ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে আনিসুজ্জামান

বাংলা একাডেমির কাছে মানুষের প্রত্যাশা অনেক বেশি

প্রকাশিত: ০৪:২৯, ৪ ডিসেম্বর ২০১৪

বাংলা একাডেমির কাছে মানুষের প্রত্যাশা অনেক বেশি

বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার ॥ বাংলা একাডেমির সভাপতি এবং এমেরিটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বলেছেন, এই একাডেমি যারা যে লক্ষ্য নিয়ে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, বর্তমানে কিছুটা পরিমাণে হলেও আমরা অন্যদিকে অগ্রসর হচ্ছি। এই একাডেমি যা করছে, যে ধরনের গবেষণা, প্রকাশনা, লোকসাহিত্য সংস্কৃতির সংরক্ষণ ও প্রচার কাজ করছে, এতে আমাদের সন্তুষ্ট হওয়ার কারণ আছে। কিন্তু জনমানুষের প্রত্যাশা অনেক বেশি। তাঁরা আশা করেন যে দেশের সর্বস্তরে বাংলাভাষার প্রচলনে এই একাডেমি আরও অনেক বেশি কাজ করবে। এটি তাদের খুবই ন্যায্য প্রত্যাশা। এই একাডেমি আমাদের সেই প্রত্যাশা মেটাতে পেরেছেÑ এ কথা বলা যাবে না। কাজের সীমাবদ্ধতা, মানব সম্পদের সীমাবদ্ধতা আছে, এ সত্ত্বেও আমরা যা করছি তাতে আমরা গৌরববোধ করি এটি বলা অন্যায় হবে না। বুধবার বিকেলে বাংলা একাডেমির ৫৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে একাডেমি প্রাঙ্গণে আয়োজিত অনুষ্ঠানের সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে অধ্যাপক যতীন সরকারের লেখা ‘বাংলাদেশের সাহিত্যের কাছে প্রত্যাশা নিকট অতীতের আলোয়’ শীর্ষক বক্তৃতা প্রবন্ধ পাঠ করে শোনানো হয়। এটি পাঠ করেন একাডেমির সহপরিচালক সায়েরা হাবীব। অনুষ্ঠানে একাডেমির সংস্কৃতি বিভাগের উপপরিচালক নুরুন্নাহার মুক্তার উপস্থাপনায় একাডেমির সচিব মোঃ আলতাফ হোসেন, বিচারপতি কাজী ইবাদুল হক, ভাষা সৈনিক রওশন আরা বাচ্চু, লেখক দ্বিজেন শর্মা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর বক্তৃতায় বলা হয়, লোকসাহিত্য সংস্কৃতির প্রচুর উপকরণ একাডেমি সংগ্রহ করেছে, সেগুলোর প্রচার-প্রসারেরও ব্যবস্থা করেছে। বিভিন্ন সময়ে বিশ্ববিখ্যাত ফোকলোর বিশেষজ্ঞদের আমন্ত্রণ করে এনে যেসব কর্মশালার আয়োজন একাডেমি করেছে, সেসব কর্মশালায় অংশ নিয়ে অনেকেই ফোকলোর চর্চার বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতির সঙ্গে পরিচিত হতে পেরেছে। এর মাধ্যমে লোকসাহিত্য-সংস্কৃতির ঐতিহ্যকে একালের সাহিত্য-সংস্কৃতির ধারা প্রবাহের সঙ্গে যুক্ত করে দেয়ার সুযোগও অবারিত হয়েছে। যতীন সরকারের এই বক্তৃতা প্রসঙ্গে অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বলেন, বাঙালী সংস্কৃতি বরাবর দুটো স্তরে প্রবাহিত হচ্ছে। এই সমাজে বিভক্তি ছিল। কিন্তু সমাজের উঁচু-নিচু ভেদে সাহিত্য-সংস্কৃতির চর্চা সবসময়ই ছিল। তবে এটা অল্প কিছু মানুষের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। অবস্থার পেছনে ফিরে না গেলে আমরা আগের জায়গায় যেতে পারব লোকসংস্কৃতির চর্চা খুবই বাঞ্ছনীয়। এটি সাহিত্যের অন্য ধারায় স্থান নিতে পারবে না। সাহিত্যের অন্য ধারাকে তুলে নিতেও পারবে না। এই দুইয়ের যোগসাধন খুবই কঠিন ব্যাপার। সমাজের ভিত্তিতে উঁচু-নিচুর বৈষম্য দূর না হলে এটি বাস্তবায়িত হবে না।
×