ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

এনজিও নিয়ন্ত্রণ

প্রকাশিত: ০৬:১৫, ৫ ডিসেম্বর ২০১৪

এনজিও নিয়ন্ত্রণ

বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে সরকারের পাশাপাশি বিভিন্ন বেসরকারী সংস্থা বা এনজিও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। স্বাধীনতার পর যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশে গ্রামীণ উন্নয়নে ব্র্যাকসহ কিছু এনজিওর ভূমিকা প্রশংসনীয়। তবে এখন ছোট, বড় ও মাঝারি আকারের এনজিওর সংখ্যা যেমন বেড়েছে; তেমনই এসব বেসরকারী সংস্থায় এক ধরনের স্বেচ্ছাচারিতা ও নানা অনিয়ম লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এ ধরনের অনিয়ম সরকারের জাতীয় উন্নয়ন কর্মসূচীর সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয় এবং তা জনগণের জন্য যথেষ্ট দুর্ভোগের সৃষ্টি করছে। এটা কোনদিনই প্রত্যাশিত হতে পারে না। এসব কারণেই সরকার এনজিওর ওপর সরকারী নিয়ন্ত্রণ ও খবরদারি বাড়ানোর লক্ষ্যে আইন প্রণয়নের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। উল্লেখ্য, সোমবার মন্ত্রিসভায় আইনটির খসড়া অনুমোদন করা হয়। পর্যবেক্ষকরা এটাকে একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ বলে অভিহিত করেছেন। কারণ একটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশে এনজিওরা সরকারের নাকের ডগায় বসে বেআইনী কিংবা নেতিবাচক তৎপরতায় অংশ নেবে, তা কখনই মেনে নেয়া যায় না। অনেক বেসরকারী সংস্থা প্রতিবছর দাতা দেশ ও দাতা সংস্থার কাছে নানা ধরনের প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য অনুদান পেয়ে থাকে। অনেক ক্ষেত্রেই অনুদানের অর্থ যথাযথভাবে প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজে খরচ করা হয় না। এ ধরনের অনিয়মের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ জরুরী। দেশে ক্ষুদ্র ঋণ প্রকল্পে কর্মরত এমন কিছু এনজিও রয়েছে, যাদের বিরুদ্ধে চড়া সুদে গরিব মানুষকে ঋণ দেয়ার অভিযোগ রয়েছে। অনেকের পক্ষে যথাসময় এসব ঋণ শোধ দেয়া সম্ভব হয় না। ফলে তাদের নানাভাবে নির্যাতনের শিকার হতে হয়। ক্ষুদ্র ঋণ নিয়ে তাদের উপকারের বদলে অপকারই হয় বেশি। এসব খবর বহুবার পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। কিছু এনজিওর নির্যাতনমূলক তৎপরতা থেকে নিরীহ জনগণকে রক্ষার জন্য সরকারকে নজরদারি আরও জোরদার করতে হবে। ইতোপূর্বে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার এ ব্যাপারে কোন পদক্ষেপ নেয়নি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকার কিছু কিছু এনজিওর ওপর নজরদারি জোরদারের পদক্ষেপ নিয়েছে। এক্ষেত্রে জরুরী পদক্ষেপ হিসেবে আইনের খসড়া অনুমোদন হওয়ায় সংশ্লিষ্ট সবাই আনন্দিত। জাতীয় সংসদের আগামী অধিবেশনে ‘বৈদেশিক অনুদান রেগুলেশন আইন, ২০১৪’ শীর্ষক খসড়া আইনটি পাস হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আইনটি পাস হলে বিদেশী অনুদানে পরিচালিত এনজিওগুলোর স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা অধিকতর নিশ্চিত হবে।
×