ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ঝিনাইদহ, কুড়িগ্রাম, দিনাজপুরের বোচাগঞ্জ ও বীরগঞ্জ, চাঁদপুরের কচুয়া, নেত্রকোনার দুর্গাপুর, পটুয়াখালীর কলাপাড়া, লালমনিরহাট, সাতক্ষীরার কলারোয়া, যশোর, মেহেরপুর

আজ হানাদারমুক্ত

প্রকাশিত: ০৪:০০, ৬ ডিসেম্বর ২০১৪

আজ হানাদারমুক্ত

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ আজ শনিবার, ৬ ডিসেম্বর, ১৯৭১ সালের এই দিনে দিনাজপুরের বোচাগঞ্জ ও বীরগঞ্জ, ঝিনাইদহ, কুড়িগ্রাম, চাঁদপুরের কচুয়া, নেত্রকোনার দুর্গাপুর, পটুয়াখালীর কলাপাড়া, লালমনিরহাট, সাতক্ষীরার কলারোয়া, যশোর, মেহেরপুরে হানাদার বাহিনীর কবল থেকে মুক্ত হয়েছে। মুক্তিবাহিনীর সঙ্গে লড়াইয়ে টিকতে না পেরে হানাদার ও তাদের এদেশীয় দোসররা পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়। খবর স্টাফ রিপোর্টার ও নিজস্ব সংবাদদাতাদের পাঠানোÑ দিনাজপুর ॥ ১৯৭১ সালে স্বাধীনতাযুদ্ধে বিজয়ের এ মাসে ৬ ডিসেম্বর দিনাজপুরের বোচাগঞ্জ ও বীরগঞ্জ থানার বীর মুক্তিযোদ্ধারা পাক বাহিনীর সঙ্গে লড়াই-সংগ্রামে এ দু’টি উপজেলা শত্রুমুক্ত করেছিল। সেই থেকে এ দিনটিকে এ দু’টি উপজেলায় মুক্ত দিবস হিসেবে পালন করা হয়। দিবসটি উদ্যাপন উপলক্ষে দুটি উপজেলায় পৃথক দুটি আলোচনাসভা ও র‌্যালিসহ বিভিন্ন কর্মসূচীর আয়োজন করা হয়েছে। ঝিনাইদহ ॥ ১৯৭১ সালের এদিন ঝিনাইদহ হানাদারমুক্ত হয়। আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে বিশেষ ভূমিকা ছিল ঝিনাইদহের। মুক্তিযুদ্ধের শুরুতে ঝিনাইদহের ছাত্র-জনতা পাক সেনাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। কুড়িগ্রাম ॥ ৬ ডিসেম্বর কুড়িগ্রাম হানাদার মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে বীর মুক্তিযোদ্ধারা অমিততেজে যুদ্ধ করে পাকিস্তান বাহিনীকে পরাজিত করে অবরুদ্ধ কুড়িগ্রামকে হানাদার মুক্ত করেছিল। এ উপলক্ষে শনিবার দিনব্যাপী নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। কচুয়া ॥ ১৯৭১ সালের এই দিনে দখলদার বাহিনীকে কচুয়ার মাটি থেকে বিতারিত করা হয় এবং কচুয়া স্বাধীন হয় । ৫ ডিসেম্বর পাক হানাদার বাহিনীকে মিত্রবাহিনী ও মুক্তিবাহিনী চারদিক থেকে ঘিরে ফেলে। এ অবস্থায় গভীর রাতে পাক সেনা ব্যাটালিয়ান তাদের বাহিনীকে উদ্ধারের জন্য কচুয়া-কালিয়াপাড়া পাকা সড়ক দিয়ে ঢুকে কচুয়াবাজার লুটপাট ও আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয় এবং ভোরে পালিয়ে যায় । দুর্গাপুর (নেত্রকোনা) ॥ আজ ৬ ডিসেম্বর দুর্গাপুর মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে বাংলার দামাল ছেলেরা ভারতীয় মিত্রবাহিনীর সহযোগিতায় সশস্্র রক্তক্ষয়ী লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে নেত্রকোনা সীমান্তবর্তী দুর্গাপুরকে মুক্ত করে। পাক হানাদার বাহিনীর মেজর সুলতানের নেতৃত্বে দুর্গাপুরের মিশনারিজ এলাকা বিরিশিরিতে একটি শক্তিশালী পাকসেনা ঘাঁটি গড়ে উঠেছিল,আর এখানে বসেই পাকসেনারা বাংলার কুখ্যাত দালাল, আলবদর, রাজাকারদের সহযোগিতায় নিয়ন্ত্রণ করত দুর্গাপুর সদরসহ কলমাকান্দার সীমান্ত এলাকা লেংগুড়া,নাজিরপুর এবং দুর্গাপুরের বিজয়পুর। সেই সঙ্গে রাতের আঁধারে বিরিশিরির বধ্যভূমিতে নৃশংসভাবে হত্যা করা হতো মুক্তিকামী মানুষকে। কলাপাড়া ॥ আজ ৬ ডিসেম্বর, পটুয়াখালীর কলাপাড়া হানাদার মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের ৫ ডিসেম্বর রাতে মুক্তিযোদ্ধারা কলাপাড়া থানা আক্রমণ করেন। নয়জন বিএলএফ যোদ্ধা লড়াই করে ৬ ডিসেম্বর ভোরে রাজাকার ও পাকবাহিনী মুক্ত করেন। লালমনিরহাট ॥ লালমনিরহাট জেলা হানাদার মুক্ত দিবস আজ। ’৭১-এর এই দিনে মুক্তিযোদ্ধা ও ভারতীয় মিত্রবাহিনীর যৌথ সম্মুখ প্রতিরোধ যুদ্ধে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী পিছু হটতে থাকে। লালমনিরহাট হয় শক্রমুক্ত। সাতক্ষীরা ॥ একাত্তরের আগুনঝরা এইদিনে (৬ ডিসেম্বর) পাক হানাদার মুক্ত হয় সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলা স্বাধীন দেশের পতাকা উড়ে কলারোয়ার আকাশে। পাক বাহিনীর ধ্বংসযজ্ঞে ক্ষতবিক্ষত কলারোয়া মুক্তিকামী মানুষের উল্লাসে মুখরিত হয়। দিনটি উদযাপনে নেয়া হয়েছে নানা কর্মসূচী। যশোর ॥ ৬ ডিসেম্বর ১৯৭১। সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত। ঠিক এভাবেই দিনটিকে বরণ করে নিয়েছিল যশোরবাসী। এদিন ভোরে যশোর শহর হয়েছিল হানাদার মুক্ত। দেশের প্রথম মুক্ত জেলা শহর হওয়ার গৌরব অর্জন করেছিল যশোর। ৬ ডিসেম্বর তাই যশোরবাসীর অহঙ্কার। আত্মত্যাগ আর সংগ্রামের দৃপ্ত শপথও। এদিনটিকে যশোরবাসী পালন করে ‘যশোর মুক্ত দিবস’ হিসেবে। মেহেরপুর ॥ আজ শনিবার ৬ ডিসেম্বর মেহেরপুর মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে বাংলাদেশের অস্থায়ী রাজধানী খ্যাত মেহেরপুর পাক হানাদার মুক্ত হয়। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের গেরিলা হামলায় একে একে ভেঙ্গে পড়ে পাক হানাদারদের শক্তিশালী সামরিক বলয়। মেহেরপুর জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার বশির আহম্মেদ বলেন, ৬ ডিসেম্বর আমাদের মেহেরপুর মুক্ত হয়েছে ঠিকই। কিন্তু আমরা বঙ্গবন্ধুর সেই স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়তে পারিনি আজও। এখন পর্যন্ত যেসব মুক্তিযোদ্ধাদের নামের তালিকা করা হয় নি তাদের দ্রুত তালিকাভুক্ত করা সহ রাজাকার মুক্ত দেশ দেখতে চান জেলার মুক্তিযোদ্ধারা।
×