ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

জনশক্তি রফতানিসহ মালয়েশিয়ার সঙ্গে চার চুক্তি সই

প্রকাশিত: ০৫:০২, ৪ ডিসেম্বর ২০১৪

জনশক্তি রফতানিসহ মালয়েশিয়ার সঙ্গে চার চুক্তি সই

বিডিনিউজ ॥ জনশক্তি রফতানি, ভিসা প্রক্রিয়া সহজ করা, পর্যটন খাতে সহযোগিতা ও সাংস্কৃতিক বিনিময়ের মাধ্যমে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরও এগিয়ে নিতে মালয়েশিয়ার সঙ্গে চারটি চুক্তি করেছে বাংলাদেশ। বুধবার পুত্রাজায়ায় মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাক ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে সংশ্লিষ্ট দফতরের মন্ত্রীরা এসব চুক্তিতে সই করেন। স্বাক্ষরিত চুক্তির মধ্যে একটি হচ্ছে, দুই দেশের মধ্যকার ‘ভিসা প্রক্রিয়ার অসম্পূর্ণ শর্তসমূহ দূরীকরণ’ চুক্তি। এছাড়া জনশক্তি রফতানির বিষয়ে ২০১২ সালে দুই দেশের মধ্যে সই হওয়া সমঝোতাস্মারক সংশোধনে একটি প্রটোকল স্বাক্ষরিত হয়েছে। ভিসা সংক্রান্ত চুক্তির ফলে এখন থেকে দুই দেশের অফিসিয়াল ও কূটনৈতিক পাসপোর্টধারীরা বিমানবন্দরে নেমে ‘অন এ্যারাইভাল ভিসা’ পাবেন বলে পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক। আর জনশক্তি রফতানির প্রটোকলের ফলে মালয়েশিয়ার সারাওয়াক প্রদেশে ১২ হাজার বাংলাদেশীর কাজের সুযোগ তৈরি হবে, যা পর্যায়ক্রমে বেড়ে ৬০ হাজারে উন্নীত হবে বলে জানান তিনি। বাংলাদেশের জনশক্তি রফতানির বড় বাজার মালয়েশিয়া। বর্তমানে প্রায় ছয় লাখ বাংলাদেশী সেখানে বিভিন্ন পেশায়। এছাড়া পর্যটন খাতে সহযোগিতা এবং শিল্প, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য বিষয়ে সহযোগিতায় দুটি সমঝোতাস্মারকে সই করেছে দুই দেশ। পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী, বৈদেশিক কর্মসংস্থান ও প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন, বেসমারিক বিমান পরিবহন, পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন ও সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর অনুষ্ঠানে উপস্থিতি ছিলেন। পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক সাংবাদিকদের বলেন, বৈঠকে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, বাংলাদেশের সঙ্গে আমাদের অত্যন্ত ভাল সম্পর্ক রয়েছে। এটাকে আমরা গ্রেটার হাইটসে নিয়ে যেতে চাই। স্থানীয় সময় বিকেল ৩টায় শেখ হাসিনা পুত্রাজায়ার পারদানা স্কয়ারে পৌঁছলে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাক তাঁকে অভ্যর্থনা জানান। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে সেখানে লালগালিচা সংবর্ধনা দেয়া হয়, একটি চৌকস দল তাঁকে গার্ড অব অনার দেয়। প্রাথমিক আনুষ্ঠানিকতা শেষে দুই প্রধানমন্ত্রী রূদ্ধদ্বার বৈঠক করেন। পরে পারদানা মিটিং রুমে শুরু হয় দ্বিপক্ষীয় বৈঠক। সেখানেই একটি চুক্তি, একটি প্রটোকল ও সমঝোতাস্মারকে সই করেন দুই দেশের প্রতিনিধিরা। দক্ষিণ এশিয়ায় ভারত ও পাকিস্তানের পর মালয়েশিয়ার সবচেয়ে বড় বাণিজ্য সহযোগী দেশ বাংলাদেশ। তবে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যে মালয়েশিয়া এগিয়ে অনেকদূর। বাংলাদেশ প্রতিবছর মালয়েশিয়া থেকে প্রায় ২০০ কোটি ডলারের পণ্য কেনে। অন্যদিকে বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়ায় যায় সাড়ে ১৩ কোটি ডলারের পণ্য। বাংলাদেশের তৈরি পোশাক, বিশেষ করে নিটওয়্যার পণ্য রফতানি হয় প্রশান্ত মহাসাগরীয় এই দেশটিতে। বিপরীতে আমদানি হয় জ্বালানি ও ভোজ্য তেল। বাংলাদেশে শতাধিক মালয়েশীয় কোম্পানির বিনিয়োগও রয়েছে। তিনদিনের সফরে মঙ্গলবার মালয়েশিয়ায় যাওয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বৃহস্পতিবার দেশে ফেরার কথা রয়েছে।
×