ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সমুদ্রসীমা বেড়েছে, নৌ বাহিনীর সামর্থ্য বৃদ্ধিতে গুরুত্বারোপ

প্রকাশিত: ০৫:১২, ৪ ডিসেম্বর ২০১৪

সমুদ্রসীমা বেড়েছে, নৌ বাহিনীর সামর্থ্য বৃদ্ধিতে গুরুত্বারোপ

ফিরোজ মান্না, চট্টগ্রামের বানৌজা ঈসা খাঁ ঘাঁটি থেকে ॥ সমুদ্রসীমা বেড়ে যাওয়ার পর দেশের অর্থনীতির চিত্রই পাল্টে যাচ্ছে। তবে কাক্সিক্ষত লক্ষ্যে যেতে প্রয়োজন অর্জিত সীমায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা। দেশের সমুদ্রসীমার ৪৫ হাজার কিলোমিটার এলাকা অব্যবহৃত থেকে যাচ্ছে। এই বিশাল এলাকা ব্যবহার করতে হলে নৌবাহিনীর শক্তি ক্ষমতা বাড়াতে হবে। ব্লু ইকোনমির সম্ভাবনাকে সর্বোত্তম ব্যবহার করতে হলে নৌ বাহিনী কর্মপরিধি আরও বাড়াতে হবে। জনবল ও বাজেট সুবিধা বাড়াতে হবে। প্রায়ই পার্শ্ববর্তী অনেক দেশের মাছ ধরা ট্রলার ও নৌকা বাংলাদেশের সমুদ্রসীমায় ঢুকে। এটা যে কোন মূল্যে বন্ধ করতে হবে। বুধবার চট্টগ্রামের নৌঘাঁটি বানৌজা ইসা খানের কমান্ড মেসে ‘সমুদ্র জয়ের নিরাপত্তা ও জাতীয় অর্থনীতিতে সমুদ্র সম্পদের গুরুত্ব’ শীর্ষক দুই দিনব্যাপী সেমিনারের প্রথম দিকে বক্তারা এসব অভিমত ব্যক্ত করেন। সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সহকারী নৌপ্রধান (অপারেশন্স) রিয়ার এডমিরাল এএমএম আওরঙ্গজেব চৌধুরী। এতে সূচনা বক্তব্য রাখেন কমোডর কমান্ডিং বিএনএন ফ্লোটিলা খালেদ ইকবাল। সেমিনারে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মেরিন ফিশারিজ বিভাগের পরিচালক নাসির উদ্দিন মোঃ হুমায়ুন, ক্যাপ্টেন এএসএম আফজালুল, বাংলাদেশ কোস্টগার্ডেও উপ-মহাপরিচালক কমোডর ইয়াহিয়া সাঈদ, ক্যাপ্টেন মীর ইমদাদুল হক ও ড. এম শাহাদাত হোসেন। আজ বৃহস্পতিবার সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন নৌবাহিনী প্রধান ভাইস এডমিরাল এম ফরিদ ব্লু ইকোনমির নতুন সম্ভাবনাকে সুচারুভাবে ব্যবহার করতে হলে সমুদ্র এলাকার নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি সমুদ্র সম্পদের সর্বোত্তম ব্যবহার করতে হবে। সমুদ্র সম্পদ সঠিকভাবে কাজে লাগানো গেলে দেশের অর্থনীতিতে বড় ধরনের ইতিবাচক পরিবর্তন আসতে বাধ্য। বাংলাদেশের সমুদ্র এলাকা ঘিরে বিশেষ অর্থনৈতিক জোন তৈরির করার এখন উপযুক্ত সময়। সমুদ্র জয়ের মধ্য দিয়ে দেশের ইকো-ট্যুরিজমে আসবে বিপ্লব। সেমিনারে সূচনা বক্তব্যে কমোডর খালেদ ইকবাল বলেন, সমুদ্র জয় আমাদের আত্মবিশ্বাসী করে তুলছে। বাংলাদেশকে দশটি চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হবে। ব্লু ইকোনমির সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করতে এখন এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় দ্রুত উদ্যোগ নেয়া জরুরী। এই দশ চ্যালেঞ্জ হলোÑ বঙ্গোপসাগর ঘিরে মানব পাচার রোধ, আন্তর্জাতিক মাদক ব্যবসার রুট বন্ধ করা, সমুদ্র-সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলা, অস্ত্র ব্যবসায়ীর পথ বন্ধ, অবৈধভাবে মাছ ধরা বন্ধ, সমুদ্রকেন্দ্রিক প্রাকৃতিক দুর্যোগ, সমুদ্রে দুর্ঘটনা, দুর্যোগ রোধ, সমুদ্র দূষণ রোধ, জলদুস্যতা রোধ ইত্যাদি। সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সহকারী নৌবাহিনী প্রধান (অপারেশন্স) আওরঙ্গজেব চৌধুরী বলেন, সমুদ্র জয় আমাদের জাতীয় স্বার্থেও সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। মেরিটাইম পলিসি এখন অত্যন্ত জরুরী। সমুদ্র ঘিরে নিরাপত্তায় কৌশলগত পথনক্সা সময়ের দাবি। বঙ্গোপসাগর বাংলাদেশের একমাত্র লাইফ-লাইন। এছাড়া বাংলাদেশের প্রধান গেটওয়ে। সমুদ্র বিজয় ঘিরে এখন জাতীয় অর্থনীতিক স্বার্থ, জাতীয় নিরাপত্তা, কূটনীতি, আন্তর্জাতিক যোগাযোগ ও নিজস্ব সম্পদের দিকে মনোযোগ দিতে হবে। এছাড়া সমুদ্র ঘিরে আমাদের ভবিষ্যতের জ্বালানি নিরাপত্তার বিষয় জড়িত। এছাড়া রয়েছে অন্যান্য খনিজ সম্পদ। সমুদ্র ঘিরে নিরাপত্তাহীনতা দূর করার বিষয়টি কোন একক সংগঠন ও দেশের কাজ নয়। এ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে উপ-আঞ্চলিক ও আঞ্চলিক সহযোগিতা জরুরী। সেমিনারে অন্যরা বলেন, ব্লু ইকোনমির সম্ভাবনাকে সর্বোত্তম ব্যবহার করতে হলে নৌবাহিনী কর্মপরিধি আরও বাড়াতে হবে। জনবল ও বাজেট সুবিধা বাড়াতে হবে। প্রায়ই পার্শ্ববর্তী অনেক দেশের মাছ ধরা ট্রলার ও নৌকা বাংলাদেশের সমুদ্রসীমায় ঢোকে। এটা যে কোন মূল্যে বন্ধ করতে হবে। গোয়েন্্ একই সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অন্যদের এগিয়ে আসতে হবে।
×