ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

রেলের জমিতে অবৈধ স্থাপনা

প্রকাশিত: ০৬:২৪, ৫ ডিসেম্বর ২০১৪

রেলের জমিতে অবৈধ স্থাপনা

নিজস্ব সংবাদদাতা, গাইবান্ধা, ০৪ ডিসেম্বর ॥ জেলার রেলওয়ের জায়গা অবৈধ দখলদাররা ক্রমান্বয়ে গ্রাস করলেও কর্তৃপক্ষ নির্বিকার। রেলওয়ে স্টেশন সংলগ্ন ওই জায়গাগুলোতে এখন দোকানপাট, আবাসিক ঘরবাড়ি এবং কলকারখানা গড়ে উঠছে। রেলওয়ের একশ্রেণীর কর্মকর্তার যোগসাজশে এসব ঘরবাড়ি, দোকানপাট গড়ে উঠছে বলে অভিযোগে জানা গেছে। অপরদিকে রেললাইন ঘেঁষে বেশকিছু দোকানপাট গড়ে ওঠায় ট্রেন চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। এসব দখলদারদের মধ্যে অনেকেই সরকার দলীয় সমর্থক বলে জানা গেছে। সরেজমিনে দেখা গেছে, এক সময় যে এলাকায় রেল স্টেশন মাস্টারদের ৪টি এবং ৪র্থ শ্রেণীর কর্মচারীদের ৬টি পাকা আবাসিক ঘর ছিল সেই জায়গাটি এখন অবৈধ দখলদারদের ঘরবাড়ি, দোকানপাট গড়ে উঠেছে। ওই স্টাফ কোয়ার্টারগুলো বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়ায় ২০০৭ সালে সেগুলো নিলামে বিক্রি করে দেয়া হয়। নিলাম গ্রহীতারা ওই আবাসিক ঘরগুলো ভেঙ্গে নিয়ে যাওয়ার পর নতুন করে আর ঘরবাড়ি না তোলায় দীর্ঘদিন জায়গাগুলো পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকে। সেই থেকে ধীরে ধীরে পরিত্যক্ত জায়গাগুলো বেদখল হতে শুরু হয়। পরবর্তীতে দখলদাররা প্রথমে কাঁচা ঘর এবং পরে প্রতিযোগিতামূলকভাবে সেখানে পাকা ঘর নির্মাণ করতে থাকে। ইতোমধ্যেই কোয়ার্টার এলাকায় কয়েকটি পাকা অবকাঠামোসহ আধাপাকা ও টিনের ২৬টি ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। তাদের মধ্যে রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর হাবিলদার আমজাদ হোসেন পার্বতীপুরে চাকরি করলেও এখানে দুটি প্লট অবৈধভাবে দখল করে পাকা ঘর তৈরি করেছেন। দখলের বিষয়ে আমজাদ হোসেন বলেন, জমি লিজ নেয়ার চেষ্টা করছি। রেলওয়ে শ্রমিক লীগও একটি বিরাট এলাকা দখল করে তাদের সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দিয়েছে। রেলের কর্মচারী ফজলুল হকও বাগান করার জন্য জমি বরাদ্দ নিয়ে সেখানে ঘর তৈরি করে বসবাস শুরু করেছেন। সেই সঙ্গে বহিরাগত লোকজনও কোয়ার্টারের জায়গা দখল করে ঘরবাড়ি নির্মাণ করছেন। এছাড়া স্টেশনের দক্ষিণ-পশ্চিমে গোডাউন রোডের দুই ধারে অসংখ্য দোকানপাট গড়ে উঠেছে। ওইপথে ট্রেনযাত্রীদের নিয়মিত চলাচল করতে হয়। সেখানে কয়েকটি স’মিলও বসানো হয়েছে। বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করা হলে আবারও তারা ঘরবাড়ি, দোকানপাট এবং কলকারখানা স্থাপন করে ব্যবসা বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছেন। ওই এলাকার একজন ব্যবসায়ী জানান, তাঁরা বৈধভাবে লিজ নিয়ে দোকান ঘর তুলে ব্যবসা করতে চান। কিন্তু রেল কর্তৃপক্ষ লিজ দেয়ার ব্যাপারে আগ্রহী না থাকায় দীর্ঘদিনের ব্যবসা বাণিজ্য অব্যাহত রাখা ছাড়া তাদের কোন উপায় নেই। তিনি আরও জানান, বৈধভাবে তাদের লিজ দেয়া হলে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে প্রচুর টাকা রেল কর্তৃপক্ষ রাজস্ব হিসেবে আয় করতে পারতেন। একইভাবে রেল স্টেশনের পশ্চিমপাশেও অনেকগুলো দোকানঘর এবং আবাসস্থল গড়ে তোলা হয়েছে। অবৈধভাবে একের পর এক ঘরবাড়ি, দোকানপাট গড়ে উঠলেও রেলওয়ে স্টেট ডিপার্টমেন্ট কোন কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছে না। ফলে রেলের জায়গা অবৈধভাবে দখল করার প্রবণতা ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। এ ব্যাপারে গাইবান্ধা রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেও কোন সুফল পাওয়া যায়নি। তবে রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার সূত্রে জানা গেছে, পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের লালমনিরহাট ডিভিশন অফিস এসব নিয়ন্ত্রণ করে থাকে।
×