ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

অস্ত্র ভা-ারের উৎস বের করার দাবি

ছালামত উল্লাহর মুক্তির জন্য জঙ্গীদের ফের গোপন বৈঠক

প্রকাশিত: ০৫:২৩, ৬ ডিসেম্বর ২০১৪

ছালামত উল্লাহর মুক্তির জন্য জঙ্গীদের ফের গোপন বৈঠক

এইচএম এরশাদ, কক্সবাজার ॥ মিয়ানমারের আরাকান বিদ্রোহী গ্রুপ আরএসওর বাংলাদেশের সমন্বয়ক চট্টগ্রামে আটক ভয়ঙ্কর জঙ্গী ছালামত উল্লাহর মুক্তির জন্য দোয়া মাহফিলের নামে ফের গোপন বৈঠক করেছে জঙ্গীরা। শুক্রবার জুমার নামাজের পর পূর্ব নির্ধারিত সময় অনুসারে ইসলামপুর জুমনগরে জঙ্গী ছালামত উল্লাহর নির্মাণাধীন রোহিঙ্গা প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে আরএসও জঙ্গীদের এ গোপন বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে। দুপুর ১২টা থেকে অন্তত ১০ আরএসও জঙ্গী রিকশায় ও হেঁটে ওই প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে জমায়েত হয়। তবে ঈদগাও পুলিশ ফাঁড়ি সূত্র জানায়, শুক্রবার জুমার নামাজ হিসেবে মৌলভী ও মুসল্লিরা মসজিদে যাচ্ছে মনে করে কাউকে চ্যালেঞ্জ করা সম্ভব হয়নি। বৈঠকে বিএনপি নেতা আবুল কালাম মেম্বার, জঙ্গী মৌলভী আয়াছ, রোহিঙ্গা জঙ্গী সংগঠন ইত্তেহাদুল তুল্লাহ ওয়াল মুসলেমিনের আহ্বায়ক হাফেজ জাবের, মুহুরিপাড়া রোহিঙ্গা প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক মৌলভী কামাল হোছাইন, ইতোপূর্বে জামিনে মুক্ত জঙ্গী আবু ছালেহসহ আরএসও’র ১০ নেতা উপস্থিত ছিল বলে জানা গেছে। এদিকে আটক ছালামতসহ ৫ জঙ্গীকে চট্টগ্রামের গোয়েন্দা সদস্যরা আটক করে দুই দফা রিমান্ডে নিয়ে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করে জঙ্গী সম্পৃক্ততাসহ বহু তথ্য পেয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। পার্বত্য অঞ্চলের গহীন অরণ্যে অস্ত্র প্রশিক্ষণের ঘাঁটিসহ আটক এ ভয়ঙ্কর জঙ্গী ছালামতের অবৈধ অস্ত্রের ভা-ারের উৎস খুঁজে বের করার দাবি জানিয়েছেন সচেতন মহল। সূত্রমতে ১৯৯২ সালে শরণার্থী হিসেবে এদেশে পালিয়ে এসে ছালামত উল্লাহ রামু ধেছুয়াপালং শরণার্থী ক্যাম্পে আশ্রয় নেয়ার পর আরএসও থোয়াইঙ্গাকাটা ক্যাম্পে যোগ দিয়ে আন্তর্জাতিক জঙ্গী সংস্থার পক্ষ থেকে রোহিঙ্গাদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয়াসহ জঙ্গীপনার নেতৃত্ব দিয়ে আসছিল। রামুর এক সাবেক চেয়ারম্যানের সহযোগিতায় অস্ত্র ব্যবসায় লিপ্ত হয়ে মিয়ানমারের সঙ্গে হাত রেখে কক্সবাজার, চট্টগ্রাম ও ভারতের অস্ত্র ব্যবসায়ীদের নিকট পরিচিত মুখ ও আস্থাভাজন হয়ে উঠে সে। ১৯৯৭ সনে আওয়ামী লীগ সরকার আরএসও ক্যাডারদের কোন ধরনের সুযোগ দিচ্ছে না দেখে ওইসময় আরএসও গ্রুপ ভেঙ্গে যায়। তখন আরএসওর ভারি অস্ত্র-শস্ত্রগুলো কিনে নেয় কতিপয় জামায়াত নেতা। পরবর্তীতে তাদের কাছ থেকে অস্ত্রগুলো কিনে নিয়েছে এ ভয়ঙ্কর জঙ্গী ছালামত উল্লাহ। তার কাছে ওসব অস্ত্র এখনও মজুদ থাকতে পারে বলে সন্দেহ করছেন সচেতন মহল। তাকে ফের রিমান্ডে নিয়ে অবৈধ অস্ত্রের ভা-ারের উৎস খুঁজে বের করা খুবই জরুরী বলে জানিয়েছেন তাঁরা। অপরদিকে কক্সবাজারে আটক জঙ্গী ছালামতের দুই সহযোগী ৯ রোহিঙ্গার মধ্যে জঙ্গী আবু তাহের পিন্টু ও ইকবাল মাস্টারকে ৫ দিন করে এবং অপর রোহিঙ্গাদের ১ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত। আটক আবু তাহের পিন্টু ও রোহিঙ্গা মাস্টার ইকবাল জঙ্গী ছালামতের অন্যতম সহযোগী বলে তথ্য রয়েছে।
×