ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

যুক্তরাষ্ট্রের কারখানা পরিদর্শনের জন্য চিঠি পাঠাতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত: ০৭:৫৪, ৩ ডিসেম্বর ২০১৪

যুক্তরাষ্ট্রের কারখানা পরিদর্শনের জন্য চিঠি পাঠাতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কারখানা পরিদর্শনের জন্য দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু। মঙ্গলবার দুপুরে বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফেকচার্স এ্যান্ড এক্সপোটার্স এ্যাসোসিয়েশন (বিজিএমইএ) ভবনের কনফারেন্স রুমে ‘চেঞ্জিং জেন্ডার নর্মস অব গার্মেন্টস এমপ্লয়িজ’ শীর্ষক এক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা জানান তিনি। জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিলের (ইউএনএফপিএ) সহায়তায় শ্রম মন্ত্রণালয় ও বিজিএমইএর যৌথ উদ্যোগে এই কর্মশালার আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমেরিকা আমাদের পোশাক শিল্প নিয়ে এত কথা বলছে কিন্তু তাদের কারখানাগুলোর অবস্থা কী? তাদের বেশিরভাগ কারখানাতেই কোন ট্রেড ইউনিয়ন নেই। অথচ আমাদের এখানকার ট্রেড ইউনিয়ন নিয়ে অনবরত কথা বলে যাচ্ছে। আমি আমেরিকাকে বলেছিলাম- আমাদের একটি দল; তোমাদের কারখানা দেখতে যাবে। কিন্তু তারা কোন সাড়া দেয়নি। তাই প্রধানমন্ত্রী বলেছেন- আমেরিকাকে বিষয়টি লিখিতভাবে জানাতে। তিনি বলেন, তৈরি পোশাক রফতানিতে বাংলাদেশ যেহেতু বিশ্বে দ্বিতীয় অবস্থানে তাই এ শিল্পকে নিয়ে দেশীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, এ বিষয়ে সবার সজাগ থাকা উচিত। এই কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনে ড. জুলিয়া আহমেদ বলেন, এক সমীক্ষায় দেখা গেছে- বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্প কারখানায় কর্মরত নারী শ্রমিকদের শতকরা ৮৪ দশমিক ৭ ভাগ বিভিন্নভাবে হয়রানির শিকার হচ্ছে। এর জবাবে শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘কারখানায় নারী শ্রমিক হয়রানি কিছুটা থাকলেও তা ৮৪ শতাংশ হতে পারে না’। তিনি বলেন, ‘যে শিল্পে ৮৫ শতাংশ নারী সেখানে কী করে ১৫ শতাংশ পুরুষ হয়রানি করবে? যেখানে এত নারী শ্রমিক কাজ করে সেখানে পুরুষ শ্রমিকের দ্বারা নির্যাতন অনেক বেশি হবে এটা মনে হয় না। ড. জুলিয়া আহমেদ আরও বলেন, শ্রমিকদের স্বাস্থ্যসহ অন্য যে কোন বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়া হলেও কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানির বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়া হচ্ছে। শ্রম সচিব মিখাইল শিপার এই মন্তব্যে দ্বিমত প্রকাশ করে বলেন, আমার মনে হয় না বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের নারী শ্রমিকদের এত খারাপ অবস্থা। এখানে কোন একটা তথ্যের গরমিল আছে। জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিল ইউএনএফপিএর বাংলাদেশ প্রতিনিধি আর্জেন্টিনা মাতাভেল পিকসিন বলেন, পোশাক কারখানাগুলো নারী শ্রমিকরা কর্মপরিবেশ ঝুঁঁকি থেকে শুরু করে কারখানার গেইটম্যানের কাছে ভয়ে থাকে। বিজিএমইএ সভাপতি আতিকুল ইসলাম বলেন, শুধু নারীই নয় পোশাক শিল্পে শ্রমিকদের কর্মপরিবেশ আগের তুলনায় অনেক ভাল হয়েছে। এত বড় শিল্পে লিঙ্গ অসমতা থাকতে পারে। তবে, ১০ বছর আগে যে নারী শ্রমিকদের কর্মপরিবেশ ছিল তা এখন আর নেই। পোশাক শিল্পের মাধ্যমে নারীর ক্ষমতায়ন সম্ভব হচ্ছে। উল্লেখ্য, তৈরি পোশাক শিল্পে কর্মরত নারী শ্রমিকদের নিরাপদ কর্মপরিবেশ সৃষ্টির জন্য ঢাকা, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ ও চট্টগ্রামে মোট ৪০টি কারখানায় এই পাইলট প্রকল্প নেয়া হয়েছে। জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিলের (ইউএনএফপিএ) সহায়তায় শ্রম মন্ত্রণালয় ও বিজিএমইএর যৌথ উদ্যোগে এই কর্মশালার আয়োজন করা হয়। তৈরি পোশাক প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ এবং জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিলের (ইউএনএফপিএ) যৌথ উদ্যোগে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে। বিজিএমইএর সভাপতি আতিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিজিএমইএ সহসভাপতি শহীদুল্লাহ আজীম, এস এম মান্নান কচি ও রিয়াজ বিন মাহমুদ প্রমুখ।
×