দুই দেশের সীমানাতেই গড়ে উঠেছে অনেক আত্মীয়তা। আর তাই যে দেশের নাগরিক হিসেবেই তালিকাভুক্ত হোক্ না কেন, তারা যেন নিজেদের ইচ্ছামতো দুই দেশেই অবাধে যাতায়াত করতে পারেন এমন সুযোগ রাখতে হবেÑ এমন দাবি ছিটমহলবাসীর।
×