ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

উপ-সম্পাদকীয়

প্রসঙ্গ ইসলাম ॥ ইসলামের অনুশাসন এইডস রোধক

প্রকাশিত: ০৬:১৮, ৫ ডিসেম্বর ২০১৪

প্রসঙ্গ ইসলাম ॥ ইসলামের অনুশাসন এইডস রোধক

অধ্যাপক হাসান আবদুল কাইয়ূম ॥ ইসলামের অনুশাসন অনুযায়ী জীবনযাপন করলে এইড্স মারণব্যাধির হাত থেকে সহজেই বাঁচা যেতে পারে। ইসলাম আল্লাহ্র দেয়া একমাত্র জীবন ব্যবস্থা যা মানুষকে ইহকালীন ও পরকালীন কল্যাণের পথ নির্দেশ করে। আল্লাহ্ জাল্লা শানুহু মানুষকে সৃষ্টি করেছেন সুন্দরতর অবয়ব দিয়ে। ইরশাদ হয়েছে : লাকাদ্ খালাকনাল ইস্সানা ফী আহ্সানি তাকবীমÑ আমি তো সৃষ্টি করেছি মানুষকে সুন্দরতম গঠনে (সূরা তীন : আয়াত ৪)। আল্লাহ্ জাল্লা শানুহু মানুষের বাহ্যিক এবং অভ্যন্তরীণ উভয় অবয়বকেই সুন্দরতা দান করেছেন। কিন্তু মানুষ তার মস্তিষ্কজাত চিন্তাভাবনার দ্বারা পরিচালিত হয়ে, মানুষের প্রকাশ্য দুশমন শয়তান দ্বারা প্ররোচিত হয়ে, রিপুর তাড়নায় তাড়িত হয়ে সব মারাত্মক মারাত্মক পাপের কাজ করে ফেলে যা তাকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেয়। সূরা তীনের ৫ নম্বর আয়াতে কারীমায় ইরশাদ হয়েছে : অতঃপর আমি তাকে (মানুষকে কর্মদোষের কারণে) হীনতাগ্রস্তদের হীনতমে পরিণত করি (সূরা তীন: আয়াত ৫)। আজকের দুনিয়ায় মানুষের জন্য মারাত্মক আতঙ্কের ব্যাপার হিসেবে দেখা দিয়েছে মারণব্যাধি এইডস আর এই আতঙ্ক বিকট আকার ধারণ করেছে ভোগবাদী ও জড়বাদীদের মধ্যে। তাদের কাছে এটা দেখা দিয়েছে নিদারুণ উৎকণ্ঠা হিসেবে। এইড্স মানেই হয়ে দাঁড়িয়েছে অকাল মৃত্যু। মানুষকে আল্লাহ্ জাল্লা শানুহু দৈহিক ও মানসিক সুন্দর অবয়ব দান করেছেন, তাকে কোন্টা ভালো, কোন্টা মন্দ তা বিচার করার শক্তি দিয়েছেন, বিবেকবুদ্ধি দিয়েছেন। মানুষের মধ্যে যে জীবনীশক্তি দিয়েছেন তাতে রোগ প্রতিরোধক শক্তিও দিয়েছেন। কিন্তু মানুষ রিপুর তাড়নার বা শয়তানের প্ররোচনায় আল্লাহর হুকুম মনে না রেখে কিংবা তোয়াক্কা না করে এমন সব নিষিদ্ধ কাজ করে ফেলে অর্থাৎ পাপের কাজ করে যার ফলে সে নিজেকে নিজেই ধ্বংসের মুখে ঠেলে দেয়। তেমনি সে এমন সব কাজ করে যার কারণে তার ভিতরকার রোগ প্রতিরোধক শক্তি দুর্বল হতে হতে এক পর্যায়ে এসে একেবারে নিঃশেষ হয়ে যায়, যখন আর তার নিরাময় লাভের কোন পথ বা উপায় থাকে না, ঘাতক ব্যাধি এইডসের নামকরণেরও সেটাই প্রকাশ পেয়েছে। এইড্স হচ্ছে এ্যাকোয়ার্ড (অপয়ঁরৎবফ) ইমিউন (ওসসঁহব) ডিফিসিয়েন্সি (উবভরপরবহপু) সিনড্রোমের অর্থ হচ্ছে দেহের অর্জিত রোগ প্রতিরোধক শক্তির অভাবের লক্ষণসমূহের সমষ্টি। আর দেহাভ্যন্তরে এই ঘাতক ব্যাধি বাসা বাঁধে যে ভাইরাস দ্বারা তা হচ্ছে: হিউম্যান (ঐঁসধহ) ইমিউন (ওসসঁহব) ডিফিসিয়েন্সি (উবভরপরবহপু) ভাইরাস যাকে সংক্ষেপে বলা হয় এইচআইভি (ঐওঠ)। এই ভাইরাস কোন মানবদেহে প্রবেশ করলে সেই মানুষ ক্রমান্বয়ে রোগ প্রতিরোধক শক্তি হারিয়ে ফেলতে ফেলতে এমন অবস্থায় পৌঁছে যখন কোন রোগ বিশেষ করে শ্বাসযন্ত্রের রোগ, পেটের রোগ, জ্বর, উদরাময়, কাশি, চামড়ার ক্যান্সার, চামড়ার যন্ত্রণাদায়ক চুলকানি হলে, কোন ওষুধ কাজে লাগে না, বরং অসহ্য যন্ত্রণার মধ্য দিয়ে ধুঁকতে ধুঁকতে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে কঙ্কালসার হয়ে অকালে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়তে হয় পাপের বোঝা সঙ্গে নিয়ে। এইচআইভি বহনকারী ব্যক্তির মধ্যে ঐসব লক্ষণ যখন প্রস্ফুটিত হয় তখন সেটা এইডস নামে অভিহিত হয়। এইচআইভি বা এইডসের ইতিবৃত্ত আজও অজ্ঞাত, তবে জানা যায়, আফ্রিকা মহাদেশের গভীর জঙ্গলের কিছু সবুজ রঙের বানরের মধ্যে এই রোগ কখনও কখনও মহামারী আকারে দেখা যায়। এই ঘাতক ব্যাধির উদ্ভব ঘটে যেসব কর্মের মাধ্যমে সেসব কর্মকে ইসলামে কবিরা গুনাহ বা মহাপাপ বলা হয়েছে এবং কঠোর শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। প্রধানত অবৈধ যৌনাচার, সমকামিতা বা সদোমি, মাদক সেবন ও মদ্যপান প্রভৃতিকে এইডসের কারণ ও বিস্তারের কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এই ঘাতক ব্যাধি চিহ্নিত হওয়ার পূর্বেও যুগ যুগ ধরে হয়ত এ ব্যাধি ছিল কিন্তু এটার নামকরণ এইডস করা হয় এবং এর ভাইরাসের নামকরণ এইচআইভি করা হয় সম্প্রতি। জানা যায়, ১৯৮১ খ্রিস্টাব্দে তদানীন্তন সোভিয়েত রাশিয়ার এক ব্যক্তি জটিল রোগে আক্রান্ত হয়ে সেখানকার বড় বড় চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ পথ্য গ্রহণ করেও কোন রকম আরোগ্য লাভের সম্ভাবনা না দেখে বেঁচে থাকার আশা প্রায় ত্যাগ করে। ঐ ব্যক্তি সমকামী ও ভোদ্কাপায়ী (ভোদ্কা এক জাতীয় মদ) ছিল। রোগযন্ত্রণা তাকে অস্থির করে তোলে। দিনকে দিন সে কঙ্কালসার হতে থাকে। অগত্যা তদানীন্তন সরকারের চোখ এড়িয়ে উন্নতমানের চিকিৎসার আশা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র পাড়ি জমায়। যুক্তরাষ্ট্রের চিকিৎসকগণ এই নতুন ধরনের রোগে আক্রান্ত রোগীর ওপর বিভিন্ন প্রকারের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে নিশ্চিত হন যে, এই রোগী এমন এক ভাইরাস নিজ দেহে ধারণ করেছে যে ভাইরাস তার দেহের রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা একেবারে ধ্বংস করে দিয়েছে। যে কারণে যতই শক্তিশালী মাত্রার ওষুধ দেয়া হোক না কেন, এ রোগীর রোগ আরোগ্য হবে না বরং অকাল মৃত্যুই তার জন্য অনিবার্য হয়ে পড়েছে। তাঁরা এই ভাইরাসের নাম দেন এইচআইভি (ঐওঠ) অর্থাৎ হিউম্যান ইমিউন ডিফিসিয়েন্সি ভাইরাস (ঐঁসধহ ওসসঁহব উবভরপরবহপু ঠরৎঁং)। এই ভাইরাস মানুষের দেহের ভিতর সংক্রমিত হয়ে মানুষের দেহে আল্লাহ্ জাল্লা শানুহু যে রোগ প্রতিরোধক শক্তি দান করেছেন তা মেরে ফেলে। রক্তের শ্বেতকোষ একেবারে ধ্বংস করে দেয়। ফলে এইড্স রোগীতে সে পরিণত হয় আর তার পরিণাম যন্ত্রণাদায়ক অকাল মৃত্যু। এইডস রক্ত, বীর্য এবং মানুষের দেহাভ্যন্তরের তরল পদার্থবাহী রোগ। এমনকি এই ভাইরাস থুথু, চোখের পানি, মাতৃদুগ্ধেও বাসা বাঁধতে পারে। আর এই ভাইরাস কোন মানুষের দেহে সংক্রমিত হলে তার সঙ্গে কামাচার কিংবা তার থেকে অন্যের মধ্যে রক্ত সঞ্চালনের মাধ্যমে ছড়ায়। এই ভাইরাস বহনকারী মায়ের অথবা পিতার সন্তানের মধ্যে সঞ্চালিত হতে পারে। এ এক নিরাময় অযোগ্য মারাত্মক ভাইরাস। দেখা যায় এই ভাইরাস এবং এই ভাইরাস সংক্রমিত এইচডস রোগী ক্রমান্বয়ে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ব্যাপকহারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। কোন কোন দেশে মহামারী আকারে আবির্ভূত হচ্ছে। এই মারণব্যাধিতে আক্রান্ত হয়ে বহু লোক মারাও গেছে, আবার অনেকেই ধুঁকে ধুঁকে মৃত্যুর দিন গুনছে। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার এক রিপোর্টে বলা হয়েছে: ঝবাবহ সরষষরড়হ ভধৎস ড়িৎশবৎং যধাব ফরবফ ৎবষধঃবফ পধঁংবং ংরহপব ১৯৮৫ ধহফ ১৬ সরষষরড়হ সড়ৎব ধৎব বীঢ়বপঃবফ ঃড় ফরব রহ ঃযব হবীঃ ২০ ুবধৎং. এখানে উল্লেখযোগ্য যে, বাংলাদেশে প্রথম এইডস রোগী ধরা পড়ে ১৯৮৯ খ্রিস্টাব্দে। এই ব্যক্তি বিদেশে কাজ করত। বিদেশ থেকেই সে এই ঘাতক ব্যাধির ভাইরাস বা এইচআইভি ধারণ করে এবং এইডস সংশ্লিষ্ট যন্ত্রণাদায়ক রোগ নিয়ে দেশে ফিরে আসে। সে খুব অল্প সময়ের মধ্যে মারা যায়। বর্তমানে বাংলাদেশ এইডস আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ১২৯৯ এবং এইচআইভি বহন করছে প্রায় ১০ হাজার মানুষ। এই ভাইরাস নারীদের মধ্যে আনুপাতিকহারে বেশি। গণিকা, ভাসমান যৌনকর্মী, দেহব্যবসায়ীর দ্বারা মূলত এই ভাইরাস বিস্তার লাভ করে। এই ভাইরাস আমাদের দেশে এসেছে বিদেশ থেকে। পার্শ্ববর্তী ভারতে এটা ইতোমধ্যে ব্যাপকহারে বৃদ্ধি পেয়েছে। অবৈধ যৌনাচার বা যিনা, সমকামিতা বা সদোমি, মাদকদ্রব্য সেবন ও মদ্যপানকে কুরআন মজিদে ও হাদিস শরীফে কঠোরভাবে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে এবং দ-বিধিও প্রদান করা হয়েছে। অবৈধ যৌনাচার, ব্যভিচার বা যিনা সম্পর্কে কুরআন মজিদে ইরশাদ হয়েছে : ওয়ালা তাকরাবুয্ যিনা, ইন্নাহুত কানা ফাহিশাতা ওয়া সাআ সাবীলাÑ আর তোমরা যিনার কাছঘেঁষাও হয়ো না, নিশ্চয়ই তা অশ্লীল ও অতিশয় নিকৃষ্ট আচরণ (সূরা বনী ইসরাঈল: আয়াত ৩২)। সূরা নূরের ২ নম্বর আয়াতে কারীমায় ইরশাদ হয়েছে : ব্যভিচারিণী (আয্যানিয়াতু) এবং ব্যভিচারী (আয্যানী) তাদের প্রত্যেককে এক শ’ কশাঘাত করবে। আল্লাহ্র বিধান কার্যকর করতে তাদের প্রতি দয়া যেন তোমাদেরকে প্রভাবান্বিত না করে। এছাড়া বিবাহিত নর-নারী ব্যভিচার করলে সে ক্ষেত্রে রজম বা প্রস্তরাঘাতে মৃত্যুদ- প্রদানের বিধানও রয়েছে। মানুষ যাতে পর পুরুষগামিনী বা পরস্ত্রীগামী হতে না পারে এবং অবৈধ যৌনসম্ভোগ থেকে নিজেকে রক্ষা করতে পারে সে জন্য ইসলাম নজরকে সংযত করার এবং লজ্জাস্থানের হিফাজত করার বিধান দিয়েছে। আল্লাহ্ জাল্লা শানুহু ইরশাদ করেন : মু’মিনদেরকে বলো, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে সংযত করে এবং তাদের লজ্জাস্থান (ফুরুজাহুম) এর হিফাজত করে (সূরা নূর : আয়াত ৩০)। আরও ইরশাদ হয়েছে : মু’মিন নারীদেরকে বলো, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে সংযত করে ও তাদের লজ্জাস্থান (ফুরুজাহুন্না) এর হিফাজত করে, তারা যেন যা সাধারণত প্রকাশ থাকে তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে এবং তাদের গ্রীবা ও বক্ষদেশ ঢেকে রাখে তাদের মাথার কাপড় টেনে দিয়ে (সূরা নূর : আয়াত ৩১)। এইডসের কারণ হিসেবে সদোমি বা সমকামিতার কথা বলা হয়েছে। সদোম একটি জায়গার নাম। সেখানকার অধিবাসীরা সমকামী ছিল। যে কারণে সমকামকে সাধারণত সদোমি বলা হয়, আরবীতে বলা হয় লাওয়াতাত। সদোমের মানুষকে এই জঘন্য এবং বিকৃত রুচির কাজ পরিহার করানোর জন্য আল্লাহ্ জাল্লাহ শানুহু হযরত লুত আলায়হিস্ সালামকে সেখানে প্রেরণ করেন কিন্তু লুত (আঃ) এর কথায় তারা কর্ণপাত করল না। এমনকি তারা এও বলল : লুত, আপনি যে এই কাজ করলে আল্লাহ্র গযব নেমে আসবে তা নামিয়ে দেখান। এর কয়েকদিন পর দু’জন ফেরেশতা সুন্দর বালকের চেহারা ধারণ করে লুত (আঃ) এর গৃহে মেহমান হয়। সদোমবাসী এই সুন্দর বালকবেশী ফেরেশ্তাদেরও তাদের হীনকর্ম চরিতার্থ করার জন্য পাঁয়তারা শুরু করে। আল্লাহ্র নির্দেশে হযরত লুত (আঃ) ঐ অঞ্চল ত্যাগ করলে ভীষণ গর্জন করে ঐ অঞ্চলের সমস্ত মানুষ, জীবজন্তু প্রভৃতি মাটি-পাহাড়সুদ্ধ উল্টিয়ে দিয়ে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করা হয়। বর্তমান উবধফ ংবধ বা বাহরে মওত বা বাহরে লুত সেই ধ্বংসপ্রাপ্ত অঞ্চল। ঐ ডেড সির পানি এতই বিষাক্ত যে সেখানে কোন মাছ বা প্রাণীর অস্তিত্ব নেই। কুরআন মজীদে সমকামিতা যে বড় পাপের কাজ এবং অত্যন্ত জঘন্য কাজ সে সম্পর্কে বিস্তারিত বিবরণ রয়েছে। ইরশাদ হয়েছে : স্মরণ করো লুতের কথা, সে তাঁর কওমকে বলেছিল : তোমরা তো এমন অশ্লীল কাজ করছো যা তোমাদের পূর্বে বিশ্বজগতে আর কেউ করেনি। তোমরাইতো পুরুষে উপগত হচ্ছো, তোমরাই তো রাহাজানি করে থাকো এবং তোমরাই তো নিজেদের মজলিসে প্রকাশ্যে ঘৃণ্যকর্ম করে থাকো। উত্তরে তাঁর (লুতের) কওম বলল : আমাদের ওপর আল্লাহ্র শাস্তি এনে দেখাও তো, যদি তুমি সত্যবাদী হও (সূরা আনকাবুত : আয়াত ২৮-২৯)। এ সম্পর্কে আরও ইরশাদ হয়েছে : অতঃপর যখন আমার (আল্লাহর) আদেশ এলো তখন আমি (আল্লাহ) জনপদটিকে উল্টিয়ে দিলাম এবং ওদের (সদোমবাসীর) ওপর ক্রমাগত বর্ষণ করলাম প্রস্তর কঙ্কর (সূরা হুদ: আয়াত ৮২-৮৩)। সমকামীদের জন্য এবং মদ্যপায়ী ও মাদকসেবীদের জন্য অত্যন্ত কঠোর দ-বিধি ইসলামে রয়েছে এবং আখিরাতে মর্মন্তুদ আযাবের ঘোষণাও রয়েছে। ইসলামে পরিচ্ছন্নতা হচ্ছে ইমানের অর্ধেক এবং লজ্জাশীলতা হচ্ছে ইমানের অঙ্গ। ইসলাম অসংযত জীবনাচরণকে সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করেছে। মেয়েদের মাসিককালে কিংবা সন্তান প্রসবজনিত অপবিত্রতা থাকাকালে স্ত্রীগণ হারাম করেছে এবং পেশাব-পায়খানা শেষে কুলুপ এবং পানির ব্যবহার করতে নির্দেশ দিয়েছে। স্ত্রীগমন শেষে উভয়ের গোসল করাকে ফরয করেছে। ইসলাম হচ্ছে আসসিরাতুল মুসতাকিমÑ সহজ-সরল পথ, এটাকে বলা হয় দীনুল হকÑ সত্য দীন। এর যে সমস্ত বিধান রয়েছে তা যথাযথভাবে পালন করতে পারলে আমাদের জীবন সার্থকতার মঞ্জিলে মকসুদে যে পৌঁছবে তা নিশ্চিত করে বলা যায়। ঘাতক ব্যাধি এইডসের হিংস্র ছোবল থেকে রেহাই পাওয়ার একমাত্র উপায় হচ্ছে ইসলামের অনুশাসন মেনে চলা। লেখক : পীর সাহেব, দ্বারিয়াপুর শরীফ, উপদেষ্টা, ইনস্টিটিউট অব হযরত মুহম্মদ (সা.), সাবেক পরিচালক, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, বাংলাদেশ।
×