ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ফরিদপুরে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে ধর্ষণ মামলা, ভুয়া ভিডিও চিত্র

প্রকাশিত: ০৪:০১, ৬ ডিসেম্বর ২০১৪

ফরিদপুরে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে ধর্ষণ মামলা, ভুয়া ভিডিও চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা, ফরিদপুর, ৫ ডিসেম্বর ॥ ফরিদপুরে এক কলেজ ছাত্রীকে একটি মেসে নিয়ে ধর্ষণ ও সে দৃশ্য ইন্টারনেটে ছেড়ে দেয়ার অভিযোগ নারী ও শিশু নির্যাতন আইনসহ তথ্যপ্রযুক্তি আইনে পাঁচ তরুণের নামে মামলা করেন মেয়ের বাবা। ধর্ষণের দৃশ্য দাবি করে একটি ভিডিও চিত্রও সাংবাদিকদের সরবরাহ করেন মেয়ের বাবা। কিন্তু অনুসন্ধানে জানা যায় সাংবাদিকদের কাছে সরবরাহকৃত ধর্ষণের দৃশ্যটি ভুয়া। গত ১২ আগস্ট ফরিদপুর শহরের নিলটুলী মহল্লাস্থ একটি মেসে ধর্ষণ ও তার চিত্র ভিডিওতে ধারণ করে ইন্টারনেটে ছেড়ে দেয়ার অভিযোগে গত ৮ অক্টোবর ফরিদপুরে এ মামলা হয়। কথিত ধর্ষিতার পরিবার ও অভিযুক্ত সবাই রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার বহরপুর ইউনিয়নের পাটুরিয়া গ্রামের বাসিন্দা। ধর্ষণের ভিডিওটি কথিত ধর্ষিতার বাবা অনিল রায় ও চাচা অরিবিন্দ রায় সাংবাদিকদের কাছে নিয়ে আসেন। ভিডিও চিত্রটি অনুসন্ধান করে দেখা য়ায়, দুই মিনিট নয় সেকেন্ড সময়কালের এ ভিডিও চিত্রটির ভাষা অস্পষ্ট শোনালেও তা বাংলা নয়। ভিডিও চিত্রটি আমবালাপূজা ডট থ্রি জিপি ওয়েবসাইট থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। গুগল সার্চ করে জানা গেছে, আমবালাপূজা ভারতের কেরালা রাজ্যের সমুদ্র উপকূলবর্তী একটি শহর। ওই শহরের মূল ভাষা মালায়ালাম। অনুসন্ধানে প্রমাণিত হয় মেয়ের বাবা যে ভিডিওটি পত্রিকার কার্যালয়ে তার মেয়ের ধর্ষণের চিত্র দাবি করে প্রচার করেছেন সেটি তার মেয়ের ভিডিও চিত্র নয়। সরবরাহকৃত ভিডিওটি মিথ্যা বলে স্বীকার করেছেন নির্যাতনের শিকার দাবিকারী রাজেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের স্নাতক শাখার শিক্ষার্থী। এ বিষয়ে তিনি জানান, আমাকে ধর্ষণ করা হয়েছে। আমার ধর্ষণের যে ভিডিওটি দেয়া হয়েছে সেটি আমার নয়। এছাড়া যেসব ছেলেকে এতে দেখানো হয়েছে তারা অপরিচিত। এ বিষয়ে তরুণীর বাবা মামলার বাদি অনিল রায় বলেন, ভিডিওটি আমি নিজেও দেখি নাই। এটি আমার চাচাতভাই অরবিন্দ এর মাধ্যমে সংগ্রহ করেছি। চাচাতভাই অরিন্দম ভিডিওটি কোথায় বা কার মাধ্যমে পেয়েছেন এ বিষয়ে কোন কথা বলতে রাজি হননি। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জানান, এ মামলাটি তথ্যপ্রযুক্তি আইনে হলেও কোন ভিডিও চিত্র পাওয়া যায়নি। মামলটি হয়েছে কথিত ঘটনার দুই মাস পর। মেয়ের শারীরিক পরীক্ষায় ধর্ষণের আলামত পাওয়া যায়নি, তবে সে শারীরিক সম্পর্কে অভ্যস্থ। পাঁচজন আসামির মধ্যে তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। তারা বর্তমানে জামিনে।
×